প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

অন্ধত্ব রোধে চাই জনসচেতনতা

বৈশ্বিক উন্নতির ছোঁয়ায় ডিজিটাল পণ্যের ক্রমাগত প্রসারের সঙ্গে নিত্যনতুন সব চাহিদা বাড়ছে মানুষের। এসব চাহিদা পূরণ হওয়ার সঙ্গে তৈরি হচ্ছে নতুন সমস্যা আর রোগ-ব্যাধির। আজকাল বিভিন্ন ডিভাইসের স্ক্রিন এড়ানো কঠিন। দিনের অনেক সময় কম্পিউটার, ল্যাপটপ, টিভি, ফোন প্রভৃতি ইলেকট্রিক পণ্যের দিকে তাকানোর ফলে ক্ষতিকর নানা প্রতিক্রিয়া আমাদের শরীরে পড়ছে। শুধু ডায়াবেটিস, হাঁপানি ও উচ্চ রক্তচাপেই ক্ষান্ত নয় বরং এসব রোগের পাশাপাশি দৃষ্টিশক্তি কমে যাওয়া এখন অন্যতম সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। দিন দিন এ সমস্যা বাড়তে থাকার কারণে এ যেন মানুষের নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে উঠেছে। দৃষ্টিশক্তির এই হ্রাস পাওয়ার সঙ্গে কোনো চিকিৎসা না করার ফলে অনেকেই আবার অন্ধত্বের শিকার হচ্ছেন। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে, গ্লুকোমা রোগ হওয়া মানুষের অন্ধত্বের একটি কারণ ধীরে ধীরে বয়স বাড়ার সঙ্গে চোখের অপটিক স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে চির অন্ধ হয়ে যায় মানুষ। বিশ্বে দ্বিতীয় প্রতিরোধ অন্ধত্বের কারণ এটা। চিকিৎসকরা বলছেন, মানুষের যত বয়স বাড়ে ততই এ রোগ সমস্যা তৈরি করতে পারে এবং চল্লিশোর্ধ বয়স হলে এটি আরও বেশি মাত্রায় প্রস্ফুটিত হতে পারে। এ পর্যন্ত সারাবিশ্বে ৪৫ লাখ মানুষ এ রোগে অন্ধত্বের শিকার হয়েছেন বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। জরিপে দেখা যায়, আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ৮ কোটি দাঁড়িয়েছে। ধারণা করা হয়, ২০৪০ সাল নাগাদ আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ১২ কোটি ছাড়িয়ে যাবে। সর্বশেষ পরিসংখ্যাননুসারে বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার ১.৮ থেকে ২.২ শতাংশ মানুষ এ রোগে আক্রান্ত। এছাড়া চল্লিশোর্ধ্ব বয়স মানুষের মধ্যে ২.৮ শতাংশরই এ রোগ রয়েছে। এখন সবচেয়ে ভয়ের কারণ হলো, বেশিরভাগ মানুষই এ রোগ এবং তার প্রতিকার ও ভয়াবহতা সম্পর্কে জানে না। পরীক্ষা করা ছাড়া এ রোগ ধরা প্রায় মুশকিল। আর একবার চোখে বাসা বেঁধে ফেললে নিরাময়ের কোনো পথ নেই। আজীবন অন্ধ হয়ে থাকতে হয়?। তাই চোখকে সুস্থ রাখতে সতর্কতা জরুরি। বিশেষ করে চল্লিশোর্ধ্ব বয়সী সবারই চোখ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা অত্যন্ত প্রয়োজন। সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে জনসচেতনতা বাড়ানো এবং চক্ষু ক্লিনিকগুলোর উচ্চ ভিজিট কমাতে সরকারে বিশেষ করে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সহযোগিতা কামনা করছি। স্ক্রিনের উজ্জ্বল পর্দায় ডুবে যাওয়া দীর্ঘ সময়কে সংক্ষিপ্ত করতে হবে। আপসা-ঝাপসা অল্প আলোয় দীর্ঘ সময় ধরে কোনো কাজ করা যাবে না। দেশের ও জাতির কল্যাণের স্বার্থে এই গ্লুকোমা রোগসহ চোখের যাবতীয় ব্যাধি দূর করতে পুষ্টি জাতীয় খাদ্য বাড়ানোর পাশাপাশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

মিসবাহুল ইসলাম

শিক্ষার্থী

দারুল হেদায়া ইসলামিক ইনস্টিটিউট বারিধারা, ঢাকা