খুলনা ব্যুরো: পাঁচ বছর বন্ধ থাকার পর খুলনা-ঢাকা নৌরুটে বৃহস্পতিবার পুনরায় রকেট স্টিমার সার্ভিস চালু হয়েছে। এ অঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হওয়ায় অনেকেই স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। নদীপথে আরামদায়ক ভ্রমণ আর কম খরচে মালামাল পরিবহনে রকেট সার্ভিস মানুষের কাছে খুবই জনপ্রিয় একটি যান। এই সার্ভিস চালু হওয়ায় খুলনার অর্থনীতির চাকা আরও সচল হবে বলে জানিয়েছেন এ অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা।
জানা গেছে, নদীর গভীরতা কম ও নানা আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে এই সার্ভিসটি গত পাঁচ বছর বন্ধ ছিল। বৃহস্পতিবার দীর্ঘদিন পর রকেট স্টিমার খুলনা আসায় খুলনাবাসী সাড়ম্বর আয়োজনের মধ্য দিয়ে বরণ করে নেয় স্টিমার মধুমতিকে। বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৮টায় খুলনা ঘাটে এসে পৌঁছায় মধুমতি। এ সময় স্থানীয় সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজানসহ শত শত মানুষ স্টিমারটি বরণ করে নেয়। শুক্রবার রাত পৌনে ৩টায় আবার স্টিমারটি ঢাকার উদ্দেশে খুলনা ছেড়ে যায়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য মিজানুর রহমান মিজান ছাড়াও বিআইডব্লিউটিসির জিএম ক্যাপ্টেন শওকত সরকার, জিএম (যাত্রী ও ফেরি) নুরুল আলম আখন্দ, উপপরিচালক কনজারভেন্সি আশরাফুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিসি খুলনার জেনারেল ম্যানেজার এম এম মান্নান, জেলা শ্রমিক লীগের সহ-সভাপতি ও বিআইডব্লিউটিসি ওয়ার্কার্স শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. আসাদুজ্জামান, বিআইডব্লিউটিএ বন্দর ও ট্রাফিক এজিএম মহিউদ্দিন রতন, মো. বরকতউল্লাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। জানা যায়, ২০১১ সালের ২ অক্টোবর ঘষিয়াখালী চ্যানেলের গভীরতা সংকটের অজুহাতে ঢাকা-খুলনা রকেট সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বিকল্প রুট হিসেবে মংলার জয়মনির ঘোল বগি হয়ে খুলনা-ঢাকা রকেট সার্ভিসের চলাচলের জন্য আলোচনা শুরু হলেও সেটা আর সামনে এগোয়নি। এ সংক্রান্ত সংবাদ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ার পর সংবাদটি প্রধানমন্ত্রীর দফতরের নজরে আসে। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে এ রুটে স্টিমার সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নেয় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর খুলনা-ঢাকা নৌরুটে ৯০০ যাত্রী ও ১০০ টন মালামাল পরিবহনে সক্ষম মধুমতি নামক স্টিমার চালু হয়। আপাতত সপ্তাহে একদিন এই সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যাত্রী ও মালামাল বহনের চাহিদার গুরুত্ব বিবেচনায় এনে পরবর্তীকালে স্টিমার সংখ্যা বাড়ানো হবে।
জানা গেছে, দীর্ঘদিন ঢাকা-খুলনা রুটের রকেট সার্ভিস বন্ধ থাকায় বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষকে অনেক লোকসান গুনতে হয়েছে। ঢাকা-মোরেলগঞ্জ পর্যন্ত রকেট সার্ভিসে গত তিন মাসে কোটি টাকার বেশি লোকসান গুনেছে এ কর্তৃপক্ষ।