প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

আপিল ‘শুনানির আগে’ মৃত্যুদণ্ডের সংবাদ সঠিক নয়: আইনমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: উচ্চ আদালতে আপিল নিষ্পত্তির চার বছর আগে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের যে প্রতিবেদন কিছু সংবাদমাধ্যমে এসেছে, তা ‘সঠিক নয়’ বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক।

গতকাল সচিবালয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আপিল শুনানির আগে তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কার্যকর করা হয়েছেÑএ কথাটি কিন্তু সঠিক নয়। তাদের আপিল শুনানি হয়েছে, জেল আপিল ছিল, জেল আপিল শুনানি হয়েছে। জেল আপিল শুনানির পরে তাদের প্রাণভিক্ষা চাওয়ার যে অধিকার সেটাও দেয়া হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি নাকচ করার পর তাদের ফাঁসি দেয়া হয়েছে।’

১৯৯৪ সালের একটি হত্যা মামলায় চুয়াডাঙ্গার আব্দুল মোকিম ও গোলাম রসুল ঝড়ু নামের দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ২০১৭ সালে। কিন্তু ‘নিয়মিত আপিল শুনানির আগেই’ তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে বলে সম্প্রতি কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে খবর আসে।

সেখানে বলা হয়, ওই মামলার আপিল শুনানির জন্য একটি আবেদন গত বুধবার আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় (কজলিস্টে) এলে বিষয়টি জানাজানি হয়।

তবে ওই খবর নাকচ করে দিয়ে আইনমন্ত্রী গতকাল বলেন, ‘বিচারিক আদালতে এবং হাইকোর্ট ডিভিশনে তাদের মৃত্যুদণ্ডাদেশ কনফার্ম করা হয়েছিল। জেল আপিলের শুনানি শেষে বিচারিক আদালত এবং হাইকোর্টের রায় বহাল রাখা হয়।’

মামলার প্রক্রিয়ায় কোনো ‘ভুল হয়নি’ মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘যে বিভ্রান্তি ঘটেছে, সেটি হয়তো কোনো এক সময় একটা আপিল কেউ দাখিল করেছিল। আমি আমার ওকালতি জীবনে যেটা দেখেছি, সেটা হচ্ছে এই রকম আপিল দাখিল করা হলে জেল আপলিও যদি থাকে, তাহলে দুটো একসঙ্গে নিষ্পত্তি হয়ে যায়। আমি জানি না তাদের আপিল কবে দাখিল করা হয়েছিল এবং জেল আপিলটা একসঙ্গে কেন করা হলো না।’

১৯৯৪ সালের ২৮ জুন আলমডাঙ্গার দুর্লভপুর গ্রামে মুক্তিযোদ্ধা মনোয়ার হোসেনকে হত্যার ঘটনায় এ মামলা দায়ের করা হয়। সেখানে বলা হয়, পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি পরিচয়ে কয়েকজন চরমপন্থি মনোয়ার হোসেনকে কুপিয়ে হত্যা করে।

২০০৮ সালের ১৭ এপ্রিল চুয়াডাঙ্গা জেলা ও দায়রা জজ আদালত এ মামলায় ৩ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ২ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। ১৬ জন বেকসুর খালাস পান।

সাংবাদিকের বিরুদ্ধে মামলা হলেই গ্রেপ্তার নয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ‘অপব্যবহার’ ঠেকাতে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছেÑজানিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, মামলা হলেই সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করা যাবে না।

তিনি বলেন, ‘আমরা বড় কঠোর হবো, যে এটাকে মিস ইউজ বা অ্যাবিউজ করবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার আমরা ব্যবস্থা করছি। এটা বাক-স্বাধীনতা বা সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণ করার জন্য করা হয়নি। এটাকে একটা নেগেটিভ ব্যবহার করার জন্য অপব্যবহার করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ‘অত্যন্ত প্রয়োজনীয়’ দাবি করে এ আইনে মামলা করার প্রক্রিয়া ব্যাখ্যা করেন আইনমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করলেই যে মামলা নিয়ে নেবে সেটা হবে না, আইসিটি অ্যাক্টের একটা ধারা আছে এবং সেই ধারায় একটা সেল আছে সেখানে সন্তুষ্ট হতে হবে। তারপরই মামলা হবে। এই মামলা যখন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে করা হবে, তাক্ষণিকভাবে তাদের অ্যারেস্ট যাতে না করা হয়, সেই ব্যাপারেও আমি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি আমাকে বলেছেন, এটা সেভাবেই করা হবে।’