প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

ওয়েলস ও কাতারের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ

শেয়ার বিজ ডেস্ক : ওয়েলস ও কাতারের মধ্যে বাণিজ্য সম্প্রসারণ হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও নিবিড় হচ্ছে। সম্প্রতি উভয় দেশের কর্মকর্তারা ভবিষ্যৎ বিনিয়োগের জন্য আলোচনায় অংশ নেন। এতে তারা নিজেদের অনেক ক্ষেত্রে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে। খবর: দ্য পেনিনসুলা কাতার।

ওয়েলসের অর্থমন্ত্রী ভন গেথিং কাতারি শিল্পী ও ওয়েলসের দুই শিল্পীর সহযোগিতায় কাতারা কালচারাল ভিলেজের সড়কে আঁকা একটি ম্যুরাল উšে§াচনের সময় জানান, দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক বাড়ানোর সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করতে গত মে মাসে তিনি পূর্ববর্তী বাণিজ্য-বিষয়ক মিশনে যোগ দিয়েছিলেন। সম্প্রতি বিশ্বকাপ ফুটবল উপলক্ষে কাতারে ভ্রমণ করেন তিনি। এ সময় কাতারের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন গেথিং। তিনি মনে করিয়ে দেন, আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কাজ করতে হবে।

তিনি বলেন, দক্ষিণপূর্ব ওয়েলসের এলএনজি টার্মিনালের দুই-তৃতীয়াংশ কাতারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ টার্মিনাল থেকে যুক্তরাজ্য ২০ শতাংশ প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করে। তাই অবশ্যই এলএনজি খাতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও মজবুত করার সুযোগ রয়েছে। দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্ক শুধু তাদের মধ্যেই নয়, এশিয়া ও ইউরোপের বৃহত্তর অঞ্চলের অর্থনৈতিক সম্পর্কও আরও প্রশস্ত করবে।

দুই দেশের মধ্যে আরও অনেক খাত নিয়ে আলোচনা হবে, যেখানে জ্বালানি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রাধান্য পাবে এবং কাতারের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণে ভূমিকা রাখবে ওয়েলস। ভন গেথিং বলেন, আমরা একসঙ্গে কাজ করার উপায়গুলো বিবেচনা করছি। এজন্য চলতি সপ্তাহে কাতারের অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে প্রযুক্তি, খাদ্য, জ্বালানি, পর্যটন ও কৃষি খাত নিয়ে বৈঠক হবে। এ বৈঠকে অর্থনৈতিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার সুযোগ রয়েছে বলে মনে করেন ভন।

কাতারা কালচারাল ভিলেজের পেইন্টিং সম্পর্কে ভন বলেন, চিত্রে ব্যবহƒত কাতার ও ওয়েলসের প্রাকৃতিক ফুল দুই দেশের মধ্যকার যোগাযোগ ও সম্পর্ককে প্রতিফলিত করেছে। দুই দেশের জাদুঘরগুলো, জাতীয় জাদুঘরগুলো ও গ্যালারিগুলোয় এ চিত্রের প্রদর্শনী হবে। শিল্পকলা বিভিন্ন দেশের ইতিহাস ও ভবিষ্যৎ প্রকাশ করে তিনি বলেন, শিল্পকলার ক্ষেত্রে দুই দেশের আগ্রহ একই ধরনের, যা নিয়ে জনগণ একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করতে পারেন এবং সংস্কৃতির প্রতি সহনশীল হতে পারেন। আমাদের মনে রাখতে হবে, আমরা বিশ্বমঞ্চে একে অপরের প্রতিপক্ষ নই।

প্রসঙ্গত, কাতার ও ওয়েলসের শিল্পীরা বিশ্বকাপ ম্যুরাল এঁকেছেন। এতে তারা এই ম্যাচে অংশ নেয়া দুই ক্ষুদ্রতম দেশের সাংস্কৃতিক যোগাযোগ ফুটিয়ে তুলেছেন। ওয়েলসের দুই সড়কশিল্পী ও কাতারের শিল্পীদের সঙ্গে স্থানীয় যুবকরা মিলে বিশ্বের সবচেয়ে বড় আয়োজন উপলক্ষে এ ম্যুরাল চিত্র এঁকেছেন। কাতারে অনুষ্ঠিতব্য সপ্তম বার্ষিক ইউকে ফেস্টিভ্যালের জন্য এরই মধ্যে দুটি ম্যুরাল তৈরি করা হয়েছে, যার প্রতিপাদ্যÑভালোর জন্য খেলাধুলা।

কাতারের অর্থমন্ত্রী আলি বিন আহমেদ আল কুয়ারি বলেন, আমরা সম্পর্কোন্নয়নে কাজ করে যাব। ওয়েলসের মূল্যবোধকে সম্মান করি আমরা। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের কারণে জ্বালানি, বিশেষ করে প্রাকৃতিক গ্যাস নিয়ে সমস্যায় রয়েছে ওয়েলসও। এ সংকটে আমরা তাদের পাশে রয়েছি।

কাতারের সঙ্গে ওয়েলসের দীর্ঘদিনের কূটনৈতিক সুসম্পর্ক বিদ্যমান। বিভিন্ন সময় ওয়েলসসহ যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা কাতারের সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক সম্প্রসারণ নিয়ে আলোচনা চালিয়েছে। দেশটিতে বিনিয়োগের সুযোগ নিতে আগ্রহী ওয়েলস। কাতারে বাণিজ্যের সব খাতে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিতে চায় দেশটি। ওয়েলস সরকারের জ্যেষ্ঠ খাদ্য ও পানীয় রপ্তানি-বিষয়ক কর্মকর্তা মার্ক হিউ জানিয়েছেন, কাতারের বাজারে নিজেদের উন্নতমানের খাদ্যপণ্য রপ্তানির চেষ্টা চলছে। এজন্য কাতারের রাজধানীর দোহায় এক বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের সঙ্গে ভ্রমণ করেন তিনি। তখন গুণগত মানসম্পন্ন খাদ্য ও নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্য নিয়ে ফলপ্রসূ আলোচনা করেন তিনি। এরপর দোহা ও কার্ডিফের (ওয়েলসের রাজধানী) মধ্যে কাতার এয়ারওয়েজের সরাসরি উড়োজাহাজ চলাচল চালু হওয়ার পর খাদ্যপণ্য রপ্তানির দ্বার খুলে যায়।