সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: ডলার সংকটের মধ্যে চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে মোট সাত হাজার ৬১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা গম আমদানি হয়। দেশের বড় পাঁচটি প্রতিষ্ঠান গম আমদানিতে ব্যয় করে ছয় হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে চট্টগ্রামভিত্তিক শিল্প গ্রুপ এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন সোনালী ট্রেডার্স আমদানি করে দুই হাজার ৪৯ কোটি টাকার পণ্য। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সরকারি খাদ্য বিভাগ। তাদের আমদানি ব্যয় ছিল এক হাজার ৬৪২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, দেশের বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও সরকারি প্রতিষ্ঠান চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে দেশে মোট সাত হাজার ৬১৩ কোটি ১২ লাখ টাকা গম আমদানি হয়। দেশের বড় পাঁচটি প্রতিষ্ঠান গম আমদানিতে ব্যয় করে ছয় হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে সোনালী ট্রেডার্স আমদানি করে দুই হাজার ৪৯ কোটি টাকার পণ্য। এতে শীর্ষ আমদানিকারক হিসাবে এস আলম গ্রুপের নাম ওঠে আসে। এরপর দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল সরকারি খাদ্য বিভাগ। তাদের আমদানি ব্যয় ছিল এক হাজার ৬৪২ কোটি ৪৩ লাখ টাকা। এরপর মেঘনা গ্রুপের সোনারগাঁও ফ্লাওয়ার অ্যান্ড ডাল মিলস লিমিটেড। তাদের আমদানি ব্যয় ছিল এক হাজার ১৭১ কোটি ৪২ লাখ টাকা। এ ছাড়া চতুর্থ অবস্থানে ছিল সিটি গ্রুপের শম্পা ফ্লাওয়ার মিলস লিমিটেড। তাদের আমদানি ব্যয় ছিল ৯৯৬ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। আর পঞ্চম অবস্থানে ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের বসুন্ধরা ফুড অ্যান্ড বেভারেজ। প্রতিষ্ঠানটির আমদানি ব্যয় ছিল ৬২০ কোটি ২০ লাখ টাকা। বাকি প্রতিষ্ঠানগুলোর আমদানি ব্যয় হয়েছিল এক হাজার ১৩৩ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
জানা যায়, চালের পর বাংলাদেশের দ্বিতীয় প্রধান খাদ্যশস্য গম। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের হিসাবে, ২০২১-২২ অর্থবছরে ৬২ লাখ টন গম আমদানি হয়। সেই হিসাবে চাহিদা মেটাতে প্রতি মাসে গড়ে ৫ লাখ ১৬ হাজার টন গম আমদানি করতে হয়।
খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বার্ষিক গড় গম উৎপাদনের পরিমাণ প্রায় ১০ লাখ (১ মিলিয়ন) টন এবং বার্ষিক চাহিদার পরিমাণ ৭৫ লাখ টন। গমের বাকি চাহিদা আমদানির মাধ্যমে মেটানো হয়, যার ৬২ শতাংশ আসে রাশিয়া, ইউক্রেন এবং ভারত থেকে। আর চলতি সপ্তাহে বিশ্ববাজারের প্রতি টন গম ৩১১ ডলারের বুকিং হচ্ছে, যা গত দশ মাসের সর্বোচ্চ ৪৫৭ ডলার ওঠেছিল। আর যুদ্ধের কারণে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে গম আমদানি হচ্ছে। এর বিকল্প হিসেবে ভারত, মিসর, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া থেকে গম আমদানি হচ্ছে।
একটি বড় গম আমদানিকারক ও বৃহৎ শিল্পগ্রুপের চেয়ারম্যান শেয়ার বিজকে বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ছে। যদি এখন আন্তর্জাতিক বাজারের পণ্যের দাম কিছুটা কমেছে। মূলত আমাদের ডলার সংকটের কারণে দেশের বাজারের দাম বাড়ছে। এর মধ্যে আইএমএফসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার ঋণ সহযোগিতা এলে তখন ডলার সরবরাহ বাড়বে। তখন এলসি স্বাভাবিক হয়ে যাবে।