শেয়ার বিজ ডেস্ক: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনে কিয়েভকে ১ দশমিক ৫ বিলিয়ন (এক হাজার ৫৬০ কোটি) ডলার ঋণ সহায়তা দিচ্ছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ইউক্রেন। খবর: রয়টার্স।
এর আগে ২০২২ সালে ইউক্রেনকে সহায়তা হিসেবে ৫৩ কোটি ডলার সহায়তা করার অনুমোদন দেয় বিশ্বব্যাংক। এক বিবৃতিতে বিশ্বব্যাংক জানায়, ইউক্রেনের সহায়তা হিসেবে এখন পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ব্যবস্থা করেছে আন্তর্জাতিক সংস্থাটি। এর মধ্যে ইউক্রেনকে দেয়া হয়েছে ১ হাজার ১০০ কোটি ডলার।
আইএমএফ যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে এক ঘোষণায় জানিয়েছে, কয়েক মাসের আলোচনার পর তারা কিয়েভকে চার বছরের জন্য এক হাজার ৫৬০ কোটি ডলার ঋণ দেয়ার একটি প্রাথমিক চুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছে।
আইএমএফের এ অর্থ এক বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়ার সামরিক অভিযানে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনের অর্থনীতি ও অবকাঠামো পুনর্গঠনে সহায়তা করবে বলে ধারণা পশ্চিমা
ঋণ দাতাদের। বিবৃতিতে আইএমএফ জানিয়েছে, চলতি বছর ইউক্রেনের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি মাইনাস ৩ শতাংশ থেকে বেড়ে এক শতাংশে উন্নীত হবে বলে আশা করছে তারা।
এর আগে গত বছরের অক্টোবরে ইউক্রেনের জন্যে জরুরি সহায়তা হিসেবে ১৩০ কোটি ডলার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল আইএমএফ। এ সহায়তা ইউক্রেনের আমদানি-রপ্তানি সংক্রান্ত অর্থ পরিশোধসহ জরুরি প্রয়োজন মেটাতে সহায়তা করবে জানায় সংস্থাটি। এটি দেশটির সরকারকে ঋণদাতা ও দাতা সংস্থাগুলোর কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করবে। এক টুইট বার্তায় দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ অর্থ সহায়তার কথা নিশ্চিত করে বলেন, সহায়তার এ অর্থ আজ ইউক্রেনে আসবে। তবে তা আলোর মুখ দেখেনি। এমনকি যুদ্ধ শুরু হওয়ার এক মাসের মাথায় আইএমএফ ইউক্রেনের জন্য ১৪০ কোটি মার্কিন ডলারের জরুরি তহবিল অনুমোদন করে। তবে এক বছর আইএমএফের অর্থ সহায়তা পেল ইউক্রেন।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্র ইউক্রেনে তাদের প্রতিশ্রুত ৩১টি আব্রামস যুদ্ধ ট্যাংক চলতি শরতের মধ্যেই সরবরাহে আগ্রহী বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন পেন্টাগনের মুখপাত্র ব্রিগেডিয়ার জেনারেল প্যাট্রিক রাইডার। কিয়েভ এ যুদ্ধযান ও আরও সংবেদনশীল পশ্চিমা সামরিক সরঞ্জামের জন্য ধারাবাহিকভাবে আকুতি জানিয়ে আসছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মিত্রদের দেরি না করে, যত দ্রুত সম্ভব গোলাবারুদসহ আরও সামরিক সহায়তা দিতে অনবরত তাগাদা দিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) গত সোমবার ইউক্রেনকে ১০ লাখ কামানের গোলা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে মিত্ররা যে হারে গোলাবারুদ দিতে সক্ষম হচ্ছে, ইউক্রেন তার চেয়েও অধিক হারে সেগুলো শেষ করে ফেলছে।
ঋণ প্রসঙ্গে আইএমএফের কর্মকর্তা গেভিন গ্রে বলেন, ইউক্রেনের অনিশ্চিত অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা, যুদ্ধ পরবর্তীকালে ইউরোপীয় ইউনিয়নে কিয়েভের যোগদান ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটির পুনর্গঠনে সহযোগিতা করা এ ঋণ প্রকল্পের প্রধান লক্ষ্য। এ সহায়তার অর্থ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ব্যয়ের পাশাপাশি দেশটির আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে ব্যয় করা হবে।
মার্কিন অর্থমন্ত্রী জেনেট ইয়েলেন আইএমএফকে এ পদক্ষেপের জন্য স্বাগত জানিয়েছেন। ইউক্রেনের প্রতি সমর্থন ও এ চুক্তির জন্য আইএমএফকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্যামিহাল। তবে আইএমএফ কর্তৃপক্ষ এখনও চুক্তিটি অনুমোদন করেনি। শিগগির চুক্তি অনুমোদনের বিষয়ে আলোচনা করবে বলে জানিয়েছে সংস্থাটির নির্বাহী বোর্ড।