প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

আফ্রিকায় ২ কোটি ডলারের মানবিক সহায়তার ঘোষণা কাতারের

শেয়ার বিজ ডেস্ক : মানবিক কর্মসূচির আওতায় আফ্রিকার দেশগুলোয় ২ কোটি ডলারের সহায়তা প্যাকেজের ঘোষণা করেছে কাতার। মানবিক সহায়তা হিসেবে মহাদেশটিতে ইউক্রেনের শস্য পৌঁছে দিতে ভূমিকা রাখবে কাতার। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে এ কর্মসূচির উদ্বোধনের আগে কাতারের উপপ্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী শেখ মোহামেদ বিন আবদুলরহমান আল-থানি এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর: দ্য পেনিনসুলা কাতার।

বক্তৃতার শুরুতে উপপ্রধানমন্ত্রী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, আমিরের একান্ত চেষ্টায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন হতে চলেছে। এ কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন তিনি। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির আমন্ত্রণের জন্য তাকে ধনবাদ জানান উপপ্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, কাতারের এমন কর্মসূচি ও প্রকল্প খাদ্য নিরাপত্তা বাড়াবে এবং উন্নত করবে। আফ্রিকার দেশগুলোয় স্থিতিশীলতা বাড়াতে টেকসই সমাধানের বিকাশ ঘটাবে এ কর্মসূচি। আমরা ইউক্রেনের মানবিক কর্মসূচি চালুর উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তাদের এ উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা দেশগুলোয় ইউক্রেনের শস্য রপ্তানি করব।

আন্তর্জাতিক অংশীদার হিসেবে যৌথ উদ্যোগ ও বহুপাক্ষিক আন্তর্জাতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি কাতার সমর্থন করে যাবে এবং জনগণের আকাক্সক্ষা পূরণে দেশটি কাজ করে যাবে বলে জানান আবদুলরহমান। একই সঙ্গে মানবতার জন্য হুমকিস্বরূপ যেকোনো কর্মকাণ্ড থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখবে দেশটি।

আত্মনির্ভরশীলতা ও সমন্বিত পদক্ষেপের ওপর গুরুত্ব দিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো দেশগুলোর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিশেষ করে যে অঞ্চলের জনগোষ্ঠী সবচেয়ে প্রান্তিক ও দুর্বল তারা গুরুতর পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এ পরিস্থিতির উত্তরণ
হওয়া জরুরি।

পাহাড়সহ চ্যালেঞ্জগুলো বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকিতে ফেলছে এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের কারণে বিশ্বজুড়ে লাখ লাখ মানুষ জ্বালানি সংকটে ভুগছে। এতে হুমকিতে পড়েছে খাদ্য উৎপাদন এবং সরবরাহ শৃঙ্খল ভেঙে পড়েছে। ফলে বাড়ছে অপুষ্টি ও দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি। এসব দুর্যোগ থেকে মুক্তি পেতে দরকার আন্তর্জাতিক মনোযোগ ও ধারাবাহিক সহযোগিতা এবং মানবিক বিষয়গুলোকে অগ্রাধিকার দেয়া।
এ সময় উপপ্রধানমন্ত্রী মনে করিয়ে দেন, যুদ্ধ শুরুর পর এ সমস্যা সমাধানে দ্রুত শান্তিপূর্ণ সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে কাতার। এরই ধারাবাহিকতায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাতার কৃষ্ণসাগর দিয়ে শস্য পরিবহনকে স্বাগত জানায়। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা উন্নীত করার জন্য দেশটি ক্রমাগত চেষ্টা করে যাচ্ছে।

বৈশ্বিক সংকট সমাধানে যে দেশগুলো বেশি সোচ্চার তার মধ্যে কাতার অন্যতম। এর মধ্যে রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা সংকট। এজন্য দেশটি গ্লোবাল ড্রাইল্যান্ড অ্যালায়েন্স শুরু করেছে। এ সংগঠন বিভিন্ন দেশে নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন খরায় ভুগছে এমন দেশগুলোয় খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে। আরও রয়েছে কাতার ফান্ড ফর ডেভেলপমেন্ট (কিউএফএফডি), যা জরুরি মানবিক প্রয়োজনে সাড়া দেয়। এ তহবিল থেকে হর্ন অব আফ্রিকার গ্রামীণ জনপদের খাদ্য নিরাপত্তা ও টেকসই খাদ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য ১ কোটি ২০ লাখ ডলার সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এ গ্রুপ ইয়েমেনে খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচিতে এ পর্যন্ত ৯ কোটি ডলারের সহায়তা করেছে। উপরন্তু কাতার ইউক্রেনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে অ্যাম্বুলেন্স ও অন্যান্য চিকিৎসা সরঞ্জাম বাবদ ৫০ লাখ ডলার দিয়েছে।

কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানিয়েছেন, বিশ্ব আজ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এ সমস্যা সমাধানের উপায় খুঁজছে কাতার। আফ্রিকা ও এশিয়ার দুর্বল দেশগুলোয় তাই খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন তিনি।