এখন আম-জাম-কাঁঠালসহ মৌসুমি ফলের সময়। ডায়াবেটিস থাকলে এসব ফল খেতে পরিমিতিবোধ আবশ্যক। গ্রীষ্মের মজাদার ফলগুলো কীভাবে ডায়াবেটিস রোগীরা খাবেন, তা জানা গুরুত্বপূর্ণ।
কাঁঠাল: জাতীয় ফল কাঁঠাল, কিন্তু খুবই পুষ্টিমানসম্পন্ন। এর কোনো কিছুই ফেলনা নয়। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন ও খনিজ। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে ৩০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য এটি উপকারী। ডায়াবেটিসের রোগীরা এক দিনে ৫০ গ্রাম কাঁঠাল, মানে তিন কোয়া কাঁঠাল খেতে পারবেন।
আম: সুস্বাদু রসে ভরা পুষ্টিকর ফল আম। কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থায়ই খাওয়া যায়। যারা ওজন কমাতে চান তারা এবং উচ্চ রক্তচাপের ডায়াবেটিসের রোগীরা কাঁচা আম বা কাঁচা আমের জুস খেতে পারবেন। পাকা আমে থাকে প্রচুর ভিটামিন এ, বি এবং সি। এতে আরও থাকে প্রচুর আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ত্বকের জন্য খুব উপকারী আমের ভিটামিন। তবে এতে শর্করাও প্রচুর বলে ডায়াবেটিসের রোগীদের হিসাব করে খেতে হবে। প্রতিদিন মাঝারি সাইজের, অর্থাৎ ৩০-৫০ গ্রাম পরিমাণ আম খেতে পারবেন তারা। ১০০ গ্রাম আমে তিন গ্রাম আঁশ থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, কোলেস্টেরলও কমায় আম।
আনারস: আনারসে ‘ব্রোমেলিন’ এনজাইম থাকে বলে এটি হজমে সহায়ক। এর প্রোটিন মৃত কোষ দূর করে ত্বককে সজীব করতে সাহায্য করে। একজন ডায়াবেটিসের রোগী দিনে ৬০ গ্রাম পরিমাণ আনারস, অর্থাৎ এক-চতুর্থাংশ আনারস খেতে পারবেন।
তরমুজ: তরমুজের ৯২ শতাংশই পানি। তাই গরমে প্রশান্তি এনে দেয় এই ফল। ১০০ গ্রাম তরমুজে শর্করা ৩-৫ গ্রাম ও মাত্র ১৫ কিলোক্যালরি। যারা ওজন কমাতে চান, তারা তরমুজ খেতে পারবেন ইচ্ছামতো। কিন্তু গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি বলে ডায়াবেটিসের রোগীদের এটি খেতে হবে হিসাব করে। তারা দিনে ১৫০ গ্রাম পরিমাণ খেতে পারবেন।
জাম: জামে আছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, জিংক, কপার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইবার। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকার কারণে এটি ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য উপকারী। জামে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম, কিন্তু ফাইবার বেশি। কোষ্ঠকাঠিন্য তো দূর করেই, হজমশক্তি বাড়ায়, মূত্র পরিষ্কার করে।
জ্যৈষ্ঠ মাসের নানা রসাল ফলের মধ্যে প্রায় সবই ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে পারবেন। তাই ফল মোটেই খেতে পারবেন নাÑএটা ভেবে মন খারাপ না করে রোজ স্বাস্থ্যকর উপায়ে খানিকটা করে খেতে পারবেন।
হাসিনা আক্তার
ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদ, চট্টগ্রাম