রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫
২৫ শ্রাবণ ১৪৩২ | ১৬ সফর ১৪৪৭
  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার
শেয়ার বিজ
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
➔ ই-পেপার
No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ
No Result
View All Result
শেয়ার বিজ
No Result
View All Result

অনেক নয়, প্রয়োজন বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়

Elias Khan Elias Khan
শনিবার, ৯ আগস্ট ২০২৫.১২:০৪ পূর্বাহ্ণ
বিভাগ - পত্রিকা, সম্পাদকীয় ➔ প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
A A
অনেক নয়, প্রয়োজন বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়
12
VIEWS
Share on FacebookShare on TwitterShare on Linkedin

জুনায়েদ মাসুদ : অক্সফোর্ড ইংরেজিভাষী বিশ্বের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত। যদিও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার নির্দিষ্ট সাল ইতিহাসে স্পষ্ট নয়, তবে ধারণা করা হয় একাদশ শতাব্দীর গোড়ার দিকেই এখানে উচ্চশিক্ষার সূচনা ঘটে। সেই সময় ইংল্যান্ডে একমাত্র উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে অক্সফোর্ডের পণ্ডিতরা প্রায়ই স্থানীয়দের সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়াতেন। শ্রেণিবৈষম্য ও চার্চের কঠোর প্রভাবের ফলে ত্রয়োদশ শতকের শুরুতে অক্সফোর্ডে এক ভয়ংকর দাঙ্গার সূচনা হয়। এই সহিংস পরিস্থিতিতে অনেক পণ্ডিত ও শিক্ষার্থী ভিন্নমত পোষণ করে অক্সফোর্ড ছেড়ে পালিয়ে যান কেমব্রিজ শহরে এবং সেখানে গড়ে তোলেন এক নতুন শিক্ষাঙ্গন। এভাবেই যাত্রা শুরু হয় কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ব ইতিহাসের অন্যতম শ্রেষ্ঠ এক বিদ্যাপীঠ, যা প্রতিষ্ঠিত হয় অক্সফোর্ড থেকে বিতাড়িত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে। ১২৩১ সালে ইংল্যান্ডের রাজা তৃতীয় হেনরি অক্সফোর্ডের মতো কেমব্রিজকেও রয়্যাল চার্টার প্রদান করেন এবং করমুক্ত ঘোষণা দেন। সেই থেকে ইংল্যান্ডের এই দুটি শহর, অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ, বিশ্বের মানচিত্রে শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তির মহিমায় অনন্য আসনে অধিষ্ঠিত হয়। কেবল জ্ঞানের প্রচার নয়, জ্ঞানের সৃষ্টিতেও এই দুটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে ওঠে অনবদ্য দৃষ্টান্ত।

শত শত বছর ধরে নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য অক্ষুণ্ন রেখে এমন কঠোরভাবে শিক্ষা এবং গবেষণার মান নিয়ন্ত্রণ করতে করতে এগিয়ে চলা বিরল দুটি বিশ্ববিদ্যালয় এই ‘অক্সব্রিজ’। যেকোনো র‍্যাংকিংয়ে প্রায় প্রতিবছরই বিশ্বসেরা ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যেই অবস্থান করে অক্সফোর্ড ও কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়। এর পেছনে নানা ধরনের কারণ রয়েছে। তবে একটি কারণ অবশ্যই অর্থনৈতিক।

২০২৩-২৪ অর্থবছরে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৮ দশমিক ৭ বিলিয়ন পাউন্ড। এর মধ্যে কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এন্ডাউমেন্ট ছিল প্রায় ১ দশমিক ৯ বিলিয়ন পাউন্ড এবং কলেজগুলোর সম্মিলিত এন্ডাউমেন্ট ছিল প্রায় ৬ দশমিক ৮ বিলিয়ন পাউন্ড। অন্যদিকে কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ও কলেজ পর্যায়ের সম্মিলিত মোট সম্পদ ছিল প্রায় ৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন পাউন্ড।

তুলনামূলকভাবে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেট ছিল ৯১৩ কোটি টাকা এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বাজেট ছিল প্রায় ৩০০ কোটি টাকা। এই পার্থক্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায়, বৈশ্বিক শীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তুলনায় বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আর্থিক সক্ষমতা অনেক কম।

