নিজস্ব প্রতিবেদক: এক দিনের বিরতি দিয়ে লেনদেন আবারও ৮০০ কোটি টাকা ছাড়ালো। দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল সোমবার মূল্য সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন ডিএসইতে আগের দিনের তুলনায়ও প্রায় ১০ শতাংশ লেনদেন বেড়েছে। বেশিরভাগ কোম্পানির দরবৃদ্ধির দিনে প্রধান বাজারের সার্বিক লেনদেন ও সন্তোষজনক ছিল বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা। অন্যদিকে ডিএসইর মতো সিএসইতে লেনদেনও ছিল সন্তোষজনক।
গতকালের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল ডিএসইতে ৮০৭ কোটি ৭৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিনের তুলনায় ৭৪ কোটি ৩৮ লাখ টাকা বেশি। আগের দিন এ বাজারে ৭৩৩ কোটি ৪০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
এদিন ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেয় ৩২১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১৪৬টির, কমেছে ১২৯টি এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৪৬টির শেয়ার দর।
এদিকে ডিএসইএক্স বা প্রধান মূল্য সূচক ১৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে চার হাজার ৮৩৬ পয়েন্টে। ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক দুই পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৫১ পয়েন্টে। আর ডিএস৩০ সূচক এক পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে এক হাজার ৭৮৪ পয়েন্টে।
ডিএসইতে লেনদেনের শীর্ষ কোম্পানিগুলো হলো শাশা ডেনিমস, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, ইফাদ অটোস, কেয়া কসমেটিকস, বেক্সিমকো, আরএসআরএম স্টিল, অ্যাকটিভ ফাইন, জিপিএইচ ইস্পাত, আরগন ডেনিমস ও ওরিয়ন ফার্মা।
গতকাল দর হারানোর শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, ইবিএলএনআরবি মিউচুয়াল ফান্ড, ড্রাগন সোয়েটার, রিপাবলিক, ওটা কেমিক্যাল, রেকিট বেনকিজার, সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স ও অগ্রণী ইন্স্যুরেন্স।
এদিকে খাতভিত্তিক লেনদেনে গতকাল সবচেয়ে বেশি অবদান ছিল প্রকৌশল খাতের কোম্পানির। লেনদেনে ২২ দশমিক ৩৬ শতাংশ ছিল এ খাতের অবদান। এগিয়ে ছিল বস্ত্র খাতের কোম্পানিগুলোও। মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ছিল ১৪ দশমিক ৩৬ শতাংশ। পরের অবস্থানে ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাত। এ খাতের অবদান ছিল প্রায় ৯ শতাংশ। পরের অবস্থানে থাকা খাত দুটি হচ্ছে জ্বালানি ও শক্তি এবং ব্যাংক। ব্যাংকিং খাতের অবদান ছিল প্রায় ৮ শতাংশ এবং জ্বালানি ও শক্তি খাতের অবদান ছিল ৮ দশমিক ২ শতাংশ।
বাজার পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে ইনভেস্টমেন্ট প্রমোশন সার্ভিসেস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তাক আহমেদ সাদেক বলেন, পুঁজিবাজার খুবই সংবেদনশীল। কোম্পানির শেয়ারমূল্য নির্ধারিত হয় সাধারণত কোম্পানির আর্থিক ভিত্তির ওপর। বিশেষ করে কোম্পানিগুলোর প্রবৃদ্ধি ও সম্ভাবনার ওপর নির্ভর করে শেয়ারদর। অর্থনীতির সব সূচক ইতিবাচক থাকায় বাজার পরিস্থিতি এখন বিনিয়োগের জন্য অনুকূলে রয়েছে। এছাড়া ব্যাংকের সুদ হার কমে যাওয়াও বাজারকে তারল্য প্রবাহ বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখবে। কারণ সবাই বাজারে আসে মুনাফা করতে। যেখানে মুনাফা পাবে, বিনিয়োগকারীরা সেখানেই থাকবে। তাই আগামীদিনে বিনিয়োগ আরও বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
অন্যদিকে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সূচকের উন্নতি দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। সিএসইতে ৪৯ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। সিএসই সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৫১ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৯০৬ পয়েন্টে। সিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২৪৬টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১১৯টির, কমেছে ৮৬টির এবং অপরিবর্তিত ছিল ৪১টির।
গতকাল সিএসইতে লেনদেনে শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল বেক্সিমকো, কেয়া কসমেটিকস, ডরিন পাওয়ার, ফরচুন সুজ, প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, এ্যাপোলো ইস্পাত, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেম, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ, জিপিএইচ ইস্পাত ও ওরিয়ন ফার্মা। আর সেখানে দর হারানোর শীর্ষ কোম্পানিগুলো ছিল ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, অ্যামবি ফার্মা, রূপালী ইন্স্যুরেন্স, লিগ্যাসি ফুটওয়্যার, ডিএসএসএল, দ্য পেনিনসুলা, বিবিএস ও বিআইএফসি।: