শেয়ার বিজ ডেস্ক : দাবদাহের কারণে চলতি বছরের গ্রীষ্মকালে ইউরোপে ২২ হাজার ৭৯২ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আন্তর্জাতিক জলবায়ু গবেষণা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিয়েশেন গ্রুপ (ডব্লিউডব্লিউএজি) এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। খবর: রয়টার্স।
মৃতদের সবাই ফ্রান্স, জার্মানি, স্পেন ও যুক্তরাজ্যের। সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছেন ফ্রান্সেÑ১০ হাজার ৪২০ জন। এছাড়া স্পেনে ৪ হাজার ৬৫৫, জার্মনিতে ৪ হাজার ৫০০ ও যুক্তরাজ্যে ৩ হাজার ২৭১ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, চলতি গ্রীষ্মে ইউরোপজুড়ে যে দীর্ঘ দাবদাহ দেখা দিয়েছিল, তা কার্যত জলবায়ুর পরিবর্তন ছাড়া অসম্ভব।
এর আগে ২০০৩ সালে দাবদাহজনিত কারণে ইউরোপে ৭০ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। মৃতদের বেশিরভাগ ফ্রান্সের নাগরিক ছিলেন। মূলত তারপর থেকে তাপপ্রবাহের লক্ষণ দেখা গেলে পূর্বাভাস ও সতর্কবার্তা দেয়ার নিয়ম চালু হয় ফ্রান্সসহ ইউরোপের অন্য দেশগুলোয়। ফ্রান্সের স্কুলগুলোয় এয়ারকন্ডিশনার বসানো শুরু হয় ২০০৩ সাল থেকে।
প্রায় বিশ বছর আগের সেই দুর্যোগ থেকে শিক্ষা নেয়ার কারণে ফ্রান্সে চলতি বছরের দাবদাহে মৃতের সংখ্যা অপেক্ষাকৃত কম। কিন্তু তারপরও যত মানুষের মৃত্যু হয়েছে ২০২২ সালে তা রীতিমতো উদ্বেগজনক বলে মনে করেন ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিয়েশন গ্রুপের গবেষকরা।
অস্ট্রিয়ার গ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ুবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক এবং ডব্লিউডব্লিউএজির গবেষকদলের সদস্য ক্লোয়ে বিমিকম্বে বলেন, আমার জানামতে, ২০০৩ সালের পর ইউরোপে সবচেয়ে ব্যাপক ও দীর্ঘমেয়াদি তাপপ্রবাহ চলেছে ২০২২ সালের গ্রীষ্মে। অসহনীয় গরম পড়লে অনেকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হন। হিটস্ট্রোক হলে মস্তিষ্ক, কিডনিসহ অন্যান্য অভ্যন্তরীণ প্রত্যঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। এছাড়া হিটস্ট্রোকে হলে তাৎক্ষণিকভাবে সঙ্গে হƒদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়া (হার্ট অ্যাটাক) কিংবা শ্বাস-প্রশ্বাস বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
ওয়ার্ল্ড ওয়েদার অ্যাট্রিবিয়েশেন গ্রুপের গবেষণা প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, হিটস্ট্রোক এবং তার পরবর্তী বিভিন্ন শারীরিক জটিলতার কারণে মারা গেছে এই ২২ হাজার ৭৯২ জন মানুষ।