এসএমই ডেস্ক: মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই)। দেশটির বেশিরভাগ ব্যবসা এসএমইনির্ভর। মালয়েশিয়ায় ৬৫ শতাংশ চাকরির সুযোগ সৃষ্টি করেছে এসব ব্যবসা। যা জিডিপিতে ৩৬ শতাংশ অবদান রেখেছে। এছাড়া তাদের রফতানি আয়ের প্রায় ১৮ শতাংশ আসে এসএমই খাত থেকে। তাই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়নে ২০১২-২০ মেয়াদে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা রয়েছে মালয়েশিয়া সরকারের। তথ্যগুলো বিশ্বব্যাংকের।
এসএমই বিকাশের মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় অর্থনৈতিক পরিবর্তন শুরু হয় ৯০ দশকে যখন দেশটি পরিণত হয় উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে।
এসএমই খাতকে অর্থনৈতিক মেরুদণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছেন এসএমই করপোরেশন মালয়েশিয়ার প্রধান নির্বাহী দাতো হাফসা হাশিম। এ শিল্পের সামগ্রিক উন্নয়ন সমন্বয়কারী হিসেবে দেখভাল করছেন হাফসা। তার প্রস্তাবিত ২০১২-২০ এসএমই মাস্টারপ্ল্যানকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ‘গেম চেঞ্জার’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
২০২০ সালের মধ্যে এসএমইর ওপর ভর করে জিডিপিতে ৪১ শতাংশ অবদান রাখতে চায় মালয়েশিয়া। এ সময় রফতানি আয় ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ শতাংশে উন্নীত করতে চায় দেশটির সরকার। জিডিপিতে এসএমইর অবদান বাড়লে দেশটি উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হবে বলে মনে করেন বিশ্বব্যাংক গ্রুপের ট্রেড অ্যান্ড কম্পিটিটিভনেস গ্লোবাল প্র্যাকটিসের ঊর্ধ্বতন পরিচালক অ্যানাবেল গঞ্জালেজ। একই সঙ্গে নারী ও তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির ওপরও গুরুত্বারোপ করেছেন তিনি।
তবে হাফসা মনে করেন, ২০২০ সালের মধ্যে এসএমই প্রবৃদ্ধি আট শতাংশে উন্নীত করার লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কঠিন হতে পারে। কেননা দেশটির সামগ্রিক বার্ষিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাড়ছে পাঁচ শতাংশ হারে। তাই বৈশ্বিক পর্যায়ে টিকে থাকতে হলে এসএমই খাতে প্রতিযোগিতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। না হলে অধরা থেকে যাবে সম্পদশালী রাষ্ট্র গড়া এবং সামাজিক সুখ-সমৃদ্ধি বাড়ানো।
এক জরিপে জানা যায়, দেশটির ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের প্রতিষ্ঠানগুলো প্রায় সবই সেবা খাতের। মাত্র সাত শতাংশ উৎপাদন খাতের সঙ্গে জড়িত, কৃষিতে আরও কম।
কেন্দ্রবিন্দুতে উদ্ভাবনীশক্তি
উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির মিশেলে ২০২০ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে চায় মালয়েশিয়ার এসএমই খাত। এ প্রসঙ্গে বলা যায়, এলইডি কেন্দ্রিক ব্যবসার কথা। এ বছর মালয়েশিয়ার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানগুলো ১১৬.৯ মিলিয়ন রিংগিত এলইডি পণ্য বিক্রি করেছে। ২০১২ সালে এ পণ্য বিক্রির পরিমাণ ছিল ৬৫.৬ মিলিয়ন রিংগিত। এলইডির পাশাপাশি মেডিক্যাল ডিভাইস, তেল ও গ্যাস, জাহাজ নির্মাণ ও মেরামতকে এর আওতায় আনার পরিকল্পনা রয়েছে। প্রত্যেকটি খাতের উন্নয়নে ১২ মাসের কর্মপন্থা নির্ধারণ করা হয়েছে।
ব্যবসার প্রতি ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী যুবকদের আগ্রহী করে তুলতে মালয়েশিয়া সরকার ‘টিউব’ প্রোগ্রাম চালু করেছে। তরুণ উদ্যোক্তা তৈরির এ প্রোগ্রামে বুট ক্যাম্প, সেমিনার, কনফারেন্স ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। এর মধ্য দিয়ে নেতৃত্ব, শৃঙ্খলা ও টিমওয়ার্কের পরীক্ষা করা হয়। বুট ক্যাম্পে সফল যুবকরা এক বছরমেয়াদি শিক্ষানবিস ট্রেনিং প্রোগ্রামের জন্য নির্বাচিত হন। আর এ প্রোগ্রামের বিভিন্ন কারিকুলামের মাধ্যমে চাকরিপ্রার্থীর বদলে উদ্যোক্তা তৈরি করে মালয়েশিয়ান সরকার।