শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইউক্রেনের সাবেক চার প্রদেশ দোনেৎস্ক, লুহানস্ক, খেরসন ও ঝাপোরিঝিয়াকে রুশ ভূখণ্ড বলে স্বীকৃতি দেয়া, ক্রিমিয়া উপদ্বীপ থেকে নিজেদের দাবি প্রত্যাহার করে নেয়াসহ যেসব শর্ত কিয়েভকে দিয়েছে মস্কো-ইউক্রেনের সরকার সেসব মেনে নিলে দুই দেশের মধ্যকার যুদ্ধ বন্ধ হয়ে যাবে বলে দাবি রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিনের। খবর: রয়টার্স।
ক্রেমলিনের প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানিয়েছেন। পেসকভ বলেন, যত দ্রুত ইউক্রেনের সরকার আমাদের দাবি মেনে নেয়ার জন্য প্রস্তুত হবে, তত দ্রুত এসব কিছু (যুদ্ধ) শেষ হবে এবং ইউক্রেনের জনগণও এ ট্র্যাজেডি থেকে মুক্ত হয়ে নতুন করে তাদের জীবন শুরু করতে পারবে। আমরা সেটাই চাই। এ যুদ্ধ শুরু হয়েছিল ইউক্রেনের কারণে। সে দেশের সরকারের সিদ্ধান্তের ওপরই যুদ্ধের সমাপ্তি নির্ভর করছে।
এদিকে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কিও ১০টি পয়েন্ট-সংবলিত একটি শান্তি প্রস্তাব দিয়েছেন। সেই প্রস্তাবের প্রথম শর্তই হলোÑইউক্রেনে রুশ বাহিনীর দখল করা সব অঞ্চল ফের দেশটিকে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং রুশ সেনাদের প্রত্যাহার করতে হবে।
১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে সাবেক সোভিয়েত অঙ্গরাজ্য ইউক্রেন। তারপর থেকে জাতিগত সংঘাত শুরু হয় দেশটিতে।
সংঘাতের মূল কারণ, ইউক্রেনের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ সরাসরি রুশ বংশোদ্ভূত ও রুশভাষী। সোভিয়েত আমলে রুশ জনগোষ্ঠীর সঙ্গে ইউক্রেনীয় জনগোষ্ঠীর মোটামুটি সদ্ভাব বজায় থাকলেও ইউক্রেন স্বাধীন হওয়ার পর দ্বন্দ্ব শুরু হয় এ দুই জনগোষ্ঠীর মধ্যে।
ইউক্রেনের রুশভাষী লোকজন বরাবরই নিজেদের রাশিয়ার অংশ হিসেবে বিবেচনা করে। অন্যদিকে ইউক্রেনীয়রা সবসময় নিজেদের স্বাধীন ও স্বতন্ত্র জাতি মনে করতে অভ্যস্ত। মূলত এটিই দুই জনগোষ্ঠীর দ্বন্দ্বের মূল কারণ এবং এই দ্বন্দ্বের জেরে সৃষ্ট সংঘাতে ১৯৯১ সালের পর গত ৩০ বছরে ইউক্রেনে নিহত হয়েছেন ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।
২০১৪ সালে ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপ দখল করে নেয় রাশিয়া। দেশটির রুশভাষী জনগোষ্ঠী এক্ষেত্রে রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও সরকারকে সরাসরি সহায়তা করেছিল।