মো. শহিদুল ইসলাম: অর্থনৈতিক উন্নয়নে প্রয়োজন রাজনৈতিক ব্যবস্থার স্থিতিশীলতা। স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থা উৎপাদন ও বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে। রাজনীতির ইঞ্জিন চলমান থাকলে অর্থনীতির চাকা হয় গতিশীল। একটি অন্যটির ওপর নির্ভরশীল। রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে অনেক দূর। অনেক দেশ দরিদ্র হওয়া সত্ত্বেও যোগ্য রাজনৈতিক নেতৃত্বে খুব দ্রুতই উন্নত বিশ্বের কাতারে নাম লেখাতে পেরেছে। মালয়েশিয়া এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের কাছাকাছি সময়ে স্বাধীন হয়েও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আর যোগ্য নেতৃত্বের কারণে দেশটি এগিয়েছে অনেক দূর। ভারত ও পাকিস্তান একই সময়ে স্বাধীন হওয়ার পরও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অভাবে পাকিস্তান যেমন পিছিয়েছে, তেমনি স্থিতিশীল রাজনীতির কারণে এগিয়েছে ভারত।
স্বাধীনতা-পরবর্তী একটি ভঙ্গুর অর্থনীতি নিয়ে পথ চলা শুরু করেছিল বাংলাদেশ। অর্থনৈতিক অগ্রগতির জন্য যে ধরনের নেতৃত্ব দেওয়ার প্রয়োজন ছিল, তা দিতে পারেননি দেশের রাজনৈতিক নেতারা। তার ওপর দীর্ঘ ১৫ বছরের সামরিক শাসন, সামরিক অভ্যুত্থান-পাল্টা অভ্যুত্থান, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সামরিক শাসকদের দুর্নীতি দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ব্যাহত করেছে বার বার। জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠার পরিবর্তে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়ন জেঁকে বসেছে দেশের ওপর। নব্বই দশকে দেশের শাসনব্যবস্থায় মৌলিক পরিবর্তন আসে। সংসদীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। নানা ঘাত-প্রতিঘাত অতিক্রম করে সংসদীয় গণতন্ত্র প্রায় ২৫ বছর পার করেছে। বিভিন্ন সমস্যা থাকলেও সংসদীয় গণতন্ত্রের অর্জনও কম নয়। মাঝখানে দুবছরের জন্য একটি অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করেছিল। খানিকটা থমকে দাঁড়ায় গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতা। তারপরও এগিয়েছে বাংলাদেশ। এগিয়েছে দেশের অর্থনীতি। আর তা সম্ভব হয়েছে স্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থার কারণেই।
গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় গত আড়াই দশক ধরেই এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ। কৃষি, শিল্প, বিশেষত তৈরি পোশাক খাত, প্রবাসী আয়, তথ্যপ্রযুক্তি খাত, বৈদেশিক বিনিয়োগ, ব্যাংকিং খাত, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রায় সব ক্ষেত্রেই উন্নতি হয়েছে। গত এক দশক ধরে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছয় শতাংশের বেশি। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৭.০৫-এ। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো এক প্রাক্কলিত হিসাবে এই তথ্য জানানো হয়। বলা যায়, বড় বড় দাতা সংস্থার পূর্বাভাস ও হিসাবনিকাশকে অসার প্রমাণ করে এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে বাংলাদেশ। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা যে এই প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক ভূমিকা রেখেছে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
গত দশকে বাংলাদেশের অন্যতম সাফল্য সহস্রাব্দ উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে এগিয়ে যাওয়া। চরম দারিদ্র্য দূরীকরণ, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, সবার জন্য শিক্ষাসহ প্রায় আটটি খাতেই বাংলাদেশ অভাবনীয় সাফল্য দেখিয়েছে। দারিদ্র্য বিমোচনের ক্ষেত্রে তো বাংলাদেশ বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে মডেল হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। ২০১৬ থেকে শুরু হওয়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনেও বাংলাদেশ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ নিম্ন-মধ্যআয়ের দেশে প্রবেশ করেছে। ২০২১ সালের মধ্যেই হয়তো আমাদের দেশকে উচ্চ-মধ্যআয়ের দেশ হিসেবে দেখতে পাবো। এখন যা স্বপ্ন, আগামীর বাংলাদেশে তা-ই বাস্তব হবে। বাস্তবায়িত হবে ‘সোনার বাংলা’ গড়ে তোলার স্বপ্ন।
দারিদ্র্যের কশাঘাতে জর্জরিত, সমালোচকদের দৃষ্টিতে একসময়কার ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ এখন বিশ্বের দরবারে এক হিমালয়ের নাম। উন্নয়নের বিভিন্ন সূচকে অগ্রগতি সাধন করে জানান দিচ্ছে ‘আমরাও পারি’। মুক্তিযুদ্ধের সময় যে দেশের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ সম্পদ ধ্বংস হয়েছে, সে দেশই এখন দারিদ্র্র্য বিমোচন মডেল নিয়ে বিশ্বদরবারে হাজির হয়েছে। ২০০০ সালে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৮.৭ শতাংশ। এক দশকের ব্যবধানে প্রায় আট শতাংশ দারিদ্র্য হ্রাস পেয়ে ২০১০ সালে ৩১.৫০ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। আর ২০০০ সালের পর ১৫ বছরের মাথায় এসে প্রায় অর্ধেক দারিদ্র্য কমেছে বাংলাদেশে। এখন দারিদ্র্যের হার মাত্র ২৫.৬ শতাংশ।
