শেয়ার বিজ ডেস্ক : করোনাভাইরাসে শুধু আক্রান্ত ও প্রাণহানির ঘটনাই বাড়ছে না, বাড়ছে এর অর্থনৈতিক ক্ষতির মাত্রাও। বিশেষ করে ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীনকে বড় ধরনের আর্থিক মাশুল দিতে হচ্ছে। সম্প্রতি দেশটিতে নতুন করে সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা কমে এলেও এর ধকল এখনও কাটিয়ে উঠতে পারেনি দেশটি। এরই মধ্যে শিল্পোৎপাদন ও বিনিয়োগে নি¤œমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারিÑএ দুই মাসে দেশটির শিল্পোৎপাদন প্রবৃদ্ধি তিন দশকের মধ্যে সর্বনি¤œ পর্যায়ে নেমে এসেছে। করোনাভাইরাসের ফলে চীনা অর্থনীতির যতটা ক্ষতি হবে বলে মনে করা হয়েছিল, বাস্তবে ক্ষতির পরিমাণ তার চেয়েও বেশি। খবর: রয়টার্স।
চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে চীনে খুচরা বিক্রির হার আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কমেছে ২০ দশমিক পাঁচ শতাংশ। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্লেষকরা এ হার যতটা কমে যাওয়ার আশঙ্কা করেছিলেন, তার চেয়েও বেশি। একই সময় শিল্প খাত থেকে অর্জিত মুনাফার পরিমাণও কমেছে ১৩ দশমিক পাঁচ শতাংশ। স্থায়ী সম্পদ বিনিয়োগের পরিমাণ কমেছে ২৪ দশমিক পাঁচ শতাংশ।
নতুন সংক্রমণ কমলেও বিদেশিরা এখনও চীন সফরের সাহস পাচ্ছেন না। ব্যবসায়িক ভ্রমণ কিংবা পণ্য সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে।
ভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কায় অনেকেই এমন কাজকর্ম বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা থেকে সংক্রমণ ঝুঁকি বাড়তে পারে। ফলে রেস্তোরাঁ, সিনেমা, পরিবহন কোম্পানি, হোটেল, দোকানপাট, বাজারÑসবকিছুর ওপরই দ্রুত এর প্রভাব পড়েছে। এর ওপর চীনা চান্দ্রবর্ষের ছুটির সময় এমন স্বাস্থ্য সংকট দেখা দেওয়ায় এ শিল্পগুলো বড় ধরনের বাণিজ্যিক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যেসব পণ্য সরবরাহে চীনের ভূমিকা রয়েছে, সেগুলো নিয়েও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে।
চীন থেকে যন্ত্রাংশ সরবরাহে ঘাটতির কারণে দক্ষিণ কোরিয়া তাদের কারখানায় হাইউন্ডাই গাড়ি তৈরি বন্ধ করে দিয়েছে। ফক্সওয়াগন ও বিএমডব্লিউ কোম্পানি চীনে গাড়ি নির্মাণের কাজ বন্ধ রেখেছে। এর সম্ভাব্য সুদূরপ্রসারী প্রভাব যে ভবিষ্যতে গাড়ির বাজারে পড়তে যাচ্ছে এটা থেকেই তার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী গাড়ি নির্মাণ ও ইলেকট্রনিকস শিল্পে যন্ত্রাংশ সরবরাহকারী দেশ হিসেবে চীনের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বহু মোবাইল ফোন ও কম্পিউটার চীনে তৈরি হয়। অনেক ফোন ও কম্পিউটারের যন্ত্রাংশও তৈরি হয় দেশটিতে।
