প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

খুলনায় কারণ ছাড়াই এলপি গ্যাসের দামবৃদ্ধি

মো. মহসিন হোসেন, খুলনা: খুলনায় এলপি গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়েছে সিলিন্ডার প্রতি ৫০ টাকা। একই সঙ্গে সিলিন্ডারের দাম বাড়ানো হয়েছে ৩০০ টাকা করে। আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামাল, লিকুইড তেলের দাম না বাড়লেও কোনো কারণ ছাড়াই গ্যাস ও সিলিন্ডারের দাম বাড়ানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন খুলনার এলপি গ্যাস ব্যবসায়ীরা। নতুন বছরের শুরু থেকে বর্ধিত দামে বিক্রি হচ্ছে গ্যাস। তবে ডিলাররা এর জন্য তদারকির অভাবকে দায়ী করেছেন।

খুলনার বাজারে ১২ কেজি ওজনের গ্যাস ভর্তি সিলিন্ডার বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৯০০ টাকায়, যা এর আগে বিক্রি হতো ৯০০ টাকায়। সিলিন্ডার বিক্রি হতো এক হাজার থেকে এক হাজার ১০০ টাকায়। সে সিলিন্ডারের দাম বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৪০০ টাকা। খুলনায় বিক্রি হয় সাধারণত বসুন্ধরা, যমুনা, ওমেরা, ক্লিনহিট, টোটাল ও সেনা কল্যাণ সংস্থার গ্যাস। এর মধ্যে বসুন্ধরা, যমুনা ও ওমেরা কোম্পানি দাম বাড়িয়েছে। তবে ডিলাররা বলছেন এদের দেখাদেখি অন্য কোম্পানিও এবার দাম বাড়াবে। ফলে দুর্ভোগে পড়বে জনগণ। সূত্রটি আরও জানিয়েছে, এখন সিলিন্ডার প্রতি পরিবেশকগণ লাভ করে দুই থেকে আড়াইশ’ টাকা। অথচ বেশি লাভের আশায় আবারও বাড়ানো হয়েছে দাম।

দাম বাড়ার বিষয়ে খুলনা এলপি গ্যাস ডিলার সমিতির সভাপতি শেখ তোবারেক হোসেন তপু বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে সব কিছুর মূল্য স্থিতিশীল। বরং গ্যাসের কাঁচামাল, লিকুইড পেট্রল ও জ্বালানি তেলের দাম কমতির দিকে। সেখানে কোনো কারণ ছাড়াই দেশের কোম্পানিগুলোর দাম বাড়ানো অন্যায় এবং অযৌক্তিক।

জানা গেছে, খুলনায় বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) থেকে সরবরাহ করা গ্যাসের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় বেসরকারি কোম্পানিগুলো নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়াচ্ছে। খুলনায় বর্তমানে প্রায় এক লাখ গ্রাহক এলপি গ্যাস ব্যবহার করেন। সে তুলনায় বিপিসি সরবরাহ করে মাত্র সাড়ে ৭০০ সিলন্ডার গ্যাস। ফলে বিপুলসংখ্যক মানুষকে নির্ভর করতে হয় বেসরকারি কোম্পানির গ্যাসের ওপর। গ্যাসের এ দাম বাড়ার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে জীবনযাত্রায়। গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।

খুলনার ১৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা শারমিন জাহান বলেন, গত মাসেও গ্যাস কিনেছি ৯০০ টাকা করে। এ মাসে সে গ্যাসের দাম এখন সাড়ে ৯০০ টাকা। কি কারণে বাড়লো জানি না।

মামুন আকন নামে এক গ্রাহক বলেন, সরকারি গ্যাস সিলিন্ডারে দাম কম। কিন্তু সেটা সবাই পায় না। বেসরকারি কোম্পানিগুলোর ওপর সরকারের নজর রাখা উচিত। তারা ইচ্ছেমতো দাম বাড়ায়।

জানুয়ারি থেকে সিলিন্ডার প্রতি ৫০ টাকা বাড়ার বিষয়টি স্বীকার করে মাহিয়া এন্টারপ্রাইজের মালিক মাসুম বিল্লাহ বলেন, আমরা খুচরা পর্যায়ে গ্যাস বিক্রি করি। কোম্পানি যখন যে দামে দেয় আমরা সে রকমই বিক্রি করি। এতে আমাদের কোনো হাত নেই।

বিস্ফোরক অধিদফতর গ্যাস বিক্রির লাইসেন্স দেয়, তারা দাম নিয়ন্ত্রণ করে না বলে জানান খুলনা বিভাগের সহকারি বিস্ফোরক পরিদর্শক ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। কারা মূল্য নিয়ন্ত্রণ করে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা আমার জানা নেই। আমরা শুধু মজুদ দেখি আর লাইসেন্স দেই।