নিজস্ব প্রতিবেদক : রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ইভিএমে ভোটারদের আঙুলের ছাপ না মেলাসহ ধীরগতির যে অভিযোগ এসেছে, তা পর্যালোচনা করে আগামীতে ‘সংকট’ কাটিয়ে ওঠার কথা বলেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল রাজধানীতে নির্বাচন ভবনে ‘রংপুর সিটি নির্বাচন-পরবর্তী মতবিনিময়’ সভায় তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি রংপুরে সিটি করপোরেশনে যে নির্বাচনটি হয়েছেÑনির্বাচন সুন্দর হয়েছে, সুষ্ঠু হয়েছে, অংশগ্রহণমূলক হয়েছে। কিন্তু কিছু সংকটের কথা বলা হয়েছে। এগুলো পর্যালোচনা করে চেষ্টা করব সংকটগুলো ওভারকাম করার। একই সঙ্গে আপনাদের বলছি, অন্য নির্বাচনগুলোয় কিন্তু আমরা এ সমস্যাগুলো পাইনি। আপনারা কিছু কিছু বলেছেন, সেগুলোর যৌক্তিক বলে মনে হয়েছে।’
ইভিএমে ভোট নেয়ার সময় আঙুলের ছাপ মিলিয়ে ভোটারের পরিচয় নিশ্চিত করা হয়। কিন্তু বয়স্ক অনেকের ক্ষেত্রে ছাপ কয়েকবারেও মিলতে চায় না। এ ধরনের সমস্যা হলে সময় নষ্ট হয়। সার্বিকভাবে ভোটগ্রহণের গতি যায় কমে।
সিইসি বলেন, ‘যেটাই হোক, ফিডব্যাক নেয়ার দরকার ছিল, আমরা সেটি নিয়েছি। ফিডব্যাক নিয়ে আমরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করব। আলাপ-আলোচনা করে এগুলোকে যতটা ওভারকাম করা সম্ভব আমরা সেটি চেষ্টা করব।’
গত ২৭ ডিসেম্বর রংপুর সিটি করপোরেশনের তৃতীয় নির্বাচনে সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোটগ্রহণ হয়। সেখানেও ইভিএমে আঙুলের ছাপ না মেলার সমস্যা, ভোট নিতে ধীরগতি এবং ভোট শেষ করতে বিলম্বের অভিযোগ নিয়ে আলোচনা হয়।
‘ইভিএমে জটিলতার কারণে’ ভোট দিতে গিয়ে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হয় জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী মুস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে, যিনি পরে মেয়র নির্বাচিত হন।
ভোট কেন্দ্রের বাইরে গিয়ে সাংবাদিকদের কাছে ইভিএম নিয়ে হতাশা ও অসন্তোষ প্রকাশ করে মোস্তফা বলেন, ‘আমি সকাল ৯টায় কেন্দ্রে এসে দেখি ইভিএম হ্যাং করেছে। আমি ১৫ মিনিটের মতো অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারিনি।’
ভোটের দিনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সিইসি হাবিবুল আউয়াল বলেন, কিছু অভিযোগ পাওয়া গেছে গণমাধ্যমের সুবাদে। যেমন ভোট সেøা হচ্ছে, একটা বড় ধরনের অভিযোগ ছিল, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ফিঙ্গার প্রিন্ট মিলছিল না।
তবে এর আগে অন্য নির্বাচনে ইভিএমে ভোটে ধীরগতির অভিযোগ না পাওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘… আমাদের এখানে টেকনিক্যাল এক্সপার্ট যারা ছিলেন, মিডিয়াকর্মী যারা ছিলেন, তারা ফ্যাক্টটা তুলে ধরেছেন, যে বিলম্ব হয়েছে। ফিঙ্গারপ্রিন্ট মেলেনি, এ ঘটনাটি খুব বেশি ঘটেনি। কিন্তু বিলম্ব হয়েছে। বিলম্ব অনেক কারণেই হতে পারে। আমরা গভীরভাবে চিন্তা করব। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিরূপণ করার চেষ্টা করব।’
এই অভিযোগ নির্বাচন কমিশনকে ‘খুব উদ্বিগ্ন করে জানিয়ে সিইসি বলেন, ইসি চায় স্বচ্ছ নির্বাচন, অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন। এ জন্য সংশ্লিষ্টদের ‘ফিডব্যাক’ নেয়া হয়েছে।
মতবিনিময় সভায় রিটার্নিং কর্মকর্তা, পর্যবেক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।