আকর্ষণীয় একটি তথ্য হলো, এসব বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আয়ের বড় একটি অংশ আসে সরকারি অনুদানের বাইরে—যেমন গবেষণা অনুদান, শিক্ষার্থীদের বেতন, পাবলিশিং সার্ভিস, অ্যালামনাইদের অনুদান এবং বিভিন্ন চুক্তিভিত্তিক আয়ের উৎস থেকে। উদাহরণস্বরূপ, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২৩-২৪ অর্থবছরের আয়ের প্রায় ২৩ শতাংশ এসেছে গবেষণা অনুদান ও কন্ট্রাক্ট থেকে এবং ১৬ শতাংশ এসেছে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে।

এছাড়া এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অ্যালামনাইদের কাছ থেকে বড় অঙ্কের অনুদান পেয়ে থাকে। ২০১৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিবিসি নিউজ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা যায়, কেমব্রিজের সেন্ট ক্যাথরিনস কলেজের অ্যালামনাস ডেভিড হার্ডিং ও তার স্ত্রী ক্লডিয়া হার্ডিং তাদের প্রতিষ্ঠিত ফাউন্ডেশন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়টিকে ১০০ মিলিয়ন পাউন্ড অনুদান দেন, যা কেমব্রিজ ইতিহাসে একক ব্যক্তি বা ফাউন্ডেশনের দেয়া সর্বোচ্চ অনুদান।

শুধু অর্থেই নয়, কাঠামো, মান, পরিকল্পনা ও গবেষণা সংস্কৃতির দিক থেকেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো অনেক পিছিয়ে। আন্তর্জাতিক র্যাংকিং তো দূরের কথা, দক্ষিণ এশিয়ার সেরা ১০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায়ও বাংলাদেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই। অথচ গত দুই যুগে দেশে অনেক সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। পরিমাণে বৃদ্ধি হলেও গুণগত মানে নেই দৃশ্যমান উন্নয়ন।

এই বাস্তবতায় আমাদের আরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন নেই। প্রয়োজন এমন কিছু বিশ্ববিদ্যালয়, যেগুলো সত্যিকার অর্থেই আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে তৈরি; বিশ্বমানের শিক্ষক, গবেষণা, অবকাঠামো ও প্রশাসন দ্বারা পরিচালিত।

একটি ভিন্ন মডেল: আট বিভাগে আট বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়

দেশের আটটি বিভাগীয় শহরে একটি করে নতুন ধরনের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হলে কেমন হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে ছয়টি ফ্যাকাল্টি—সায়েন্স, আর্টস, ইঞ্জিনিয়ারিং, কমার্স, মেডিসিন ও কৃষি। উপাচার্য হবেন বিশ্বখ্যাত কোনো স্কলার। যেমন—প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জাহিদ হাসান কিংবা ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুয়েটস ডার্থমাউথের প্রভোস্ট ড. আতাউল করিমের মতো বাংলাদেশি গবেষকেরা। এমন অনেক বাংলাদেশি পণ্ডিত পৃথিবীর নানা প্রান্তে ছড়িয়ে রয়েছেন, যাদের মধ্য থেকে প্রতিশ্রুতিশীল যোগ্য ব্যক্তিরাই হবেন এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। পাশাপাশি ভিন্ন দেশের যোগ্যতাসম্পন্ন স্কলারদেরও উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

শিক্ষক নিয়োগে থাকবে উচ্চমান: পিএইচডি বাধ্যতামূলক, সঙ্গে বিদেশে অন্তত দুই বছর পড়ানো বা গবেষণার অভিজ্ঞতা। শিক্ষক হতে পারবেন বিশ্বের যেকোনো দেশের নাগরিক। তবে বর্তমানে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত কেউ আবেদন করতে পারবেন না, যাতে পুরোনো প্রথাগুলো নতুন ব্যবস্থায় প্রভাব না ফেলে।

প্রত্যেক বিভাগে কমপক্ষে ২০ শিক্ষক দিয়ে কার্যক্রম শুরু হবে। তাদের এক বছর সময় দেয়া হবে কোর্স কারিকুলাম ও ল্যাবরেটরি প্রস্তুতের জন্য। প্রতিটি বিভাগে একটি ক্লাসে সর্বোচ্চ ৪০ ছাত্র ভর্তি হবে।

