প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে ১ জুলাই থেকে টোল আরোপ

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা তথা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়ক। ৫৫ কিলোমিটার এ মহাসড়কটি ২০২০ সালের মার্চে উদ্বোধন করা হয়। এত দিন এক্সপ্রেসওয়েতে ফ্রিতে চলাচল করা গেলেও এখন থেকে টোল দিতে হবে। আগামী ১ জুলাই থেকে এ টোল আদায় শুরু হচ্ছে।

গত রোববার সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের উপ-সচিব ফাহমিদা হক খান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, ‘টোল নীতিমালা, ২০১৪’ অনুযায়ী চূড়ান্তভাবে টোলহার নির্ধারণের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালের জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের টোলহার (মিডিয়াম ট্রাক) সমন্বিতভাবে ১০ টাকা/কিলোমিটার হিসাবে নির্ধারণ করা হলো। এতে অর্থ বিভাগের সম্মতি রয়েছে। পরবর্তী কালে টোল নীতিমালা, ২০১৪ অনুসারে যথাসময়ে টোলহার চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করা হবে।’

জানতে চাইলে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ঢাকা জোনের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. সবুজ উদ্দিন খান শেয়ার বিজকে বলেন, ২০২১ সালেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাসড়কের জন্য ভিত্তি টোল চূড়ান্ত করা হয়েছিল। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনও সে সময় নেয়া হয়। তবে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন না হওয়ায় তা স্থগিত রাখা হয়েছিল। ওই সময় ভিত্তি টোল ১০ টাকা হারে নির্ধারণ করা হয়। সে হারেই মহাসড়কটিতে টোল আরোপ শুরু হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, শিগগিরই মহাসড়কটিতে যানবাহনভেদে টোলের হার প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। আর মহাসড়কটির জন্য নতুন টোলহার চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। সে হার চূড়ান্ত হওয়ার আগ পর্যন্ত এ টোলহার বহাল থাকবে।

সওজের তথ্যমতে, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের দৈর্ঘ্য ৫৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে ঢাকা থেকে মাওয়ার দৈর্ঘ্য ৩৫ কিলোমিটার এবং পদ্মা সেতুর অপর পাড়ে জাজিরা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত দৈর্ঘ্য ২০ কিলোমিটার। তবে এক্সপ্রেসওয়েটিতে টোল আদায় শুরুর পর পোস্তগোলা (বুড়িগঙ্গা-১) সেতু, ধলেশ্বরী সেতু ও আড়িয়াল খাঁ সেতুতে আর টোল দিতে হবে না। এছাড়া দুই পাশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য নির্মিত সার্ভিস লেনে কোনো টোল দিতে হবে না।

সূত্র জানায়, ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশ ও বের হওয়ার চারটি প্রস্তাবিত পয়েন্ট রয়েছে। এগুলো হলো আবদুল্লাহপুর, ধলেশ্বরী, মালিগ্রাম ও আড়িয়াল খাঁ। এসব পয়েন্টে টোল দিয়ে যানবাহন বেরিয়ে যেতে পারবে। আবার এসব পয়েন্ট দিয়ে মহাসড়কে গাড়ি প্রবেশের সুযোগও থাকবে। তবে কোনো যানবাহনকে এক্সপ্রেসওয়েটিতে একাধিকবার টোল দিতে হবে না।

এদিকে ভিত্তি টোল ১০ টাকা ধরে ‘টোল নীতিমালা, ২০১৪’ অনুসারে ঢাকা-মাওয়া, ভাঙ্গা-জাজিরার টোলহার প্রাক্কলন করেছে শেয়ার বিজ। এতে দেখা যায়, ঢাকা থেকে মাওয়া পর্যন্ত ট্রেইলারের জন্য টোল দিতে হবে ৮৭৫ টাকা। ভারী ট্রাকে এ হার ৭০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ৩৫০ টাকা ও ছোট ট্রাকে ২৬৫ টাকা। আর বড় বাসে টোল দিতে হবে ৩১৫ টাকা ও ছোট বাসে ১৭৫ টাকা। এছাড়া মাইক্রোবাস ও পিকআপে ১৪০ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়িতে ৯০ টাকা ও বাইকে ২০ টাকা টোল দিতে হবে।

অপরদিকে জাজিরা থেকে ভাঙ্গা অংশে চলাচলের জন্য ট্রেইলারের জন্য টোল দিতে হবে ৫০০ টাকা। ভারী ট্রাকে এ হার ৪০০ টাকা, মাঝারি ট্রাকে ২০০ টাকা ও ছোট ট্রাকে ১৫০ টাকা। আর বড় বাসে টোল দিতে হবে ১৮০ টাকা ও ছোট বাসে ১০০ টাকা। এছাড়া মাইক্রোবাস ও পিকআপে ৮০ টাকা, ব্যক্তিগত গাড়িতে ৫০ টাকা ও বাইকে ১০ টাকা টোল দিতে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী সভায় (একনেক) জাতীয় মহাসড়কগুলোয় চলাচলকারী যানবাহন থেকে টোল আদায়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন। পরে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের পর এ কার্যক্রমে গতি আসে। তবে পদ্মা সেতু নির্মাণ শেষ না হওয়ায় তা বন্ধ রাখা হয়।