দেশের প্রথম কাচ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান উসমানিয়া গ্লাস শিট ফ্যাক্টরি লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে না পারায় বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে আছে। অথচ প্রতিষ্ঠানটির ছয় দশকের গৌরবের ইতিহাস রয়েছে। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনায় নীতিনির্ধারকদের উদাসীনতা, অদক্ষ ব্যবস্থাপনা, সমস্যা ও সংকট নিয়ে তিন পর্বের আয়োজনে আজ প্রকাশিত হলো দ্বিতীয় পর্ব
সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: দেশে বার্ষিক কাচের চাহিদা ২৫ কোটি বর্গফুট। আর সবগুলো গ্লাস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের সক্ষমতা রয়েছে ৩২ কোটি বর্গফুট। যদিও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর আধুনিক মেশিনগুলোয় খরচ কম, উৎপাদন বেশি। তাই তারা লাভে থাকে। অপরদিকে উসমানিয়া গ্লাস শিটের মেশিনগুলো অনেক পুরোনো। আর পুরোনো প্রযুক্তি ও জরাজীর্ণ পুরোনো যন্ত্রপাতি দ্বারা শুধু সাদা রঙের গ্লাস শিট উৎপাদন করে উসমানিয়া। এর মধ্যে তিন বছর ধরে বন্ধ আছে এক নম্বর ফার্নেস। আর ডুবে যাওয়া ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে প্রায় এক বছর বন্ধ থাকা দুই নম্বর মেশিনটি (ইউনিট) কয়েক মাস আগে চালু হয়েছে। ফলে গত ২০২০-২১ অর্থবছরের গ্লাস উৎপাদন করতে পারেনি। এছাড়া করোনার প্রভাবে কাচ বিক্রয় বন্ধ হয়ে যায়। এছাড়া বর্তমানে অর্থনৈতিক মন্দার কারণে কাচের চাহিদা কম থাকায় মজুত পণ্য বেড়েছে ৯ লাখ বর্গফুট। যদিও কোম্পানিটিতে মজুত পণ্য রাখার সক্ষমতা আছে এক লাখ বর্গফুট। আর সক্ষমতার ৯ গুণ মজুত পণ্য নিয়ে বিপাকে উসমানিয়া গ্লাস শিট। এতে পণ্যের মান নি¤œমানের হলেও উৎপাদনে ব্যয় বেশি। ফলে প্রতিযোগী কোম্পানিগুলো প্রতিনিয়ত মূল্য কমানোর প্রতিযোগিতায় থাকার কারণে কয়েক বছর ধরে লোকসানে পড়ে প্রতিষ্ঠানটি। বিক্রয় কম, চাহিদা কম এবং মজুত বেড়ে যাওয়ায় কোম্পানিটির উৎপাদন সক্ষমতার ৪০ শতাংশও ব্যবহার করতে পারছে না।
প্রতিষ্ঠানটির প্রকাশিত ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম প্রান্ত্রিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২২-২৩ অর্থবছরের মোট বিক্রয় ছিল ৮ কোটি ১২ লাখ টাকা। কিন্তু বিক্রিত পণ্যের ব্যয়, বিক্রয়-বিপণন ব্যয়, প্রশাসনিক ব্যয়সহ সব ধরনের খরচ নির্বাহ করার পর নিট লোকসান হয়েছে প্রায় ৫০ হাজার টাকা। এতে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ২৮ পয়সা। এ কারণে প্রতিষ্ঠানটির পুঞ্জীভূত লোকসান দাঁড়িয়েছে ৬৪ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। অপরদিকে মজুত স্থিতি হয়েছে ৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা। এদিকে গত অর্থবছরের শেয়ারহোল্ডারদের কোনো লভ্যাংশ দিতে পারেনি। এ নিয়ে টানা চার বছর কোনো লভ্যাংশ দেয়নি প্রতিষ্ঠানটি।