প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

ডেঙ্গু প্রতিরোধে সর্বাত্মক উদ্যোগ নিন

দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে মঙ্গলবার সকাল ৮টা পর্যন্ত পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে ৪৬ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে রাজধানীর বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৪১ জন। চলতি বছর ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে এ পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। বর্তমানে দেশে ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। স্বাভাবিকভাবেই ডেঙ্গু জ্বর নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রবল উদ্বেগ রয়েছে। হাসপাতালগুলোয় এখন ডেঙ্গু রোগীদের ভিড়।

সাধারণত জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ থাকে। কারণ এ সময়ে এডিস মশার বিস্তার ঘটে। ডেঙ্গু জ্বরের জন্য দায়ী এডিস মশা অন্ধকারে কামড়ায় না। সাধারণত সকালে ও সন্ধ্যার কিছু আগে এডিস মশা তৎপর হয়ে ওঠে। এডিস মশা কখনও অন্ধকারে কামড়ায় না। তবে রাতে উজ্জ্বল আলোয়ও কামড়াতে পারে। তাই এডিসের কামড় থেকে বেঁচে থাকতে জনসচেতনতা প্রয়োজন।

স্বাস্থ্যবিধি যথারীতি মেনে চললে কভিডের সংক্রমণ এড়ানো সম্ভব। ডেঙ্গুর ভাইরাস চার ধরনের। এ চার ভাইরাস প্রতিরোধ করার জন্য কাজ করে এমন ভ্যাকসিন এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয়নি। তাই ডেঙ্গুর প্রতিকারে অতিরিক্ত সতর্কতা প্রয়োজন।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, ডেঙ্গু রোগে বছরে বিশ্বে ২০ হাজার লোকের প্রাণহানি এবং ১০ কোটি লোক আক্রান্ত হয়ে থাকে। যদিও ভ্যাকসিন নেই, তারপরও আক্রান্ত ব্যক্তিরা যথাসময়ে সঠিক চিকিৎসা পেলে এ রোগে মৃত্যু কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করা সম্ভব। তাই সম্মিলিত প্রয়াসেই ডেঙ্গু মোকাবিলা করতে হবে। যেমনÑ স্থানীয় সব সরকার পরিষদে দায়িত্ব হচ্ছে জলাবদ্ধতা দূর, নর্দমা পরিষ্কার ও মশা মারার ওষুধ ছিটানো। অন্যদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্ব হচ্ছে বিভিন্ন হাসপাতালে এই রোগের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া। ডেঙ্গু সংক্রমণ প্রতিরোধে নাগরিকরা যাতে কম খরচে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে পারে, সে জন্য সরকারকে উদ্যোগ নিতে হবে। পরীক্ষার ফি নির্ধারণ করে দিতে হবে। সম্ভব হলে বিনা মূল্যে ডেঙ্গু পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। জনসাধারণের দায়িত্ব হবে প্রতিটি বসতঘর ও প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান জোরদার করা।

রাজধানীসহ দেশের স্থানীয় সব সরকার পরিষদকে মশক নিধনে ব্যবস্থা নিতে হবে। ঘরের বাইরে মাঝে মধ্যে বৃষ্টির পানি জমতে পারে। ফুলের টব, প্লাস্টিকের পাত্র, পরিত্যক্ত টায়ার, প্লাস্টিকের ড্রাম, মাটির পাত্র, টিনের কৌটা, ডাবের খোসা, কনটেইনার, মটকা, ব্যাটারির শেল, পলিথিন, বিস্কুট ও চিপসের প্যাকেটে পানি জমে থাকতে পারে। এগুলো বিনষ্ট করে ফেলতে হবে। সড়কদ্বীপে ও বিভাজকে সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য ফুলের টব, গাছপালা ও জলাধারে যাতে বৃষ্টির পানি না জমে, সে ব্যাপারে যতœবান হতে হবে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে নিয়ে কাজ করা

সংস্থা-সংগঠনের মধ্যে সমন্বয় সাধনও জরুরি। সর্বাত্মক উদ্যোগ নেয়া গেলে ডেঙ্গু প্রতিরোধ করা কঠিন নয় বলেই আমরা মনে করি।