খুলনা প্রতিনিধি: খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) মোংলা মাস্টার প্ল্যানের আওতায় ৩৭৩ বর্গকিলোমিটার এলাকা পরিধি বাড়িয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় পরিধি বাড়ানোর অনুমোদন দিয়ে গেজেট প্রকাশ করেছে। এসব এলাকায় শিল্পপ্রতিষ্ঠান, বাণিজ্যিকপ্রতিষ্ঠান, পাঁচ তারকা হোটেল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান স্থাপনের জন্য বিভিন্ন দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। কেডিএর পরিধি এখন ৮২৪ বর্গকিলোমিটার। ১৯৬১ সালে যাত্রা শুরুর সময় মাস্টার প্ল্যানে পরিধি ছিল ১৮১ বর্গ কিলোমিটার।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, মোংলা মাস্টার প্ল্যানের আওতায় খুলনা-মোংলা মহাসড়কের দুই পাশে অবস্থিত ফকিরহাট উপজেলার লখপুর ইউনিয়ন থেকে মোংলা পোর্ট পৌরসভা পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের জন্য উন্নয়ন প্ল্যান প্যাকেজ প্রস্তুত করা হয়েছে। সমুদ্র বন্দও মোংলা, মোংলা ইপিজেড ও ব্যাপকভিত্তিতে রফতানিমুখী চিংড়ি চাষের কেন্দ্র হিসেবে এলাকাটি দেশের অন্যতম অর্থনীতিক অঞ্চলে রূপান্তরিত হয়েছে। ভবিষ্যতে বহিঃবাণিজ্যের ট্রানজিট রুটের ভূমিকা পালনের সম্ভাবনার আলোকে এ অঞ্চলকে কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালনের সক্ষমতা অর্জনের জন্য এখনই প্রস্তুত করা হয়েছে। ভৌত মহাপরিকল্পনা প্রক্রিয়াবিহীন এ অঞ্চলের পরিকল্পিত বিকাশ নিশ্চিতকরণের জন্য একে উন্নয়ন পরিকল্পনার আওতায় আনার লক্ষে কেডিএ এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
মোংলা মাস্টার প্ল্যানের অন্তর্ভুক্ত এলাকার মধ্যে উত্তরে ফকিরহাট উপজেলার কাটাখালি, দক্ষিণে মোংলাপোর্ট পৌরসভা পর্যন্ত খুলনা-মোংলা মহাসড়কের উভয় পাশ, পশ্চিমে কাজীবাছা নদীর সীমানা, পূর্বে ফকিরহাট উপজেলার নোয়াপাড়া, পিলজং, বড় পাইকপাড়া, দরিরসুলপুর, সৈয়দপুর, হাকিমপুর, রঞ্জিতপুর, গোবিন্দপুর, পিত্যে, খেজুরমহল, কিসমত কুমলাউ, তালবুনিয়া, শ্রীফলতলা, কামরাঙ্গা এবং আড়াজি মাকরতন মৌজা পর্যন্ত। এর ফলে কেডিএ’র নতুন নিয়ন্ত্রণ সীমানা হলোÑউত্তরে যশোরের নওয়াপাড়া পৌরসভা, দক্ষিণে মোংলাপোর্ট পৌরসভা, পূর্বে রূপসা, ফকিরহাট, রামপাল ও মোংলা উপজেলা এবং পশ্চিমে বটিয়াঘাটা উপজেলার কৈয়া বাজার। প্রকল্প এলাকার নদীগুলোর ভেতরে রয়েছে রূপসা, পশুর ও কাজীবাছা।
কেডিএ’র প্রকাশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, বসতি এলাকায় খাবার পানি ও স্বাস্থসেবা খুবই সংকটাপূর্ণ। জন উপযোগী সেবা কার্যক্রম খুবই দুর্বল। কেডিএ’র প্ল্যানিং অফিসার কাজী এনায়েত হোসেন জানান, মোংলা মাস্টারপ্ল্যান এলাকায় গ্রামীণ বসতি, বন্দরসুবিধা, পর্যটন সুবিধা, নগর আবাসিক, বাণিজ্যিক জোন, শিল্প ও কলকারখানা জোন, নোনা পানির মৎস্য চাষ এবং চিত্তবিনোদনের জন্য নানাবিধ সুবিধা থাকবে। বিভিন্ন দফতরের প্রধানকে এসব এলাকায় উন্নয়নের জন্য অবহিত করা হয়েছে। পদ্মা সেতু চলাচলযোগ্য হলে মোংলা ইপিজেড, রফতানিভিত্তিক চিংড়ি চাষ, নেপাল এবং ভুটানের আমদানি ও রফতানি বাণিজ্যের প্রয়োজনে মোংলা বন্দর ব্যবহারের সম্ভাবনা উজ্জ্বল হবে। পদ্মা সেতুর কারণে দেশের কেন্দ্রীয় এলাকার সঙ্গে চট্টগ্রামের তুলনায় মোংলাবন্দরের দূরত্ব ৭০ কিলোমিটার কমবে। এ এলাকার অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতি সঞ্চার হবে।
কেডিএ’র এসিসট্যান্ট টাউন প্ল্যানার আবু সাঈদ জানান, এ পরিকল্পনায় দারিদ্র বিমোচন কৌশল, বাংলাদেশ ভিশন-২০২১, সুন্দরবনভিত্তিক পর্যটন, কন্টেইনার ডিপো, শষ্যসাইলো মোংলা ইপিজেড, ট্রানজিটভিত্তিক লেনদেন এসবই পরিকল্পনা প্রণয়নের নিয়ামক হিসেবে বিবেচ্য হয়েছে। মোংলা বন্দরের জন্য ভারতের হলদিয়া ডক কমপ্লেক্সের খালাস করা তিন লাখ ৪৯ হাজার টিইইউ কন্টেইনারের অংশ এবং নেপাল ভুটানের যথাক্রমে ৪৪ হাজার ৪৮৩ টিইইউ এবং তিন হাজার ৮৫৭ টিইইউ আমদানি রফতানি কন্টেইনার পাওয়ার সম্ভাবনার আলোকে মোংলা বন্দরের অবকাঠামো গড়ে তোলামূলক প্রস্তুতি বিষয়ে করণীয় নির্দেশান সুপারিশ করা হয়েছে।