শিক্ষকের দায়িত্ব ও গবেষণার গুরুত্ব: বিশ্বমানের একাডেমিক কাঠামো প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতিটি শিক্ষককে তার সময়ের ৪০ শতাংশ শিক্ষাদানে এবং ৬০ শতাংশ গবেষণায় ব্যয় করতে হবে। এর মাধ্যমে নিশ্চিত হবে একজন শিক্ষকের সমান্তরাল জ্ঞান সম্প্রসারণ ও উৎপাদন, যা শিক্ষার্থীদের কাছে থাকবে আপডেটেড, গবেষণাভিত্তিক ও প্রাসঙ্গিক। প্রত্যেক শিক্ষকের অধীনে কমপক্ষে দুজন ফুল-ফান্ডেড পিএইচডি শিক্ষার্থী এবং একজন পোস্ট-ডক্টরাল ফেলো কাজ করবেন। তারা নির্দিষ্ট গবেষণা প্রকল্পে যুক্ত থেকে জ্ঞান উৎপাদনের ধারাবাহিকতা বজায় রাখবেন এবং গবেষণার গভীরতা ও পরিসর বাড়াবেন।

গবেষণার পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য প্রতিষ্ঠিত হবে একটি কেন্দ্রীয় ‘অ্যাডভান্সড রিসার্চ ল্যাবরেটরি’, যা হবে সর্বাধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন, আন্তঃবিভাগীয় এবং আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন। এখানে শিক্ষক, গবেষক ও ছাত্ররা কেবল নতুন জ্ঞান সৃষ্টিতেই নয়, বরং তা সমাজ, রাষ্ট্র এবং অর্থনীতির প্রয়োজনে কাজে লাগানোর মতো বাস্তবমুখী গবেষণায় নিয়োজিত হবেন। এই গবেষণাগার হবে পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ, চিন্তা ও উদ্ভাবনের মূল কেন্দ্র।

শ্রেণিকক্ষে শিক্ষাদানের ক্ষেত্রেও থাকবে শৃঙ্খলাপূর্ণ ও মানবিক এক কাঠামো। প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত চলবে ক্লাস, যা একদিকে যেমন সময়ের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করবে, অন্যদিকে বিকালের সময়টিকে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকের আত্মোন্নয়ন, গবেষণা ও বিশ্রামের জন্য উন্মুক্ত রাখবে। প্রতিটি ক্লাসে থাকবেন একজন টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট ও একজন অ্যাকাডেমিক সহযোগী যারা যথাক্রমে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের নির্বাচিত শিক্ষার্থী। এতে যেমন শিক্ষার্থীদের নেতৃত্ব ও শিক্ষাদানে অংশগ্রহণ নিশ্চিত হবে, তেমনি শেখানো ও শেখার একটি সমবায়ী পরিবেশ গড়ে উঠবে।

প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীদের জন্য বাধ্যতামূলক আবাসন ব্যবস্থা থাকবে, যাতে তারা সহজে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে পারে এবং পড়াশোনায় মনোযোগী হতে পারে। দ্বিতীয় বর্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নিজ উদ্যোগে আবাসনের ব্যবস্থা করতে হবে, যা তাদের আত্মনির্ভরশীলতা ও বাস্তব জীবনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে।

ভর্তি প্রক্রিয়ায় যুগান্তকারী পরিবর্তন

ভর্তি প্রক্রিয়া হবে সম্পূর্ণ নতুন ধাঁচের এমন একটি পদ্ধতি, যা শুধু পরীক্ষায় ভালো করাকেই নয়, বরং একটি শিক্ষার্থীর সামগ্রিক যোগ্যতা, সম্ভাবনা ও চিন্তাশক্তিকে বিবেচনায় নেবে। কোনো ধরনের কোচিংনির্ভর ও মুখস্থনির্ভর ভর্তি পরীক্ষা থাকবে না। এর পরিবর্তে, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত পদ্ধতি যেমন SAT, GRE বা GMAT-এর আদলে একটি স্ট্যান্ডার্ডাইজড স্কোরিং ব্যবস্থা চালু করা হবে, যা পরিমাপ করবে শিক্ষার্থীর বিশ্লেষণমূলক দক্ষতা, ভাষা ও গণনার সক্ষমতা এবং যৌক্তিক চিন্তার ক্ষমতা। এটি হবে অনলাইনভিত্তিক, বহুভাষিক ও সময়োপযোগী একটি মডেল, যেখানে প্রশ্নপত্র হবে গোপনীয়তা ও মানের দিক দিয়ে আন্তর্জাতিকভাবে নিরাপদ।

