নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারের আলোচিত আরএন স্পিনিংয়ের মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দেয়া রায়ের সার্টিফায়েড কপি গতকাল কোম্পানির হাতে পৌঁছেছে। এর মধ্যদিয়ে চার বছর ধরে চলমান আইনি জটিলতার অবসান হলো। নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্র রায়ের কপি হাতে পাওয়ার তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মো: আসফাকুল ইসলাম ও মো: খসরুজ্জামান স্বাক্ষরিত রায়ের সার্টিফায়েড কপির পর কোম্পানিটির এজিএমের অনুমতি চাওয়ার ক্ষেত্রে আর কোনো আইনি জটিলতা থাকলো না। বার্ষিক সাধারণ সভা করার (এজিএম) অনুমতির জন্য শীঘ্রই বিএসইসির কাছে আবেদন করবে আরএন স্পিনিং।
এর আগে, সদ্য সমাপ্ত বছরের ২৯ ডিসেম্বর পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) মামলা প্রত্যাহার বিষয়ে আরএন স্পিনিংকে চিঠি দিয়েছে। কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালককে দেয়া বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক (আইন) মো. মাহবুবের রহমান চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে আরএন স্পিনিংয়ের পরিচালকদের জরিমানার অর্থ পরিশোধ ও মামলা প্রত্যাহারে আদেশপত্রের সার্টিফায়েড কপি জমা দিতে বলা হয়।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, রাইট শেয়ার ইস্যু করার ক্ষেত্রে ‘জালিয়াতি’র অভিযোগে ২০১২ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর আরএন স্পিনিংয়ের উদ্যোক্তা-পরিচালকদের শেয়ার বিক্রি, হস্তান্তর, বন্ধক ও উপহার দেয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে বিএসইসি। ওই নিষেধাজ্ঞা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে রিট পিটিশন দাখিল করে কোম্পানির পরিচালকরা। মামলার রায় কোম্পানির পক্ষে এলে বিএসইসি এর বিরুদ্ধে আপিল করে। বিএসইসির আপিলের পরিপ্রেক্ষিতে রায় স্থগিত করা হলে এ স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করে কোম্পানির পরিচালকরা। সর্বশেষ গত বছরের ৮ মে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণসাপেক্ষে ওই মামলার নিষ্পত্তি করেন।
এদিকে ২০১০ সালে তালিকাভুক্ত আরএন স্পিনিং ওই অর্থবছরে বিনিয়োগকারীদের ৩০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ প্রদান করে। এরপরের বছরে যা আরো পাঁচ শতাংশ বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাঁড়ায়। এরপরই রাইট শেয়ার ইস্যু নিয়ে ঝামেলায় জড়িয়ে পড়ে কোম্পানিটি। মামলার কারণে কোম্পানিটির এজিএম স্থগিত হয়ে যায়। মামলার কারণে গত চার বছর বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিতে না পেরে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে কোম্পানিটি। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীররাও চার বছর ধরে ওই মামলা নিষ্পত্তির অপেক্ষায় ছিলেন। মামলা প্রত্যাহার ও সার্টিফায়েড কপি হাতে পাওয়ার মধ্যদিয়ে লভ্যাংশ পেতে বিনিয়োগকারীদের অপেক্ষার অবসান হলো।
উল্লেখ্য, বস্ত্রখাতের ওই কোম্পানিটির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩৬ দশমিক ৭০ শতাংশ, সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৪৮ দশমিক ১৮ শতাংশ এবং বাকি ১৫ দশমিক ১২ শতাংশ শেয়ার প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর কাছে রয়েছে।