প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

দাম সহনীয় হলে ১০-১২ কার্গো এলএনজি কিনবে সরকার: উপদেষ্টা

নিজস্ব প্রতিবেদক: আন্তর্জাতিক বাজারে দাম ফের সহনীয় পর্যায়ে এলে আগামী জুনের মধ্যে স্পট মার্কেট বা খোলাবাজার থেকে ১০ থেকে ১২ কার্গো এলএনজি কেনার কথা ভাবছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি-বিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী গত সোমবার ইন্ডিয়া এনার্জি উইকের সাইডলাইনে বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান।

তিনি বলেন, ‘এখন আমাদের এলএনজির উচ্চ চাহিদার মৌসুম। রমজান চলে আসছে, সেচের মৌসুমও; স্পট মার্কেটে দাম শিথিল হলে আমরা ১০ থেকে ১২ কার্গো বা তার বেশি এলএনজি কিনতে পারি।’

দেশে নতুন শিল্পকারখানা বাড়তে থাকায় গ্যাসের চাহিদা মেটাতে ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে আন্তর্জাতিক স্পট মার্কেট থেকে ৯ কার্গো (প্রতি কার্গোয় ৩৩ লাখ ৬০ হাজার এমএমবিটিইউ) এলএনজি আমদানি করেছিল সরকার। পরে একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে এলএনজির মূল্য বেড়ে যাওয়ার কারণে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনা বন্ধ করে দেয়া হয়। তাতে দেশে গ্যাস ও বিদ্যুতের সংকট আরও প্রকট হয়ে ওঠে। গ্যাসের অভাবে অনেক পোশাক কারখানা বন্ধ রাখতে হয়। তবে ডিসেম্বরে শীত শুরু হওয়ায় গ্যাস ও বিদ্যুতের চাহিদা কমে আসে; পরিস্থিতির উন্নতি ঘটে।

রয়টার্স জানিয়েছে, তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস বা এলএনজির দাম গত আগস্টের রেকর্ড ৭০ দশমিক ৫০ ডলারে (এমএমবিটিইউ) ওঠে। সেখান থেকে ৭০ শতাংশের বেশি দাম কমলে সম্প্রতি এক কার্গো এলএনজি কিনতে টেন্ডার দেয় সরকার।

তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বলেন, ‘সামনের মাসগুলোয় দেশের ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে আমরা খোলা বাজারে ২০ ডলারের (এমএমবিটিইউ) কম দামে এলএনজি কার্গো খুঁজছি।’

দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রায় তিন-চতুর্থাংশের জন্য আমদানি করা প্রাকৃতিক গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল বাংলাদেশ। কিন্তু গত বছর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে মূল্য চড়ে গেলে গ্যাসে রেশনিং করতে বাধ্য হয় সরকার।

যুদ্ধের জেরে রাশিয়ার ওপর ইউরোপীয় দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার কারণে এলএনজির দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোর জন্য ‘বৈষম্যমূলক’ বলে মনে করেন জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক। এভাবে দাম চড়ে যাওয়ার কারণে বাংলাদেশের মতো দেশগুলো এলএনজির সরবরাহ নিশ্চিত করতে পারছে না বলে রয়টার্সকে জানান তিনি।

খোলা বাজারে এশিয়ান এলএনজির দাম গত সপ্তাহে ছিল ১৯ দশমিক ৫০ এমএমবিটিইউ, যা ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে প্রথমবার ২০ ডলারের নিচে নেমেছে।

বাংলাদেশ বর্তমানে ওমানের সঙ্গে ১০ বছরের এবং কাতারের সঙ্গে ১৫ বছরের আমদানি চুক্তির মাধ্যমে দিনে প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ মিলিয়ন ঘনফুট এলএনজি আমদানি করছে।

প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি উপদেষ্টা রয়টার্সকে বলেন, ‘আমরা ব্রুনাই এলএনজির সঙ্গে একটি চুক্তির জন্য একটি প্রতিনিধিদল পাঠিয়েছিলাম, সবকিছু ঠিক থাকলে তারা ২০২৫ সালের পর থেকে এলএনজি সরবরাহ করবে।’