শুধু দারিদ্র্য বিমোচনই নয়, মাথাপিছু আয়ও বেড়েছে উল্লেখযোগ্য হারে। দেশের মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন হয়েছে। মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বেড়েছে কয়েকগুণ। গত অর্থবছরে বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১৩৬২ ডলার। এপ্রিল মাসে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের এক প্রাক্কলিত হিসাবে দেখানো হয়, ২০১৫-১৬ অর্থবছরে মাথাপিছু আয় দাঁড়াবে ১৪৬৬ ডলারে। এগুলো সবই আমাদের অর্জন। আমরা যুদ্ধ করেছি স্বাধীনতার জন্য। সে যুদ্ধে জয়ী হয়েছি। এখন যুদ্ধ মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার। আমরা সে পথেই এগিয়ে যাচ্ছি।
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে যে খাতের অবদান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, তা হলো তৈরি পোশাক খাত। বিভিন্ন সমস্যা থাকা সত্ত্বেও এগিয়ে যাচ্ছে এই খাত। তাজরীন গার্মেন্ট কিংবা রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনা ঘটলেও থামাতে পারেনি এই খাতের অগ্রযাত্রা। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে পোশাক রফতানি থেকে আয় হয়েছে দুই হাজার ৮০০ কোটি ডলার। আর মোট রফতানি আয় ২০১৪-১৫ অর্থবছরের চেয়ে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ বেশি হয়েছে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে প্রবাসী আয় এসেছে এক হাজার ৫৩০ কোটি ডলার। তৈরি পোশাক রফতানিতে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়। আর বৈদেশিক মুদ্রা মজুতের দিক থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরই বাংলাদেশের অবস্থান। এগুলো বাংলাদেশের অগ্রগতির ইতিবাচক দিক। যে স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে, সেই স্বপ্ন পূরণের হাতছানি বর্তমান।
আগেই বলেছি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নের একটি ইতিবাচক সম্পর্ক রয়েছে। বিশেষ করে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চলমান থাকলে এই সম্পর্ক আরও গাঢ় হয়। গত আড়াই দশকে বাংলাদেশে মোট পাঁচটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সর্বশেষ ২০১৪ সালে অনুষ্ঠিত হয় দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন। একাদশ নির্বাচনের এখনও অনেক দেরি। কোথাও আগাম নির্বাচনের কথাও শোনা যাচ্ছে। কিন্তু উদ্বেগের বিষয় হলো, প্রায় প্রতিটি নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই রাজনৈতিক কিংবা সাংবিধানিক সংকট তৈরি হয়েছে। ২০০৬ সালে তৎকালীন সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার প্রাক্কালে দেশময় সাংঘর্ষিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অবিশ্বাস আর সমঝোতার অভাবের কারণে সুষ্ঠু নির্বাচন বাধাপ্রাপ্ত হয়। ২০১৪ নির্বাচনের আগে ও পরে কীরকম ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তা আমরা সবাই জানি। সুতরাং আগাম নির্বাচন কিংবা অন্য কোনো রাজনৈতিক ইস্যুতে যেন রাজনৈতিক পরিস্থিতি অস্থিতিশীল না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। কারণ অস্থিতিশীল পরিস্থিতি গণতন্ত্রের জন্য যেমন হুমকি, তেমনি হুমকি দেশের অর্থনীতির জন্যও।
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে থমকে যেতে বসেছিল অর্থনৈতিক অগ্রগতি। গত আড়াই দশকের অর্জনগুলো ফিকে হতে বসেছিল সরকারি আর বিরোধী দলের হটকারী সিদ্ধান্ত ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধবিবর্জিত কাজের জন্য। সরকারের অব্যবস্থাপনায় বিদেশি ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীরা হতাশ হয়ে অন্য দেশমুখী হচ্ছিলেন। রানা প্লাজা ধস, তাজরীন গার্মেন্টে অগ্নিকাণ্ডসহ তৈরি পোশাক খাতে অস্থিতিশীল পরিবেশ, শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, পদ্মা সেতু দুর্নীতি, ব্যাংক থেকে অধিক ঋণ গ্রহণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, প্রশাসন দলীয়করণ, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা ও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন করতে না পারায় বিদেশি বিনিয়োগ কমে যাচ্ছিল। এর প্রভাব পড়েছে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে। কিন্তু গত দুবছরে সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠেছে দেশ। দেশি ও বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধিসহ অন্যান্য পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটেছে।
অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে হরতাল একটি ব্যাধিস্বরূপ। আমরা অতীতে লক্ষ্য করেছি, বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে বিরোধী দলগুলোর পক্ষ থেকে হরতাল ডাকা হয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় হরতাল একটি বৈধ কর্মসূচি। কিন্তু হরতালকে কেন্দ্র করে যেসব ঘটনা ঘটে, তা যে কী পরিমাণ ভয়াবহ হতে পারে—তা কারও অজানা নয়। হরতালের কারণে শিক্ষা কার্যক্রমসহ বিঘ্নিত হয় উৎপাদন ব্যবস্থা। অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যও কমে যায় আশঙ্কাজনকভাবে। কমে যায় ব্যাংক, বিমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের লেনদেন। ব্যাহত হয় শেয়ারবাজারের বেচাকেনা। ক্ষদ্র ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হন আশঙ্কাজনক হারে। সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হন।
দাবি আদায়ে হরতাল গণতান্ত্রিক কর্মসূচি হলেও এটি দেশের সার্বিক অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক নয়। একদিনের হরতালে দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ থাকায় সামগ্রিক উৎপাদন কার্যক্রমও বন্ধ থাকে। ইউএনডিপির প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিটি হরতালে গড়ে মোট জিডিপির পাঁচ হাজার ৫৪৬ কোটি টাকার ক্ষতি হয়। এফবিসিসিআই’র হিসাবে একদিনের হরতালে দেশের মোট অর্থনীতির অন্তত ১২ শতাংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এছাড়া আমদানি-রফতানিতেও অন্তত ১০ শতাংশ ক্ষতি হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্য কমে যাচ্ছে প্রায় ৪৪ শতাংশ। অপরদিকে দ্রব্যমূল্য বাড়ছে প্রায় ১০ শতাংশ। একদিনের হরতালে শুধু পোশাক শিল্পে ক্ষতি হচ্ছে ২০০ কোটি টাকার। হরতালে বাস-মিনিবাস ও ট্রাক চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবহন খাতে ক্ষতি হয় ২৫০ কোটি টাকা। এছাড়া পাইকারি বাজার, শপিংমল, শোরুম, ক্ষুদ্র ও ছোট দোকানে আয় হওয়ার বিপরীতে একদিনের হরতালে ক্ষতি হয় ৬০০ কোটি টাকা। অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে হবে।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বৈদেশিক বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখে। একটা সময় ব্যাপক হারে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছিল। সাত-আট বছর আগে শিল্প খাতে ব্যাপক হারে সরাসরি বৈদেশিক বিনিয়োগ আসতে শুরু করেছিল। এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে পরবর্তী পাঁচ বছরে দেশে মোট ১০ বিলিয়ন ডলারের সরাসরি বিনিয়োগ আসবে বলে বিনিয়োগ বোর্ড থেকে সে সময় ধারণা দেওয়া হয়। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে সম্ভাবনাময় বিনিয়োগ প্রস্তাবগুলো একে একে চলে গেছে। রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা যত বাড়বে, বিদেশি বিনিয়োগ আসার পরিমাণ ততো কমবে। এর প্রভাব পড়বে শিল্পোৎপাদনের ওপর। এ বছরের মাঝামাঝিতে গুলশান হামলাসহ বিদেশি ও মুক্তচিন্তার মানুষদের ওপর হামলা বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করেছে। বিশেষ করে গুলশান হামলার ঘটনায় বিদেশিরা ব্যাপক উদ্বেগের মধ্যে ছিলেন। তবে সরকারের দক্ষ ভূমিকায় পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। বিনিয়োগকারীরা আবারও আশার আলো দেখছেন।
দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রয়োজনে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের কোনো বিকল্প নেই। দেশে এখন এক ধরনের স্থিতিশীল অবস্থা বিরাজ করছে। কিন্তু পরবর্তী নির্বাচন, নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা ও নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে ইতোমধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে। যদি সেক্ষেত্রে কোনো সংকট দেখা দেয়, তবে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোকেই এগিয়ে আসতে হবে তা সমাধানে। ‘ঘরপোড়া গরু সিঁদুরে মেঘ দেখলেই ভয় পায়’। আমরা তেমনই ভয় পাই। নির্বাচনের কথা উঠলে সঙ্গে সঙ্গে সংঘাতের কথা মনের কোণে উঁকি দেয়। ভবিষ্যতে আর যেন কোনো সংঘাতময় পরিস্থিতির সৃষ্টি না হয়, সরকারসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সেদিকে নজর রাখতে হবে। চেষ্টা করতে হবে স্থিতিশীল অবস্থা বজায় রাখার। গণতান্ত্রিক ধারাবহিকতা রক্ষা করতে হবে অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বার্থেই। বাংলাদেশ যে উন্নয়ন মহাসড়তে উঠেছে, আমরা তার গন্তব্যে পৌঁছাতে চাই।
লেখক: গবেষক, গবেষণা ও মূল্যায়ন বিভাগ, ব্র্যাক