আশিকুল ইসলাম, জবি : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্য সংগঠন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রঙ্গভূমি আয়োজিত তৃতীয় বার্ষিক নাট্যোৎসব ও নাট্য সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান ২০২২ সম্পন্ন হয়েছে। সোমবার (২১ নভেম্বর) নাট্য সম্মাননা প্রদানের মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুইদিনব্যাপী আয়োজিত এ উৎসব।
জবি রঙ্গভূমির সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান খানের সঞ্চালনায় নাট্যোৎসবে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ ইমদাদুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কোষাধ্যক্ষ ড. কামালউদ্দীন আহমদ, জবি রঙ্গভূমির উপদেষ্টা ও নাট্যকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ কামালউদ্দিন খান কবির, চারুকলা বিভাগের চেয়ারম্যান ড. বজলুর রশিদ খান। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ, নাট্যকলা বিভাগের প্রভাষক ও জবি রঙ্গভূমির মডারেটর রুবাইয়া জাবীন প্রিয়তা। নাট্যোৎসবের শেষদিনে নাট্য সম্মাননা প্রদান করা হয় একুশে পদকে ভূষিত প্রখ্যাত নাট্যকার, অভিনেতা ও পরিচালক মামুনুর রশীদ কে।

এসময় তিনি বলেন, মানুষের জীবনের যেকোনো সংকটকালে সে কী করবে মানুষকে এ বোধ এনে দেয় তার সাংস্কৃতিক চেতনা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে নাট্যকলা বিভাগ আছে কিন্তু সেখান থেকে ছাত্রছাত্রীরা মেইনস্ট্রিমে এসে কাজ করছেনা, তাহলে এসব বিভাগ থেকে আমাদের কী লাভ হবে?
তিনি আরও বলেন, পাশের দেশের কলকাতায় সাংস্কৃতিক কর্মীদের জন্য সরকারের তরফ থেকে ভাতার ব্যবস্থা করা হয় সেরকম আমাদের দেশেও যদি ভাতা বা প্রনোদনার ব্যবস্থা করা হয় তাহলে শিক্ষার্থীরা উৎসাহিত হবে। আর যারা পেশাগত নাট্যকর্মী আছে তাদেরও বাঁচিয়ে রাখা যেত।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, পূর্বে পুরান ঢাকার ওয়াইজঘাট, ফরাশগঞ্জের লালকুঠি এসব জায়গায় নাটকের মঞ্চায়ন হতো। কিন্তু এখন আর এসব চর্চা হয়না। এক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় এখন পুরান ঢাকার সাংস্কৃতিক কার্যক্রমের কেন্দ্র হচ্ছে। আমি আশা করবো এধরনের প্রযোজনা চলমান থাকবে। কারণ, যত ধরনের অশুভ শক্তি আছে এসবকে দূরীভূত করতে এধরণের প্রযোজনা চালিয়ে যেতে হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মোঃ ইমদাদুল হক বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট্ট এ পরিসরেও শিক্ষা, গবেষণার পাশাপাশি আমরা চাই সাংস্কৃতিক কার্যক্রমও যেন এগিয়ে যায়। এতে শিক্ষার্থীরা সারাবছর লেখাপড়ার পাশাপাশি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম এ ব্যস্ত থাকবে কারণ এধরণের কার্যক্রম তাদেরকে সকল অস্থিরতা, মাদকাসক্তি এসব থেকে দূরে রাখবে। এক্ষেত্রে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন থেকে কার্পণ্য করবো না এবং সাংস্কৃতিক কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে সকল প্রকার সহায়তা আমরা করবো।
এর আগে রবিবার (২০ নভেম্বর) এ নাট্যোৎসবের উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ড. কামালউদ্দীন আহম্মদ। উদ্বোধনী দিন প্রদর্শিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নাট্য সংসদ প্রযোজিত শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের ছোটগল্প অবলম্বে নির্মিত নাটক “বিলাসী”এবং সেলিম আল দীন রচিত “কিত্তনখোলার কিচ্ছা”। আর সোমবার প্রদর্শিত হয় বাতিঘর প্রযোজিত “রেডক্লিফ লাইন” এবং বিপ্লবী কমান্ডার চে গুয়েভারার জীবনকে ঘিরে নির্মিত নাটক “সাইকেল”।
আয়োজিত নাট্যোৎসব নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রঙ্গভূমির সভাপতি মাসফিকুল হাসান টনি বলেন, আমরা সবসময় ই চাই আমাদের কাজের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সুনাম অর্জন করতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক অঙ্গন কে শক্তিশালী করতে।এই ধারাবাহিকতায় আমরা ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক নাট্যোৎসব আয়োজন করতে পারবো বলে আমি বিশ্বাস করি। তবে মহড়া কক্ষ ও দপ্তর না থাকায় অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের কার্যক্রম চালানো কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। আশা করি প্রশাসন এ বিষয়গুলোতে আমাদের সহযোগিতা করলে আগামীতে আরো ভালো আয়োজন করা সম্ভব হবে।