এনামুল হক নাবিদ, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রামে অঞ্চলে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় কর্ণফুলী সংযুক্তি খালের মধ্যে ঢুকে পড়েছে লবণাক্ত পানি। যার ফলে লবণের বিষে মরতে বসেছে আনোয়ারা উপজেলায় আবাদ হওয়া ৫ হাজার ৯৮০ হেক্টর বোরো চাষ। এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে আকাশ মেঘলা হলেও রোববার থেকে টানা তিন দিন পড়েছে স্বস্তির বৃষ্টি। মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি না হলেও এ অল্প বৃষ্টি ফসলের মাঠে ফিরে পেয়েছে প্রাণ। কৃষি কর্মকর্তা ও কৃষকরা মনে করছেন এই বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে কাটবে লবণের বিষ। দেখা যায়, গত তিন দিন বৃষ্টির কারণে বোরো আবাদ ছাড়াও উপজেলার তরমুজ, মরিচসহ বিভিন্ন সবজিতে ফিরেছে সজীবতা। বৃদ্ধি পাবে ফসল উৎপাদন। দীর্ঘ সময় বৃষ্টির অপেক্ষায় থাকা স্থানীয় কৃষকদের মুখে ফুটেছে স্বস্তির হাসি।
স্থানীয়রা কৃষকরা জানায়, চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় বোরো রোপণ সম্পন্ন হয়েছে গত মাঘ মাসের শেষের দিকে। উপজেলায় বোরো আবাদ সেচের পানির ওপর নির্ভরশীল। স্বাভাবিক বোরো রোপণ সেচের পানিতে হলেও ফাল্গুনে দেখা মেলে বৃষ্টির। তবে এবার বোরো আবাদের পর থেকে দীর্ঘ সময় বৃষ্টি না হওয়ায় খালে এসেছে লবণাক্ত পানি। যার ফলে এ লবণাক্ত পানির কারণে বিভিন্ন এলাকায় মরে যাচ্ছে বোরো ধান। বৃষ্টি ছাড়া লবণাক্ত পানির আর কোনো বিকল্প নেই বলে মনে করছেন তারা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারায় চাষাবাদের আওতায় রয়েছে ৮ হাজার হেক্টর। তার মধ্যে এবারের বোরোতে আবাদ হয়েছে ৫ হাজার ৯৮০ হেক্টর জমি। বৃষ্টির আগে দেখা গিয়েছিল, উপজেলার হাইলধর, বারখাইন, জুঁইদণ্ডি, রায়পুর এলাকায় লবণাক্ত পানির কারণে বোরোধান মরে যাচ্ছিল। সেচ দেয়ার খালগুলোর লবণের পানিতে ভরে গেছে। বিশেষ করে কর্ণফুলী সংযুক্তি মুরালী খাল দিয়ে সাঙ্গু নদীতে ঢুকে পড়েছে লবণাক্ত পানি। এর মধ্যে বিভিন্ন ইউনিয়নে বিপুল পরিমাণ বোরো ধান সেচের পানির অভাবে ফেটে চৌচির হয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু এলাকায় কৃষকরা বাধ্য হয়ে জমিতে লবণ পানির সেচ সুবিধা দিয়ে পড়েছিলেন বিপাকে। তাদের বেশির ভাগ বোরো ধানক্ষেত লবণপানির কারণে মরে যাচ্ছে। ফসল বাঁচাতে কৃষকরা বাধ্য হয়ে এসব লবণাক্ত পানি দিয়ে উল্টো ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে শত শত কৃষক। এদিকে গত তিন দিনের বৃষ্টি লবণাক্ত পানি কেটে উঠবে বলে মনে করছেন কৃষিবিদরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রমজান আলী বলেন, আমরা হাইড্রোলিক ড্যামের মাধ্যমে লবণের পানি বের করে খালে নতুন পানি ঢুকিয়েছি। বৃষ্টিটা খুব দরকার ছিল এ সময়। এর মধ্য অনুপাতিক হারে বৃষ্টি কম হলেও বৃষ্টিটা ফসলের জন্য খুব উপকার হবে। বৃষ্টি যেহেতু হয়েছে তাহলে সামনে আরও হবে। আশা করা যায়, লবণের ক্ষতিটা কেটে উঠবে।