ভর্তির ক্ষেত্রে কেবল এই মানদণ্ড-ভিত্তিক স্কোরই যথেষ্ট নয়। শিক্ষার্থীর স্কুলজীবনের একাডেমিক রেকর্ড, সহশিক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণ, নেতৃত্বগুণ, নৈতিকতা এবং শিক্ষকদের সুপারিশপত্রও মূল্যায়নের অন্তর্ভুক্ত থাকবে। এককথায় প্রতিটি শিক্ষার্থীকে একটি ‘হোলিস্টিক’ পদ্ধতিতে বিচার করা হবে। এতে গ্রামীণ, প্রান্তিক কিংবা বিকল্প ধারায় বেড়ে ওঠা মেধাবীরাও সুযোগ পাবে, যাদের জীবনবোধ ও সমস্যা সমাধানের দক্ষতা অনন্য হলেও প্রচলিত ভর্তি পরীক্ষায় তা অনুচ্চারিত থাকে।

শিক্ষার্থীরা যুক্তিসংগত হারে টিউশন ফি প্রদান করবে, যা তাদের পরিবারের আর্থিক সক্ষমতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। উচ্চশিক্ষাকে কোনোভাবেই ‘ধনীদের জন্য নির্দিষ্ট এক প্রতিষ্ঠানিক কাঠামো’ হিসেবে দাঁড় করানো হবে না। বরং অর্থনৈতিকভাবে পিছিয়ে থাকা অথচ মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে বিশেষ সুবিধা আবশ্যিকভাবে পূর্ণ বা আংশিক স্কলারশিপ ও শিক্ষাঋণ। এই শিক্ষাঋণ হবে সুদমুক্ত ও বন্ধুসুলভ শর্তে, যা তারা পড়াশোনা শেষ করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিস্তিতে পরিশোধ করতে পারবে, যেন ভবিষ্যতের একজন অর্থনৈতিক অংশগ্রহণকারী হিসেবে তাদের আত্মমর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকে।

বিদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য থাকবে আলাদা আবেদন প্রক্রিয়া এবং ফি স্ট্রাকচার। তাদের জন্য টিউশন ফি হবে দ্বিগুণ বা তারও বেশি, যা বিশ্বমানের উচ্চশিক্ষার বিনিময়ে গ্রহণযোগ্য। বিদেশি শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ শুধু আর্থিকভাবে নয়, বরং সাংস্কৃতিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং বৈশ্বিক সংযোগ তৈরির দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এই বহুজাতিক ও বহু-ভাষাভাষী শিক্ষার্থী সমাজ বিশ্ববিদ্যালয়টিকে একটি ‘গ্লোবাল ক্যাম্পাস’-এ রূপান্তর করবে, যা ভবিষ্যতের বৈশ্বিক নেতৃত্ব তৈরি করতে সহায়ক হবে।

একটি সমন্বিত বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস: বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি ভবন হবে নান্দনিক, পরিবেশবান্ধব, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও আধুনিক সুবিধাসম্পন্ন। স্থাপত্যে থাকবে আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ছোঁয়া এবং টেকসই নির্মাণকৌশলের প্রতিফলন। ক্যাম্পাসজুড়ে থাকবে উন্মুক্ত সবুজ প্রাঙ্গণ, আর প্রতিটি ভবনের মধ্যে থাকবে পর্যাপ্ত আলো-বাতাসের প্রবাহ নিশ্চিত করার ব্যবস্থা।

