নিজস্ব প্রতিবেদক : সোনালী ব্যাংকের প্রিন্সিপাল অফিস চট্টগ্রাম সেন্ট্রালের সিনিয়র অফিসার মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন আওয়ামী ঘনিষ্ঠ হয়েও ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে বাগিয়ে নিয়েছেন এমপ্লয়ি ইউনিয়ন ৬৬৪-এর উপদেষ্টা পদ ও চট্টগ্রাম নগরীর বন্দর থানা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের পদ।
তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের কার্যকরী সদস্য প্রিন্সিপাল অফিস চট্টগ্রাম- সেন্ট্রালের এওজি-১ (ক্যাশ) মোহাম্মদ নুরুল ইসলামকে সোনালী ব্যাংক এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের (সিবিএ) সভাপতি করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও বঙ্গবন্ধু আদর্শের সংগঠন বি ২০২ এর অর্থ সম্পাদক মো. আজাদ হোসেনকে করেছেন সাধারণ সম্পাদক এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আব্দুল মালেককে বানিয়েছেন প্রচার সম্পাদক।
একই সংগঠনের সহদপ্তর সম্পাদক নাজির নয়নকে সাংগঠনিক সম্পাদক, দাবি এবং সমস্যাবিষয়ক সম্পাদক মোহাম্মদ আইয়ুবকে অর্থ সম্পাদকসহ আরও অনেককে এমপ্লয়ি ইউনিয়ন ৬৬৪ এর কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করেছেন এই মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপি সমর্থিত এক কর্মকর্তা জানান, জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক কেন্দ্রীয় কমিটি কর্তৃক অনুমোদিত জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক চট্টগ্রাম জেলা কমিটি থাকা সত্ত্বেও মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন পাল্টা জিয়া পরিষদ চট্টগ্রাম নামে আরেকটি জিয়া পরিষদ নামে কমিটি গঠন করতে ওঠে পড়ে লেগেছেন। এ ক্ষেত্রে তাকে পূর্ণ সহযোগিতা করে যাচ্ছেন চট্টগ্রাম রেলওয়ে শাখার অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার মো. ইয়াছের আরাফাত। এই ইয়াছের আরাফাত জিয়া পরিষদের পাল্টা কমিটির সভাপতি প্রার্থী।
আরও জানা যায়, সোনালী অফিসার্স কোয়ার্টারের ফ্ল্যাটের সংখ্যা কর্মকর্তাদের চাহিদার তুলনায় খুবই কম হওয়া সত্ত্বেও সোনালী ব্যাংক ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামে থাকাকালীন অফিসার্স কোয়াটারের বেশ কয়েকটি ফ্ল্যাট জিএমকে একপ্রকার চাপ দিয়ে ট্রেনিং ইনস্টিটিউট চট্টগ্রামের নামে বরাদ্দ নিয়ে ডিজিএম মো. শাহিন মিয়া এবং অলক কুমার বলকে মাত্র ৩০ টাকার বিনিময়ে এসি রুমের ফ্ল্যাটে বছরের পর বছর থাকার ব্যবস্থা করে দিয়ে ব্যাংকের লাখ লাখ টাকা ক্ষতি করেছেন।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ইয়াছের আরাফাত সরকারি চাকরি করে গড়ে তুলেছেন গাড়ির রমরমা ব্যবস্যা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ব্যাংক কর্মকর্তাদের তার কাছ থেকে গাড়ি কিনতে বাধ্য করেন অন্যথায় তাদের ওপর করেন নানামুখী নির্যাতন এবং বদলি।
অভিযোগ রয়েছে, মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ঠিকমতো অফিস না করে বিভিন্ন শাখায় গিয়ে শাখা ম্যানেজারদের হুমকি-ধামকি দিয়ে চাঁদা আদায় করছেন। তিনি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর শাখার ম্যানেজারকে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে রিপিটেড পোস্টিং করান এবং মাসোহারা ভিত্তিতে তার কাছ থেকে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা করে নিচ্ছেন।
মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে তিনি বঙ্গবন্ধু পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. সৈয়দুল আলম এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম উদ্দিনকে ১ থেকে ২ লাখ টাকার বিনিময়ে চন্দ্রঘোনা এবং কর্ণফুলী শাখায় বদলি করতে সহায়তা করেন। সাংগঠনিক সম্পাদক রবিউল ইসলামকে তার ছত্রছায়ায় এখন পর্যন্ত বহাল তবিয়তে রেখেছেন।
সপ্তাহে ১-২ বার কিছুক্ষণের জন্য অফিস আসেন। এমনও রেকর্ড আছে ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় গিয়ে এক সপ্তাহ পর এসে হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর করে তিনি লাঞ্চ ভাতা নিচ্ছেন বিশেষ করে ১৪ থেকে ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি ঢাকায় ছিলেন ফিরে এসো পুরো এক সপ্তাহের স্বাক্ষর একদিনে করে লাঞ্চ ভাতা নিয়েছেন।
এক্ষেত্রে তাকে সহযোগিতা করে যাচ্ছেন প্রিন্সিপাল অফিস চট্টগ্রাম সেন্ট্রালের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার খন্দকার মাজহারুল কবির। বর্তমানে তার এসব কর্মকাণ্ডে সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একপ্রকার আতঙ্কে অফিস করছেন।
প্রতিবেদনে আরও জানা যায়, ২০০৩ সালে বিএনপি ক্ষমতা থাকাকালীন সোনালী বাংক লালদিঘী করপোরেট শাখায় চাকরি করা অবস্থায় লালদীঘি করপোরেট শাখার গ্রাহক প্রতিষ্ঠান ফ্যাশন প্রোডাক্টের ৩৫ লাখ টাকা দেওয়ানহাট মোড়ে ছিনতাই হয়। গ্রাহকদের টাকা ছিনতাইয়ে ছিনতাইকারীদের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন এই নাজিমুদ্দিন এবং তিন মাস জেল খাটেন।
উল্লেখ্য, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক পিএলসি কেন্দ্রীয় কমিটি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়, আওয়ামী এজেন্ডা বাস্তবায়ন এবং বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে জিয়া পরিষদ সোনালী ব্যাংক পিএলসি কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ থেকে তাকে অব্যাহতি দেন।
প্রিন্ট করুন







Discussion about this post