নিজস্ব প্রতিবেদক: ডলার সংকট মোকাবিলায় শুধু আমদানি নিয়ন্ত্রণ করে সমাধান করা যাবে না। রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়ের ওপর জোর দিতে হবে। তাহলে এ সংকট কেটে যাবে। গতকাল বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সিরাজুল ইসলাম শেষ কর্মদিবসে সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
সিরাজুল ইসলাম বলেন, মুদ্রাবাজারের অস্থিরতা শুধু বাংলাদেশ নয়। এটা বৈশ্বিক সংকট। এ সংকট কাটিয়ে উঠতে হলে বাংলাদেশকে প্রবাসী আয় ও রপ্তানি বাড়াতে হবে। এছাড়া বিশ্ববাজারে বাংলাদেশকে ব্যান্ড হিসেবে তুলে ধরতে হবে। তাহলে এ সংকট কেটে যাবে। তিনি আরও বলেন, দেশে রেমিট্যান্স কিছুটা কমছে। পাশাপাশি রপ্তানি আয়ের পরিমাণও কমছে। এতে রিজার্ভে কিছুটা চাপ তৈরি হয়েছে। তবে এই চাপ থাকবে না, কারণ রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় দুটোই বাড়বে।
ডলারের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে এই কর্মকর্তা বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে ডলারের দাম স্বাভাবিক হচ্ছে। এছাড়া এবিবি ও বাফেদাও ভূমিকা রাখছে, যার ফলে বর্তমানে বাজার ভিত্তিতে ডলার মার্কেট চলে। এতে করে ডলারের কিছুটা অস্থিরতা কমেছে।
রিজার্ভ কমার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রিজার্ভ কমেছে ডলার বিক্রিতে এটা সত্য, কিন্তু রিজার্ভ তো বিভিন্ন কাজে লাগাতে হবে। এটা বাড়বে কমবে স্বাভাবিক। এক জায়গায় যে রিজার্ভ স্ট্যাবেল রাখতে হবে, এমনও নয়। তিনি বলেন, রিজার্ভ থেকে ইডিএফ ফান্ডে যে ঋণ দেয়া হয়েছে, তার উদ্দেশ্য ঠিক ছিল। এটার টাকা নিয়ে যদি কেউ ফেরত না দেয়, সে ক্ষেত্রেও বাংলাদেশ ব্যাংক ব্যবস্থা নেবে।
উল্লেখ্য, সেপ্টেম্বরে রপ্তানি ও রেমিট্যান্স দুটোই কমেছে। সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা দেশে রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন ১৫৩ কোটি ৯৪ লাখ ডলার, যা গত বছরের একই সময় থেকে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ কম। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে প্রবাসীরা ১৭২ কোটি ৬৭ লাখ ডলার পাঠিয়েছেন। এছাড়া গত সেপ্টেম্বরে প্রবাসীদের পাঠানো আয় সাত মাসের মধ্যে সর্বনি¤œ। চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইতে প্রবাসীরা ২০৩ কোটি ডলার এবং আগস্ট মাসে ২০৯ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা।
এছাড়া টানা ১৩ মাস ইতিবাচক প্রবৃদ্ধির পর দেশের রপ্তানি কমেছে। গত সেপ্টেম্বরে ৩৯০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৬ দশমিক ২৫ শতাংশ কম। অবশ্য সার্বিকভাবে চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসের রপ্তানি ইতিবাচক ধারাতেই আছে। অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে ১৩ দশমিক ৩৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি রয়েছে। এ সময়ে এক হাজার ২৪৯ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত বছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি হয়েছিল এক হাজার ১০২ কোটি ডলারের পণ্য।