প্রতিনিধি, ঝিনাইদহ: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থেকে চুয়াডাঙ্গা পর্যন্ত আঞ্চলিক মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে বেহাল দশা দেখা দিয়েছে। সড়কের বেশির ভাগ অংশের পিচ, পাথর উঠে গিয়ে সুরকি বালি বেরিয়ে গেছে। বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে বর্ষার পানি জমে রয়েছে। বিশেষ করে কালীগঞ্জের বিহারি মোড় থেকে রেলগেট পর্যন্ত সড়ক চলাচলে একে বাইরেই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বৃষ্টির পানিতে গর্তে পানি জমে রয়েছে। আবার এখন কাদাপানির কারণে চলাচলে নাভিশ্বাস পরিস্থিতি জনসাধারণের। এ ছাড়া সড়কের পাশের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ক্রেতা ও বিক্রেতাদের মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
সড়কের বড় বড় গর্তে পানি জমে ডোবায় পরিণত হয়েছে, যান চলাচল বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে ও অনেক বাস-ট্রাক গর্তে পড়ে আটকিয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়া ইজিবাইক, নছিমন ও মোটরসাইকেল প্রায় দিনই উল্টে যাচ্ছে। আবার অনেক সময় সড়কেই যানবাহন অকেজো হয়ে পড়ে থাকে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ওই সড়কে চলাচলকারী যাত্রী ও চালকদের। দিন রাত ২৪ ঘণ্টা যানবাহন চলাচল করে এ সড়কে। কোটচাঁদপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, ঝিনাইদহ, খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানের যানবাহন চলাচল করে এ সড়ক দিয়ে। এমন কোনো যানবাহন নেই যা এ সড়ক দিয়ে চলাচল করে না। সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজর নেই সড়কটির প্রতি। প্রায় এক বছর সড়কের বেশ কিছু পয়েন্ট চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তায় খানাখন্দের কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে অহরহ।
কালীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে কাশিপুর পর্যন্ত সড়কের দু’পাশে রয়েছে নানা ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি। ব্যবসায়ী তপন কুমার জানান, সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। রাস্তার সমস্যার কারণে হাসপাতালে যেতে অসুস্থ রোগীরা আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ে। তিনি বলেন, মহেশপুর, কোটচাঁদপুর, কালীগঞ্জ ও জীবননগর হাসপাতালের রোগী এ রাস্তা দিয়ে আনা-নেয়া করা হয়। সড়কটি কালীগঞ্জ পৌরসভা, ভূমি অফিস, রেলস্টেশন, শিবনগর ফাজিল মাদ্রাসা, শিবনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন গ্রাম এলাকায় যাওয়ার একমাত্র রাস্তা। বর্ষার সময় খানাগর্তে পানিতে ভরা ও শুকনার সময় ধুলাবালির কারণে চলাচলে নাভিশ্বাস পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। কিন্তু কর্তৃপক্ষের কোনো দৃষ্টি নেই।
সিএনজি অটোরিকশা চালকরা বলছেন, চলাচলে অনুপযোগী এ সড়কে গাড়ি চালিয়ে বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে লোকসান গুনতে হয় এবং শারীরিকভাবেও অনেকে ক্ষতিগ্রস্ত হন। একটু বৃষ্টি হলেই এ সড়কে গাড়ি চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটেও চলা দায়। রাস্তা ভেঙে ডোবা হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজর নেই। সড়কটি দ্রুত মেরামতের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি।
স্থানীয়রা জানান, এক বছরের বেশি সময় ধরে মহাসড়কটি বেহাল। ছোটবড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় চলাচল করা কঠিন হয়ে পড়েছে। প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে বাস, ট্রাক, মিনিবাস, পিকআপ, মাহিন্দ্র ইজিবাইক, ইঞ্জিনচালিত ভ্যান, ট্রলি ও মোটর সাইকেলসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বেহাল পরিস্থিতর কারণে প্রায়ই যানজট লেগে থাকে। অনেক গাড়ি বিকল হয়ে সড়কের ওপরে পড়ে থাকে। গাড়ির যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে যান চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে এ সড়ক দিয়ে সব ধরনের যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। সড়কের বিভিন্ন স্থানে কাদামাটিসহ ছোট-বড় অনেক গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ওই সব গর্তে অটোরিকশা, ইজিবাইক, মালবাহী গাড়ি, কিংবা যাত্রীবাহী ছোট ছোট যানবাহন উল্টে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝিনাইদহ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আনোয়ার পারভেজ কিছুদিন আগে জানিয়েছিলেন, অনেক আগেই টেন্ডার হয়েছে। শিগগিরই ঠিকাদার কাজ করবে। কিন্তু দীর্ঘদিন হয়ে গেলেও কোনো কাজ শুরু হয়নি।