নিজস্ব প্রতিবেদক : পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয় এ রকম কোনো সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেনি বলে জানিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা গাজী তৌহিদুল ইসলামের সই করা এক বিবৃতিতে গতকাল সোমবার এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, ‘পাঁচটি ইসলামী ব্যাংক একীভূত’ করার প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে একটি স্বার্থান্বেষী মহল কর্তৃক সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে গুজব ছড়ানো হচ্ছে। বিষয়টি সরকারের দৃষ্টিগোচর হয়েছে।
এতে আরও বলা হয়, বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়Ñএ রকম কোনো সিদ্ধান্ত সরকার গ্রহণ করেনি। ব্যাংক একীভূত করার প্রক্রিয়ায় বিনিয়োগকারীদের স্বার্থের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিষয়টি সম্পূর্ণ গুজব ও ভিত্তিহীন। এ ধরনের বিভ্রান্তিকর গুজবের বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো।
গত বৃহস্পতিবার সংকটে পড়া পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংক একীভূত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংককে নিয়ে এখন নতুন একটি শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংক গঠন করা হবে।
নতুন ব্যাংকের জন্য নাম প্রস্তাব করা হয়েছে দুটি ‘ইউনাইটেড ইসলামিক ব্যাংক’ ও ‘সম্মিলিত ইসলামিক ব্যাংক’। ব্যাংকটি পরিচালিত হবে বাণিজ্যিকভাবে ও পেশাদারির ভিত্তিতে।
এদিকে পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণে বাংলাদেশ ব্যাংককে চিঠি দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। গত সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহে এ বিষয়ে একটি চিঠি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্রে জানা গেছে, ‘ব্যাংক রেজুলেশন অধ্যাদেশ, ২০২৫’ অনুযায়ী, একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ শেয়ারহোল্ডাররা কোনো ক্ষতিপূরণ পাবেন না। নতুন ব্যাংক পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হবে। তবে সেখানে ওই পাঁচ ব্যাংকের বিনিয়োগকারীদের কোনো শেয়ার থাকবে না। এসব ব্যাংকের শেয়ার নতুন করে ইস্যু করা হবে।
পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ইসলামি ধারার পাঁচ ব্যাংকের বর্তমান অবস্থার জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই। এজন্য দায়ী ব্যাংকগুলোর উদ্যোক্তা ও পরিচালকেরা এবং তারা চিহ্নিত। তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা দরকার বলে তারা মনে করছেন। তারা বলছেন, যেহেতু এখানে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের দায় নেই, তাহলে তাদের শেয়ার কেন বাজেয়াপ্ত করা হবে? এ কারণে পাঁচটি ব্যাংকের একীভূতকরণের ক্ষেত্রে সাধারণ বিনিয়োগকারীর স্বার্থ সংরক্ষণ বিবেচনা করা অত্যন্ত জরুরি। তাদের দাবি, সরকার ব্যাংকগুলোর আমানতকারীদের সুরক্ষার বিষয়টি যেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছে, একই রকমভাবে শেয়ারহোল্ডারদের বিষয়টিও বিবেচনা করা উচিত।
প্রিন্ট করুন







Discussion about this post