শেয়ার বিজ ডেস্ক : বাংলাদেশ জাতীয় দলের সিনিয়র সহকারী কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের পদত্যাগ ক্রিকেট মহলে এক নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। ২০২৭ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চুক্তিবদ্ধ থাকলেও তিনি দায়িত্ব ছাড়ছেন আয়ারল্যান্ড সিরিজের পরই। আনুষ্ঠানিকভাবে পদত্যাগপত্রও জমা দিয়েছেন বিসিবিতে।
প্রথমে বিষয়টি ‘ব্যক্তিগত কারণ’ বলে ব্যাখ্যা করলেও পরে সালাউদ্দিন নিজেই স্বীকার করেন, দায়িত্ব আর উপভোগ করতে পারছেন না, ‘কোচিং করানোটা আমার উপভোগের জায়গা। কিন্তু এখন আর সেটা উপভোগ হচ্ছে না, তাই সরে যাওয়াই ভালো।’
তার এই বক্তব্যের আড়ালে যে এক ধরনের মানসিক ক্লান্তি ও পেশাগত অস্বস্তি কাজ করছে, তা ক্রিকেট মহলে অস্বীকারের সুযোগ নেই। সূত্রমতে, বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদিন ফাহিমের সঙ্গে সালাউদ্দিনের যোগাযোগ দীর্ঘদিন ধরেই ছিল শীতল। জাতীয় দলের কোচিং-সংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলোও চলছিল তার অজান্তে। এমন পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে তার ভূমিকা কার্যত উপেক্ষিত হয়ে পড়ে।
এছাড়া দলের ব্যাটিং ব্যর্থতার দায়ও প্রায়ই চাপানো হচ্ছিল তার ওপর, যদিও তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাটিং কোচ ছিলেন না। খেলোয়াড় নির্বাচন, উইকেটকিপার পছন্দ এসব নিয়েও তার মতামত গুরুত্ব পায়নি। ফলে তিনি ধীরে ধীরে হয়ে পড়েন বিচ্ছিন্ন ও নিরুৎসাহিত।
ফারুক আহমেদ সভাপতির দায়িত্ব নেয়ার পর সালাউদ্দিনকে ঘিরে অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু মাত্র এক বছরের মধ্যেই সেই অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটছে নীরব হতাশায়। বিসিবির অভ্যন্তরীণ জটিলতা, কোচিং স্টাফদের মধ্যে আস্থাহীনতা এবং দায়িত্বের ভারসাম্যহীনতা- সব মিলিয়ে তিনি যে ক্লান্ত ও অসন্তুষ্ট ছিলেন, তা তার বক্তব্যেই স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
বিসিবির সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে মোহাম্মদ আশরাফুলকে ব্যাটিং কোচ হিসেবে হঠাৎ অন্তর্ভুক্ত করা, সেই অস্বস্তি আরও বাড়িয়ে দেয়। কোচিংয়ের ধাপ ও প্রক্রিয়া অমান্য করে জাতীয় দলে আশরাফুলকে নিয়ে আসা নিয়ে অনেকেই বিস্মিত। ‘সবকিছুতেই একটা প্রক্রিয়া মানা উচিত। আশরাফুলের ক্ষেত্রে তা হয়নি। এটা ভালো উদাহরণ হয়ে থাকবে না’, বলেছেন বিসিবিতে কাজ করা স্থানীয় এক কোচ। তবে এ ব্যাপারে সালাউদ্দিন জানিয়েছেন, কোচিং স্টাফে আশরাফুলের অন্তর্ভুক্তিকে তিনি স্বাভাবিকভাবেই নিয়েছেন।
যদিও ক্রিকেট সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বিসিবিতে আগে থেকেই অনেক অভিজ্ঞ কোচ থাকার পরও আশরাফুলকে সরাসরি জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে আনা ঠিক হয়নি। তাকে আগে বয়সভিত্তিক, এইচপি বা ‘এ’ দলের সঙ্গে কাজ করানো উচিত ছিল।
আয়ারল্যান্ড সিরিজের পর জাতীয় দলের ড্রেসিংরুম ছাড়লেও সালাউদ্দিনের কোচিং ক্যারিয়ার এখানেই থামছে না। ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আবারও ফিরবেন বিপিএল বা ঘরোয়া ক্রিকেটে কোনো দলের কোচ হিসেবে, যেখানে তিনি অতীতেও অসাধারণ সাফল্য দেখিয়েছেন।
এস এস/
প্রিন্ট করুন







Discussion about this post