শিক্ষা ও গবেষণাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হবে এক আধুনিক ও ডিজিটালাইজড সেন্ট্রাল লাইব্রেরি, যেখানে থাকবে দেশ-বিদেশের সমৃদ্ধ গ্রন্থ, রেফারেন্স ম্যাটেরিয়াল, অনলাইন জার্নাল এক্সেস এবং ডিজিটাল লার্নিং সেন্টার। গবেষণাগারগুলো হবে আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন, যেখানে শিক্ষার্থী ও গবেষকেরা সর্বাধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তির সহায়তায় গবেষণার কাজ করতে পারবেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকবে মানসম্মত ও হাইজিনিক ক্যাফেটেরিয়া, যা শুধু খাবার সরবরাহের কেন্দ্র নয়, বরং একধরনের সামাজিক মিথস্ক্রিয়ার জায়গা হিসেবে গড়ে উঠবে। ছাত্রছাত্রীদের সুস্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে থাকবে হেলথ ক্লাব ও জিমনেশিয়াম, যা তাদের শারীরিক সুস্থতা ও মানসিক প্রশান্তি নিশ্চিত করবে। এছাড়া থাকবে আধুনিক সুইমিং পুল, প্রশস্ত খেলার মাঠ ও খোলা প্রাঙ্গণ, যা একটি ভারসাম্যপূর্ণ ছাত্রজীবনের গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ।

বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে থাকবে একটি ফাইভ স্টার মানের গেস্ট হাউস ও কনফারেন্স সেন্টার, যেখানে আন্তর্জাতিক সম্মেলন, ওয়ার্কশপ ও গবেষণা উপস্থাপনাসহ নানা আয়োজনে দেশি-বিদেশি অতিথিদের আতিথেয়তা দেয়া যাবে।

শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও কর্মীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বিকাশ নিশ্চিত করতে থাকবে একটি ‘সেন্ট্রাল স্কয়ার’, যা উৎসব, প্রতিবাদ, সভা-সমাবেশ এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য নির্ধারিত সময় ও নিয়মে ব্যবহারের সুযোগ দেবে। এই স্কয়ার হবে গণতান্ত্রিক চর্চা ও সৃজনশীল অভিব্যক্তির এক প্রতীকী কেন্দ্র, যেখানে মত প্রকাশ, সমালোচনা ও উদযাপনের পরিবেশ সুরক্ষিত থাকবে।

গবেষণাই হবে আয়ের প্রধান উৎস: বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস হলো গবেষণা। উন্নত বিশ্বে গবেষণা কেবল একাডেমিক চর্চার জন্যই নয়, বরং তা অর্থনৈতিক টেকসই উন্নয়নের একটি প্রধান হাতিয়ার। উদাহরণস্বরূপ, কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট আয়ের প্রায় ২৩ শতাংশই আসে গবেষণা অনুদান ও বিভিন্ন চুক্তিভিত্তিক প্রকল্প থেকে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি থেকে আসে প্রায় ১৬ শতাংশ।

এই মডেল আমাদের নতুন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয়ও অনুসরণ করা যেতে পারে। গবেষণাকে মূল চালিকাশক্তি হিসেবে বিবেচনা করে একটি শক্তিশালী রিসার্চ ইনফ্রাস্ট্রাকচার গড়ে তুললে দেশের ভেতরে ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে গবেষণা অনুদান, শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও উন্নয়ন সংস্থার সঙ্গে যৌথ প্রকল্পের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে আয় করা সম্ভব। এতে শুধু বিশ্ববিদ্যালয় নয়, বরং গবেষক, শিক্ষক, ছাত্র ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসন সবাই সরাসরি উপকৃত হবে।

এই গবেষণাধর্মী কাঠামো একদিকে যেমন জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা রাখবে, অন্যদিকে দেশের অর্থনীতির বিভিন্ন খাতে উদ্ভাবনী সমাধান ও নীতিগত সহায়তাও প্রদান করতে পারবে। অর্থাৎ, গবেষণা হবে শুধু উচ্চশিক্ষার অংশ নয়, দেশীয় উন্নয়নের এক বাস্তব হাতিয়ারও।

