নিজস্ব প্রতিবেদক : টানা দরপতনের বৃত্তে আটকে গেছে দেশের পুঁজিবাজার। লেনদেনের খরাও কাটছে না। সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনের মধ্য দিয়ে লেনদেন শেষ হয়েছে। আগের কার্যদিবসের তুলনায় গতকাল ডিএসইতে লেনদেনও কিছুটা কমেছে। এদিকে ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটের দর কমেছে।
ডিএসইর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের চেয়ে ৪১ দশমিক ৯৪ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে ৫ হাজার ১৯ পয়েন্টে। ডিএসই শরিয়াহ সূচক ১০ দশমিক ৯০ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৫৫ পয়েন্টে এবং ডিএস৩০ সূচক ১৪ দশমিক ৭৪ পয়েন্ট কমে এক হাজার ৯৪৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। লেনদেনেও ভিন্ন চিত্র দেখা গেছে। ডিএসইতে গতকাল লেনদেন আগের কার্যদিবসের তুলনায় কিছুটা কমেছে।
ডিএসইর তথ্যমতে, গতকাল লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানি এবং ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিটের দর কমেছে। ডিএসইতে গতকাল মোট ৩৯৬টি কোম্পানি এবং মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ৫৬টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ২৭৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে ৬৩টি ফান্ড ও কোম্পানির দর অপরিবর্তিত ছিল।
এদিকে বিভিন্ন ক্যাটেগরির মধ্যে ‘এ’ ক্যাটেগরির ২১৮টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ২৫টি কোম্পানি ও ফান্ডের দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ১৬৭টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৬টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট দর।
একইভাবে ‘বি’ ক্যাটেগরির ৭৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের মধ্যে লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর দাম বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
‘জেড’ ক্যাটেগরির ৯৯টি কোম্পানি ও ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৯টি ফান্ড ও কোম্পানির দর বেড়েছে। এর বিপরীতে ৫২টি ফান্ড ও কোম্পানির দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ২৮টি ফান্ড ও কোম্পানির দর।
একইসঙ্গে মিউচুয়াল ফান্ড খাতে বেশির ভাগ ফান্ডের ইউনিটের দরও কমেছে। লেনদেন হওয়া ৩৫টি ফান্ডের মধ্যে মাত্র ৬টি ফান্ডের ইউনিট দর বেড়েছে, বিপরীতে ১৭টি ফান্ডের ইউনিট দর কমেছে। দিনশেষে অপরিবর্তিত ছিল ১২টি ফান্ডের ইউনিট দর।
ডিএসইতে গতকাল মোট ১২ কোটি ৫৯ লাখ ৬৪ হাজার ১৯৯টি শেয়ার ও ইউনিট এক লাখ ৫২ হাজার ৯৬৭ বার হাতবদল হয়েছে। এরই জেরে দিনশেষে ডিএসইতে মোট লেনদেন দাঁড়ায় ৪৫৩ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ৫১৮ কোটি ৬২ লাখ টাকা।
এই লেনদেনে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্টের শেয়ার। কোম্পানিটির ৩০ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা আনোয়ার গ্যালভানাইজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২১ কোটি ৯৩ লাখ টাকার। ১৬ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে মনোস্পুল পেপার।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছেÑখান ব্রাদার্স পিপি ওভেন ব্যাগ, ওরিয়ন ইনফিউশন, মুন্নু ফেব্রিক্স, সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সিভিও পেট্রোকেমিক্যাল এবং কে অ্যান্ড কিউ।
অন্যদিকে, চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) মোট ১৯১টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে ৫০টি কোম্পানির, কমেছে ১১৪টির এবং অপরিবর্তিত আছে ২৭টির। সিএসইতে ১৮ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয়েছিল ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।
বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারদর কমে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে সতর্কতা ও হতাশা ছড়িয়ে পড়েছে। বাজারে বিক্রয় চাপ বাড়ায় সূচকও চাপের মুখে পড়েছে। সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি ও বিনিয়োগকারীদের দ্বিধাদ্বন্দ্ব বাজারে স্থবিরতা তৈরি করেছে। তারা দীর্ঘমেয়াদি দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে মৌলভিত্তিক শেয়ারে বিনিয়োগের পরামর্শ দিয়েছেন।
প্রিন্ট করুন




Discussion about this post