প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

দুই ফার্নিচার প্রতিষ্ঠানের ছয় কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন, মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজধানীর দুইটি ফার্নিচার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ছয় কোটি টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের প্রমাণ পেয়েছে মূসক নিরীক্ষা, গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠান দুইটি হলো-মিরপুরের রোকেয়া স্মরণীর শেওড়াপাড়ার জৈনপুর ফার্নিচার ও হোমউড ফার্নিচার। বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ায় দুইটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা। সোমবার (২৫ জানুয়ারি) পৃথক দুইটি মামলা করা হয়। ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ড. মইনুল খান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল দুইটি প্রতিষ্ঠানে ২৮ ডিসেম্বর আকস্মিক অভিযান চালায়।এতে সংস্থার সহকারী পরিচালক মাহিদুল ইসলাম এতে নেতৃত্ব দেন। একজন গ্রাহকের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে এই অভিযান চালানো হয়।

অভিযানকালে গোয়েন্দা দল দেখতে পান, প্রতিষ্ঠান দুটো নিবন্ধিত হলেও যথাযথ ভ্যাট চালান প্রদান করে না। গোয়েন্দা দল উপস্থিত কাউন্টার থেকে ডুপ্লিকেট কাগজপত্র পান। প্রতিষ্ঠানদ্বয়ের প্রাঙ্গন থেকে গোয়েন্দা দল বাণিজ্যিক কাগজপত্র জব্দ করে আনে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোয়েন্দা দল জব্দকৃত কাগজপত্রের সাথে তাদের রিটার্নের সাথে যাচাই করে। দেখতে পায় যে তারা প্রকৃত বিক্রয় হিসাব গোপন করে কম মূল্য প্রদর্শন করে ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে আসছে।

জৈনপুর ফার্নিচার ২০১৮ সালের মার্চ থেকে ২০২০ সালের মার্চ পর্যন্ত দুই বছরে ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার টাকা। এই হিসেবে জৈনপুর ফার্নিচার মাসিক ভ্যাট প্রদান করে মাত্র ২ হাজার টাকা। কিন্তু উক্ত সময়ে জব্দকৃত বিক্রি গোপন করেছে ৫ কোটি ৮৮ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট আরোপযোগ্য হয়েছে ৫৬ লাখ ৮৭ হাজার টাকা। সময়মতো সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেওয়ায় উক্ত টাকার উপর মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ২৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। সুদসহ সর্বমোট ৮১ লাখ ৬৩ হাজার টাকা আদায়যোগ্য।

অপরদিকে হোমউড ফার্নিচার ২০২০ সালের আগষ্ট থেকে নভেম্বর পর্যন্ত চার মাসে ভ্যাট দিয়েছে মাত্র ৩২ হাজার টাকা। এই হিসেবে মাসিক ভ্যাট প্রদান করে মাত্র ৮ হাজার টাকা। কিন্তু ওই সময়ে জব্দকৃত বিক্রি গোপন করেছে ৭৭ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। এতে ভ্যাট ১১ লাখ ৬০ হাজার টাকা আদায়যোগ্য। 

ড. মইনুল খান জানান, দুইটি প্রতিষ্ঠানে সর্বমোট বিক্রি গোপন করেছে ৬ কোটি ৬৬ লাখ টাকা। এতে ভ্যাট আদায়যোগ্য ৬৮ লাখ ৪৭ হাজার টাকা। সময়মতো সরকারি কোষাগারে ভ্যাট জমা না দেওয়ায় ওই টাকার উপর মাস ভিত্তিক ২ শতাংশ হারে ২৪ লাখ ৭৬ হাজার টাকা সুদ টাকা আদায়যোগ্য। সে মোতাবেক প্রতিষ্ঠান দুটো সর্বমোট ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে ৯৩ লাখ ৪৭ হাজার টাকা।

ভ্যাট আইন অনুসারে ভ্যাট ফাঁকির দায়ে আজ প্রতিষ্ঠান দুটোর বিরুদ্ধে পৃথক দুটো মামলা দায়ের করা হয়েছে। চূড়ান্ত বিচারাদেশের জন্য সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কমিশনারেট (ঢাকা পশ্চিম) মামলা দুটো প্রেরণ করা হয়েছে। একইসঙ্গে তাদের কার্যক্রম নিবিড়ভাবে মনিটর করার জন্য ঢাকা পশ্চিম ভ্যাট কমিশনারকে অনুরোধ করা হয়েছে।

###