আমাদের অর্থনৈতিক উন্নয়ন হয়েছে, বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্র, যোগাযোগ এবং পোশাকশিল্পে অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে। আমাদের ক্রিকেট হয়েছে আন্তর্জাতিক মানের। অথচ উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় আমরা উন্নত দেশের চেয়ে এখনও অনেক পিছিয়ে। উচ্চশিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে হলে আপাতদৃষ্টিতে এ রকম অসম্ভব কিছুকে বাস্তব ও সম্ভব করতে হবে। সত্যিকার মানের গর্ব করার মতো বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে শতবর্ষ পরে ডেভিড হার্ডিংয়ের মতো অ্যালামনাইদের অনুদান হয়ে উঠবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়ের অন্যতম বড় উৎস। মনে রাখতে হবে, শুধু শিক্ষা ও গবেষণায় আন্তর্জাতিক মান অর্জন করতে পারলে এই স্রোতেই আরও অনেক কিছু আন্তর্জাতিক মানের হয়ে যাবে। এই তত্ত্ব ইউরোপ-আমেরিকার কথা বাদ দিলাম, এশিয়ার কিছু দেশেই প্রমাণিত। তাই জাতীয় স্বার্থে আমাদের শিক্ষা ও গবেষণার আন্তর্জাতিকীকরণ অপরিহার্য।

 

শিক্ষার্থী, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের

প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন
Previous Post

আসামে বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা আদিবাসীদের অস্ত্রের লাইসেন্স দিচ্ছে ভারত

Next Post

শর্ত ছাড়াই পুতিনের সঙ্গে বসতে চান ট্রাম্প

Related Posts

ইচ্ছাকৃতভাবেই বকেয়া পরিশোধ করছেন না গ্রাহকরা
অর্থ ও বাণিজ্য

ইচ্ছাকৃতভাবেই বকেয়া পরিশোধ করছেন না গ্রাহকরা

গরিবদের বিনা পয়সায়  সেবা দেন ডা. কবীর
পত্রিকা

গরিবদের বিনা পয়সায় সেবা দেন ডা. কবীর

১০ বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকার বেড়েছে  ২৪ শতাংশ
পত্রিকা

১০ বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকার বেড়েছে ২৪ শতাংশ

Next Post
শর্ত ছাড়াই পুতিনের সঙ্গে বসতে চান ট্রাম্প

শর্ত ছাড়াই পুতিনের সঙ্গে বসতে চান ট্রাম্প

Discussion about this post

সর্বশেষ সংবাদ

ইচ্ছাকৃতভাবেই বকেয়া পরিশোধ করছেন না গ্রাহকরা

ইচ্ছাকৃতভাবেই বকেয়া পরিশোধ করছেন না গ্রাহকরা

গরিবদের বিনা পয়সায়  সেবা দেন ডা. কবীর

গরিবদের বিনা পয়সায় সেবা দেন ডা. কবীর

১০ বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকার বেড়েছে  ২৪ শতাংশ

১০ বছরে উচ্চশিক্ষিত বেকার বেড়েছে ২৪ শতাংশ

বন্ড সুবিধায় ৫ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি

বন্ড সুবিধায় ৫ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকি

জালিয়াতির বিষয়ে নিশ্চুপ দুর্যোগ মন্ত্রণালয়

জালিয়াতির বিষয়ে নিশ্চুপ দুর্যোগ মন্ত্রণালয়




 

আর্কাইভ অনুসন্ধান

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 ১২
৩৪৫৬৭৮৯
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  

প্রকাশক ও সম্পাদক ✍ মীর মনিরুজ্জামান

তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৪৮

একটি শেয়ার বিজ প্রাইভেট লি. প্রতিষ্ঠান

(প্রকাশিত কোনও সংবাদ, কলাম, তথ্য, ছবি, কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার দণ্ডনীয় অপরাধ। প্রয়োজন আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে)

সম্পাদকীয় ও বাণিজ্যিক কার্যালয়

বিএসইসি ভবন (১০ তলা) ॥ ১০২ কাজী নজরুল ইসলাম এভিনিউ, কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫, বাংলাদেশ ॥ ☎ 01720123162, 01768438776

  • ♦ বাংলা টেক্সট কনভার্টার

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET

No Result
View All Result
  • ☗
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • সারা বাংলা
  • পত্রিকা
    • প্রথম পাতা
    • শেষ পাতা
    • পুঁজিবাজার
    • সম্পাদকীয়
    • ফিচার
  • রাজনীতি
  • তথ্য-প্রযুক্তি
  • স্পোর্টস
  • বিনোদন
  • শিক্ষা
  • স্বাস্থ্য
  • অর্থ ও বাণিজ্য
    • করপোরেট কর্নার
    • মূল্য সংবেদনশীল তথ্য
  • ফটো গ্যালারি
  • পুরনো নিউজ

Copyright © 2025 Daily Share Biz All right reserved. Developed by WEBSBD.NET