নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ৯ জুন জাতীয় সংসদে আসন্ন ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় নিয়ে আগামী বাজেটে জনগণের ওপর নতুন করে কোনো করের বোঝা চাপানো হবে না বলে তিনি আশ্বস্ত করেছেন। গতকাল সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত ও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
জীবনযাত্রার ব্যয় যে বেড়ে গেছে, বিষয়টি তুলে ধরে একজন সাংবাদিক জানতে চেয়েছিলেন, আগামী বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা তিন লাখ টাকা থেকে বাড়ানো হবে কি না। উত্তরে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বাজেট নিয়ে নোট বেজড আলোচনা শুরু করেছি। আইটেমওয়াইজ আলোচনা আরও করতে হবে। এনবিআরের সঙ্গে বসতে হবে, নিজস্ব মন্ত্রণালয়ের বিভাগগুলো সঙ্গে আলোচনা করে বাজেটকে আরও বিস্তারিত করব, আরও সময় লাগবে। দেশের জনগণের কষ্ট বা ভোগান্তি যাতে করে না বাড়ে এবং তাদের ওপরে যেন বোঝা বেশি না বাড়ে সেগুলোর জন্য আমরা কাজ করছি। আশা করছি এগুলো কমবেশি বিবেচনায় নেব।’
গত বছর ৩ জুন জাতীয় সংসদে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য ৬ লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট উত্থাপন করেছিলেন অর্থমন্ত্রী মুস্তফা কামাল। আগামী ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেটের আকার মোটামুটি ৬ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার কাছাকাছি হতে পারে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর এসেছে।
নতুন বাজেট কেমন হবে জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ বছরের বাজেট অন্যান্য বছরের মতো না। এবার আরও ট্রান্সপারেন্ট উপায়ে বাজেট প্রণয়ন করা হচ্ছে। বাজেট কত হবে, খাতওয়ারি বরাদ্দ কত হবে এসব নিউজ পত্রপত্রিকায় আসতে শুরু করেছে। এবার জুন মাসের ৯ তারিখে বাজেট উত্থাপন করা হবে।’
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, ‘আমাদের রপ্তানি বাড়লেও কখনও আমদানিকে ওভারটেক করা যাবে না। আমদানি সব সময় বেশি থাকবে। আমরা পাবলিক ও প্রাইভেট উভয় খাত থেকে আমদানি করি যাতে সাধারণ মানুষের কষ্ট না হয়। আর যদি দামি পণ্য হয় সেগুলো নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অবশ্যই করব।’
বাংলাদেশ ব্যাংক আমদানি নিয়ন্ত্রণের উদ্যোগ নিয়েছে, আরও নিয়ন্ত্রণের চিন্তাভাবনা রয়েছে কি না জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক রকম আমদানি আছে। একটা আমদানি হচ্ছে প্রজেক্টের সঙ্গে সরাসরি রিলেটেড, সেটা আমরা এলাউ করি।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণে সবসময় পদক্ষেপ নেয়া হয়। আমদানি নিয়ন্ত্রণ তো করতেই হবে, এটা তো ওপেন না। যেসব পণ্য জনসাধারণের জন্য লাগবে সেখানে আমরা নিয়ন্ত্রণ করি না। আগে আমদানি হয়নি এখন আমদানি হচ্ছে। যেগুলোর দাম বেড়েছে সেগুলোকে নিয়ন্ত্রণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের এ কাজটি করতে হয়।’
সব জিনিসের দাম সারাবিশ্বে বেড়ে গেছে জানিয়ে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘বিশ্বব্যাংক মার্চ মাসের প্রতিবেদন ছাপিয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী গত ১ বছরে বিশ্বে গমের মূল্য বেড়েছে ৩৮ শতাংশ। গরুর মাংস ৩৫ শতাংশ, মুরগির মাংস ৫৫ শতাংশ, সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে ৩৭ শতাংশ, চিনি ১১ শতাংশ, চা ১৩ শতাংশ, জিএসপি সার ৬৫ শতাংশ এবং ইউরিয়া সারের দাম দাম বেড়েছে ২৩৪ শতাংশ। আমাদেরও উচ্চ দামে এগুলো কিনতে হয়। সেখানে আমাদের সমন্বিত প্রয়াস অব্যাহত রেখে কাজটি করতে হয়।’