নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সদস্যভুক্ত দুটি ব্রোকারেজ হাউসের নিবন্ধন সনদ বাতিল করেছে। হাউস দুটি হলোÑআল হারামাইন সিকিউরিটিজ লিমিটেড ও মাহিদ সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে গতকাল বৃহস্পতিবার এ তথ্য প্রকাশ করা হয়। ডিএসই জানিয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) (ট্রেডিং রাইট এনটাইটেলমেন্ট সার্টিফিকেট) বিধিমালা, ২০২০-এর ৭(৩) বিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ধারা লঙ্ঘনের কারণে ডিএসই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ডিএসইতে আল হারামাইন সিকিউরিটিজের ট্রেক নম্বর ২৬৩ এবং মাহিদ সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ট্রেক নম্বর ২৭৩। ডিএসই সূত্রমতে, প্রতিষ্ঠান দুটিতে কোনো বিনিয়োগকারী বা গ্রাহকের তহবিল ও সিকিউরিটিজ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থাকলে তা সংশ্লিষ্ট নথিপত্রসহ ১৩ নভেম্বরের মধ্যে সংস্থাটিকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
স্টক এক্সচেঞ্জ সূত্রে জানা গেছে, ব্রোকারেজ হাউস দুটি মূলধন ও দায়দেনার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম পরিপালনে ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে কয়েক দফা তাদের সময় দেয়া হয়েছিল। তারপরও শর্ত পূরণ করতে না পারায় ডিএসই কর্তৃপক্ষ তাদের লেনদেনের সনদ বাতিল করেছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠান দুটি পুঁজিবাজারে আর শেয়ার লেনদেনে অংশ নিতে পারবে না।
লেনদেন অনুমোদন খারিজ হওয়া প্রতিষ্ঠান দুটির বিনিয়োগকারী ও গ্রাহকদের জন্য একটি জরুরি নির্দেশনা দিয়েছে ডিএসই। যদি আল হারামাইন সিকিউরিটিজ (ট্রেক নম্বর ২৬৩) অথবা মাহিদ সিকিউরিটিজ লিমিটেডের (ট্রেক নম্বর ২৭৩) সঙ্গে কোনো বিনিয়োগকারী বা গ্রাহকের তহবিল-সংক্রান্ত বা সিকিউরিটিজ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত কোনো অমীমাংসিত অভিযোগ থাকে, তবে তা দ্রুত ডিএসইকে জানাতে হবে।
সংশ্লিষ্ট পক্ষকে ১৩ নভেম্বরের মধ্যে সেই অভিযোগ-সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথিপত্রসহ স্টক এক্সচেঞ্জকে লিখিত আকারে অবহিত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বিএসইসির সাবেক চেয়ারম্যান শিবলী রুবাইয়াত উল ইসলাম আল হারামাইন সিকিউরিটিজকে পুঁজিবাজারে শেয়ার লেনদেনের জন্য ট্রেক সনদ দিয়েছিলেন। বিএসইসির অনুমোদনের পর প্রতিষ্ঠানটি তাদের কার্যক্রমও শুরু করে। কিন্তু ট্রেক সনদধারী হিসেবে বিএসইসির আইন অনুযায়ী, মূলধন ও দায়দেনার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম পরিপালন করতে হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটি সেই নিয়ম পরিপালনে ব্যর্থ হয়। এ কারণে কয়েক দফা তাদের সময় দেয়া হয়। তারপরও শর্ত পূরণ করতে না পারায় ডিএসই কর্তৃপক্ষ প্রতিষ্ঠানটির লেনদেনের সনদ বাতিল করেছে। এর ফলে প্রতিষ্ঠানটি শেয়ারবাজারে আর শেয়ার লেনদেনে অংশ নিতে পারবে না।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, আল হারামাইন সিকিউরিটিজের প্রায় শতাধিক বিও (বেনিফিশিয়ারি ওনার্স) হিসাবধারী গ্রাহক ছিলেন। এখন লেনদেন সনদ বাতিল হওয়ায় এসব বিনিয়োগকারী আর প্রতিষ্ঠানটির মাধ্যমে শেয়ারবাজারে কোনো ধরনের লেনদেন করতে পারবেন না। ডিএসই জানিয়েছে, প্রতিষ্ঠানটিতে কোনো বিনিয়োগকারী বা গ্রাহকের তহবিল ও সিকিউরিটিজ নিষ্পত্তি-সংক্রান্ত কোনো অভিযোগ থাকলে তা সংশ্লিষ্ট নথিপত্রসহ ১৩ নভেম্বরের মধ্যে সংস্থাটিকে লিখিতভাবে জানাতে হবে।
২০২২ সালে নভেম্বরে দুবাইভিত্তিক বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান আল-হারামাইন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পুঁজিবাজারে আত্মপ্রকাশ করে আল হারামাইন সিকিউরিটিজ। আল হারামাইন সিকিউরিটিজের মালিক হলেন মোহাম্মদ মাহতাবুর রহমান (নাসির)। তিনি দুবাই-ভিত্তিক আল হারামাইন পারফিউমস গ্রুপ অব কোম্পানিজের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং আল হারামাইন সিকিউরিটিজ লিমিটেডেরও মালিক।
এদিকে মাহিদ সিকিউরিটিজ লিমিটেডের নামে ইস্যুকৃত ট্রেক-নম্বর ২৭৩ বাতিল করা হয়েছে আলোচ্য বিধিমালার ৭(১) বিধি ভঙ্গের কারণে। ব্রোকারেজ হাউসটি এখন পর্যন্ত কোনো ট্রেডিং কার্যক্রম শুরু করতে পারেনি এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) থেকে প্রয়োজনীয় স্টকুডিলার ও স্টকুব্রোকার নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে ব্যর্থ হয়েছে। বিধিমালা অনুযায়ী, কোনো ব্রোকারেজ হাউস টিআরইসি লাইসেন্স পাওয়ার এক বছরের মধ্যে স্টকব্রোকার নিবন্ধন সনদ সংগ্রহ করতে হবে এবং সনদ প্রাপ্তির ছয় মাসের মধ্যে ট্রেডিং কার্যক্রম শুরু করতে হবে।
প্রিন্ট করুন








Discussion about this post