নিজস্ব প্রতিবেদক: নতুন পণ্য উৎপাদনের জন্য ইউনিট স্থাপনের মাধ্যমে উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে তালিকাভুক্ত প্রকৌশল খাতের কোম্পানি কেডিএস অ্যাকসেসরিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। কোম্পানিটি হ্যাঙ্গার উৎপাদনের জন্য গাজীপুরে ইউনিট স্থাপন করবে। একই সঙ্গে কোম্পানিটি বাটন উৎপাদনও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ছয় কোটি টাকার সম্প্রসারণ প্রকল্প অনুমোদন করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রমতে, মোট ছয় কোটি ১৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার এ সম্প্রসারণ প্রকল্পে অর্থসংস্থানের জন্য বিদেশি সাপ্লায়ার্স ক্রেডিট, ব্যাংকঋণ ও কোম্পানির নিজস্ব তহবিল থেকে অর্থ নেওয়া হবে। যন্ত্রপাতি আনা হবে ইউরোপ ও চীন থেকে। ছয় মাসের মধ্যেই নতুন প্রকল্পে উৎপাদন শুরুর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কোম্পানি। কর্মকর্তাদের আশা, বর্ধিত উৎপাদন সক্ষমতার সদ্ব্যবহার করা গেলে কোম্পানির বার্ষিক বিক্রি ২৫ কোটি টাকা বাড়বে, যার ইতিবাচক প্রভাব দেখা যাবে মুনাফায়।
জানা যায়, আইপিও-পরবর্তী সম্প্রসারণের পরও উৎপাদন সক্ষমতা বাড়ানোর প্রয়োজন ও সুযোগ দেখছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ। এর অংশ হিসেবে চট্টগ্রামের পাশাপাশি ঢাকা অঞ্চলেও হ্যাঙ্গার তৈরি শুরু করবে তারা। এজন্য গাজীপুরে একটি নতুন হ্যাঙ্গার ম্যানুফ্যাকচারিং ইউনিট করা হবে। পাশাপাশি চাহিদা বাড়তে থাকায় একই স্থানে বোতাম উৎপাদনের সক্ষমতাও বাড়ানো হবে।
উল্লেখ্য, প্রকৌশল খাতের কোম্পানিটি ২০১৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত সমাপ্ত ১৮ মাসের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য পাঁচ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে চার টাকা এবং শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) হয়েছে ২৪ টাকা ৯৯ পয়সা। ওই সময় কর-পরবর্তী আয় ছিল ১৮ কোটি ৫৮ লাখ টাকা। ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত প্রথম ছয় মাসে ইপিএস ছিল এক টাকা ১৭ পয়সা।
২০১৪ সালের সমাপ্ত বছরে কোম্পানিটি ইপিএস হয়েছিল দুই টাকা ২২ পয়সা এবং এনএভি ২১ টাকা ৮৫ পয়সা। আগের বছরের একই সময়ে যার পরিমাণ ছিল যথাক্রমে দুই টাকা ১৫ পয়সা ও ১৯ টাকা ৬৩ পয়সা। ওই বছর কোম্পানিটি কর-পরবর্তী মুনাফা করেছিল আট কোটি ৮৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা, যা আগের বছরে ছিল আট কোটি ৫৮ লাখ ৭০ হাজার টাকা।
সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদন ও বাজারদরের ভিত্তিতে শেয়ারের মূল্য আয় (পিই) অনুপাত ২২ দশমিক ৭৩ শতাংশ এবং হালনাগাদ অনিরীক্ষিত ইপিএসের ভিত্তিতে ৫৮ দশমিক ২৭ শতাংশ। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ৫৭ কোটি ২০ লাখ টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৬০ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। কোম্পানিটির অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় দেখা যায়, চলতি হিসাববছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইপিএস হয়েছে ৩৯ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ৩৪ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে পাঁচ পয়সা। ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ পর্যন্ত এনএভি দাঁড়িয়েছে ২২ টাকা ৬৫ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল ২৪ টাকা ৯৯ পয়সা।
গতকাল কোম্পানির শেয়ারদর আগের কার্যদিবসের চেয়ে দুই দশমিক ৩৬ শতাংশ বা দুই টাকা ২০ পয়সা কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ৯০ টাকা ৯০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল ৯০ টাকা ৯০ পয়সা। দিনজুড়ে শেয়ারদর ৮৭ টাকা থেকে ৯৭ টাকা ৪০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। ওইদিন কোম্পানির ছয় লাখ ১৮ হাজার ৩৫৮টি শেয়ার মোট ৮৫২ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর পাঁচ কোটি ৮৪ লাখ ১৬ হাজার টাকা। গত এক বছরে শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৫২ টাকা ৬০ পয়সা থেকে ৯৭ টাকা ৪০ পয়সায় হাতবদল হয়।
কোম্পানিটির মোট পাঁচ কোটি ৭২ লাখ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৭৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে আট দশমিক ৫৭ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে রয়েছে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ শেয়ার।