নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে সব সূচক কমার মধ্য দিয়ে গতকাল বৃহস্পতিবারের লেনদেন শেষ হয়েছে। একই সঙ্গে লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কমে আরও তলানিতে নেমেছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেয়া বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর অপরিবর্তিত ছিল। গতকাল সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে সূচকের পতনেও বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বেশি ছিল ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের শেয়ারে। ফলে শুধু এ খাতের শেয়ারদর কিছুটা বেড়েছে। অপরদিকে শেয়ার বিক্রির চাপ ছিল আইটি খাতের শেয়ারে। ফলে খাতটিতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। কিন্তু খাতটি গতকাল লেনদেনের দিক থেকে তৃতীয় স্থানে ছিল।
বাজার পর্যালোচনায় দেখা যায়, গতকাল ভ্রমণ খাতের শেয়ারদর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৩০ শতাংশ। এদিন খাতটিতে মোট ৪টি কোম্পানির শেয়ার লেনদেন হয়েছে। লেনদেন হওয়া শেয়ারের মধ্যে ১টির দর বেড়েছে, ১টির কমেছে ও ২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। এছাড়া টেলিকমিউনিকেশন, সিমেন্ট, মিউচুয়াল ফান্ড, ব্যাংক, প্রকৌশলী, খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ এবং আর্থিক খাতে শেয়ারদর বৃদ্ধির বা কমার কোনো পরিবর্তন হয়নি।
এদিকে গতকাল বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ কম থাকায় আইটি খাতে শেয়ারদর সবচেয়ে বেশি কমেছে। খাতটিতে শেয়ারদর কমেছে ২ দশমিক ২০ শতাংশ। এরপরের স্থানে থাকা সেবা ও আবাসন এবং কাগজ ও মুদ্রণ খাতে শেয়ারদর কমেছে ১ দশমিক ৩০ শতাংশ করে। তৃতীয় স্থানে থাকা পাট খাতে ১ শতাংশ শেয়ারদর কমেছে। শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ করে চতুর্থ স্থানে ছিল সাধারণ বীমা, জীবন বীমা এবং ট্যানারি খাতের শেয়ার।
অপরদিকে গতকাল লেনদেনের দিক থেকে সবচেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছে ওষুধ ও রসায়ন খাতে। খাতটিতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৭ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। এরপর দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিবিধ খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৫ দশমিক ৮০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। তৃতীয় স্থানে থাকা আইটি খাতে ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৪ দশমিক ৬০ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। ৮ দশমিক ৪০ শতাংশ লেনদেন হওয়া ভ্রমণ খাত রয়েছে চতুর্থ স্থানে।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে সব ধরনের সূচক পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। লেনদেনের পরিমাণ কমেছে। লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে চলে এসেছে। এদিন ডিএসইতে ২২২ কোটি ৯৯ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে ডিএসইতে লেনদেন হয়েছিল ২৫৭ কোটি ৬৩ লাখ টাকার শেয়ার। এদিন ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ১৩ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ২০৫ দশমিক ১১ পয়েন্টে। এছাড়া ডিএসই-৩০ সূচক দশমিক ৩৮ পয়েন্ট এবং ডিএসইএস সূচক ৩ দশমিক ৩৮ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ হাজার ২২১ দশমিক ৩৩ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ৩৫৫ দশমিক ৮৫ পয়েন্টে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩১১টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৭টি এবং কমেছে ১৫০টির। শেয়ার পরিবর্তন হয়নি ১৫৪টির।
দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) লেনদেন হয়েছে ৭ কোটি ১০ লাখ টাকার শেয়ার। আগের কার্যদিবসে ৪৬ কোটি ৯১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল। এদিন সিএসইতে লেনদেন হওয়া ১১৮টি কোম্পানির মধ্যে শেয়ার ও ইউনিট দর বেড়েছে ৫টি, কমেছে ৫৬টি এবং পরিবর্তন হয়নি ৫৭টির। কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর উত্থানের চেয়ে পতন ১১ দশমিক ২০ গুণ বেশি।
এদিন সিএসইর প্রধান সূচক সিএএসপিআই ২৫ দশমিক ৬৫ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৩৪ দশমিক ৮৪ পয়েন্টে। এছাড়া সিএসই-৫০ সূচক দশমিক ১৭ পয়েন্ট, সিএসই-৩০ সূচক ৬ দশমিক ৯৭ পয়েন্ট, সিএসসিএক্স সূচক ১৫ দশমিক ৪১ পয়েন্ট এবং সিএসআই সূচক ২ দশমিক ৮১ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১ হাজার ৩২৫ দশমিক ৩৪ পয়েন্টে, ১৩ হাজার ২৯৮ দশমিক ২৩ পয়েন্টে, ১০ হাজার ৯৯০ দশমিক ১৭ পয়েন্টে এবং ১ হাজার ১৫৭ দশমিক ৪৫ পয়েন্টে।