প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

গাইবান্ধায় চালু হয়নি গভীর নলকূপ বোরো আবাদ কমার শঙ্কা

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: গাইবান্ধার সাদুল্যাপুর উপজেলায় বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় স্থাপন করা ছয়টি গভীর নলকূপ দুবছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। ফলে দুবছর ধরে সেচ সুবিধা থেকে বঞ্চিত ১২০০ বিঘা জমি। বিদ্যুৎ সংযোগ না মেলায় আসন্ন বোরো মৌসুমে সেচ নিয়ে অনিশ্চয়তা ও দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক। খবর বাংলা ট্রিবিউন।

সাদুল্যাপুর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের আওতায় ২০১১ সালের প্রথমে সাদুল্যাপুর উপজেলার ধাপেরহাট ইউনিয়নের ছাইগাড়ী, গোবিন্দপুর, সদরপাড়া, হিংগারপাড়া, ছোটছত্রগাছা ও আরাজি ছত্রগাছা গ্রামে ছয়টি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। স্বল্পমূল্যে সেচ সুবিধার জন্য ১০০ থেকে ২০০ কৃষককে নিয়ে সমিতির আওতায় একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়।

ছাইগাড়ী গ্রামের গভীর নলকূপের মালিক মাসুদুর রহমান মাসুদ রানা জানান, ২০১১ সালের ৩ জুলাই বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য অগ্রণী ব্যাংক সাদুল্যাপুর শাখায় জামানতের টাকা জমা দেওয়া হয়। প্রতি সংযোগের জন্য এক লাখ টাকা হিসেবে ছয়টি গভীর নলকূপের জন্য ছয় লাখ টাকা জমা দেওয়া হয়। ওই মাসেই গভীর নলকূপ মালিকরা বিদ্যুৎ সংযোগের জন্য রংপুরের শঠিবাড়ির পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি কার্যালয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন জমা দেন।

তিনি আরও জানান, ২০১৪ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর গভীর নলকূপ স্থাপনে পাইপ স্থাপন, ঘর ও নর্দমা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। ২০১৫ সালের জুন মাসে এসব নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। ইতোমধ্যে নলকূপের ঘর পর্যন্ত পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি, লাইন ও ট্রান্সমিটার বসানো হয়েছে। কিন্তু ট্রান্সমিটার স্থাপনের দুবছর পার হলেও অজ্ঞাত কারণে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়নি। এছাড়া বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা দেওয়া প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের ফাইল খুঁজে না পাওয়ায় এ পর্যন্ত তিনবার কাগজপত্র জমা দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

সদরপাড়ার নলকূপ মালিক মহসিন আলী মণ্ডল জানান, বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে এসব এলাকার কৃষক শ্যালোইঞ্জিন চালিত মেশিন দিয়ে জমিতে ইরি মৌসুমের আবাদ করছেন। এতে কৃষকের খরচ বেশি হয়। তাই কৃষককে স্বল্পমূল্যে সেচ সুবিধা দিতে সমিতির মাধ্যমে গভীর নলকূপগুলো স্থাপন করা হয়। কিন্তু সংযোগের আশায় বার বার বিদ্যুৎ বিভাগ ও বরেন্দ্র কর্তৃপক্ষকে তাগাদা দিলেও দুবছরেও সংযোগ মেলেনি।

ছাইগাড়ী গোবিন্দপুর এলাকার কৃষক রাজু মিয়া, রাজা মিয়া ও লাল মিয়া জানান, রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং রবেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের গাফিলতি ও উদাসীনতায় ১২০০ বিঘা জমির ছয় শতাধিক কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তারা এ বছর বোরো মৌসুম শুরুর আগে গভীর নলকূপগুলোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার দাবি জানান। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ সাদুল্যাপুর সাব-জোনাল অফিসের এজিএম সামছুল হক জানান, গভীর নলকূপগুলোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দ্রুত এসব নলকূপে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। সাদুল্যাপুর উপজেলার রবেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কার্যালয়ের সহকারী প্রকৌশলী আলী হোসেন উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সমিতির মাধ্যমে এলাকায় গভীর নলকূপ স্থাপনসহ সব কাজ করার কথা। আর বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুৎ বিভাগকে লিখিত সুপারিশ করা হয়েছে। কিন্তু কেন নলকূপগুলোয় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না, তা বোধগম্য নয়।