প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

কুড়িগ্রামে আলুর আশানুরূপ ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

আমানুর রহমান খোকন, কুড়িগ্রাম : কুড়িগ্রামে আলুর আশানুরূপ ফলনে কৃষকের মুখে হাসি ফুটে উঠেছে। উৎপাদিত আলু ভালো দামে বিক্রি করতে পারলে গতবারের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারবেন কৃষকেরা। তবে এবারে আলু সংরক্ষণের সংকট দেখা দিতে পারে।

জানা গেছে, এবারে কুড়িগ্রাম জেলার ৯ উপজেলায় আলুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে কাটিলাল ২ হাজার ১১০ হেক্টর, ডায়মন ৫৮০ হেক্টর স্টারিক্স কয়জো ১ হাজার ৯১০ হেক্টর, গ্যারানুলা ৬২০ হেক্টর, ক্যারেজ ২৯০ হেক্টর, রোসা গোল্ড ২২৫ হেক্টর, সানসাইন ৬৫ হেক্টর, কুকরী সুন্দরী ৩৭ হেক্টর, কুইনএনি ২৫ হেক্টর, লালপাকড়ী ২৭৫ হেক্টর, পাটনাই ৬৫ হেক্টর, শিলবিলাতী ৬০ হেক্টর ও বগুড়াই ২১০ হেক্টর জমিতে। এবারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয় ৬ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে সর্বমোট ১ লাখ ৫৫ হাজার ২৮০ মে. টন আলু। কুড়িগ্রাম জেলার ৪টি বেসরকারি হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ধারণক্ষমতা ৪৮ হাজার মে. টন। আলুর ফলন অনুযায়ী জেলার উৎপাদিত আলু সংরক্ষণের বাইরে থাকবে দ্বিগুণেরও বেশি। গবেষকদের মতে হিমাগারে সংরক্ষণের পর বাইরে থাকা আলুগুলো চলমান খাদ্যের চাহিদা মিটানোর পাশাপাশি খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতাদের নিজস্ব সনাতন পদ্ধতিতে সংরক্ষণে থাকে।

রাজারহাট চান্দামারী এলাকার কৃষক বেলাল হোসেন বলেন, এবারে প্রায় এক একর জমিতে কাটিলাল আলু চাষ করেছি। কোনো বালাই দেখা না দেয়ায় ফলন ভালো হয়েছে। ১৮০ বস্তা আলু পেয়েছি। প্রতি বস্তায় ৬৫ কেজি করে আলু রয়েছে।

একই এলাকার কৃষক ওয়াহেদ আলী বলেন- ‘আমিও এক একর জমিতে আলু চাষ করে আশানুরূপ ফসল পেয়েছি। দাম ভালো পেলে গত বছরের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে পারব। কুড়িগ্রাম জিয়া বাজারের পাইকারি আলু বিক্রেতা জাহিদ হোসেন বলেন, ‘কাটিলাল আলু ৭০ টাকা ডারি বিক্রি করছি। জোগানের চেয়ে চাহিদা কম হওয়ায় আলুর দাম হালকা যাচ্ছে।’

বাংলাদেশ কোলস্টোরেজ অ্যাসোসিয়েশন, ঢাকার ডায়রেক্টর মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘এবারে জেলায় যে পরিমাণে আলু উৎপাদিত হয়েছে তাতে কৃষক তাদের ঘরে আশানুরূপ ফলন পেয়েছে। কৃষক তাদের উৎপাদিত আলু জেলার বেসরকারি হিমাগারে সংরক্ষণ ও নিজেরাই  সনাতন পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করতে পারলে ভালো দামে বিক্রি করতে পারবে।

সেকেন্দার হিমাগারের স্বত্বাধিকারী সেকেন্দার আলী ও এ. হক হিমাগারের স্বত্বাধিকারী তোফায়েল আহমেদ বলেন, ‘কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত আলু হিমাগারে সংরক্ষণের জন্য নিয়ে আসছেন। কৃষকেরা তাদের আলু সংরক্ষণ করতে পারলে লাভবান হতে পারবে।’

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, এবারে রোগবালাই না থাকায় আলুর আশানুরূপ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। কৃষকের উৎপাদিত আলু যথাযথভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে কৃষকেরা ভালো দামে তা বিক্রি করতে পারবে।

কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, আলুর ফলন ভালো হওয়ায় আমরা এবারে জেলায় আলুর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পেয়েছি। বৈরী আবহাওয়া এবং রোগ বালাই না থাকায় এবারে ফলন ভালো হওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে।