প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

দুই মাসে ৫২ কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি

নিজস্ব প্রতিবেদক: সূচক ও লেনদেনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দুর্বল কোম্পানির অস্বাভাবিক শেয়ারদর। এতে বিনিয়োগকারীদের লোকসানের শঙ্কা বাড়ছে বলে মনে করেন বাজারসংশ্লিষ্টরা।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গত দুই মাসে বা ২০১৬ সালের ১৬ নভেম্বর থেকে চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে ৫২টি কোম্পানির শেয়ারদর অস্বাভাবিক বেড়েছে। এসব কোম্পানির শেয়ারদর বাড়ার পেছনে কোনো কারণ নেই বলে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তদন্তে উঠে এসেছে।

এদিকে অস্বাভাবিকভাবে শেয়ারদর বৃদ্ধি পাওয়া ৫২ কোম্পানির মধ্যে ১৮টিই ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানি। এছাড়া আট কোম্পানির অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি নিয়ে ডিএসই একাধিকবার তথ্য প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) সাত কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কারণ অনুসন্ধানে তদন্তে নেমেছে।

অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো হলো: কে অ্যান্ড কিউ, সেন্ট্রাল ইন্স্যুরেন্স, মালেক স্পিনিং মিলস, মোজাফফর হোসাইন স্পিনিং মিলস, ইসলামী ইন্স্যুরেন্স, জিবিবি পাওয়ার, ফারইস্ট নিটিং অ্যান্ড ডায়িং, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, এ্যাপোলো ইস্পাত, আইসিবি, বেক্সিমকো, বিডি ফাইন্যান্স, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, ন্যাশনাল টি, রংপুর ফাউন্ড্রি, আরগন ডেনিমস, নাভানা সিএনজি, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি অটোকারস, ইফাদ অটোস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, ইস্টার্ন লুব্রিকেন্টস, জিপিএইচ ইস্পাত, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, শমরিতা হসপিটাল, পেনিনসুলা চিটাগং, মাইডাস ফাইন্যান্স, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সমতা লেদার, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, গোল্ডেন সন, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা সিমেন্ট, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স, ম্যারিকো বাংলাদেশ, আরএন স্পিনিং মিলস, ড্যাফোডিল কম্পিউটারস, এমারেল্ড অয়েল, গোল্ডেন হার্ভেস্ট এগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ, আরএসআরএম স্টিল, রহিমা ফুড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, মিরাকল ইন্ডাস্ট্রিজ, এবি ব্যাংক, শাশা ডেনিমস, শ্যামপুর সুগার মিলস, ইমাম বাটন, জিলবাংলা সুগার মিলস, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, এইচআর টেক্সটাইল ও ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং।

এর মধ্যে ‘জেড’ ক্যাটাগরির কোম্পানিগুলো হলো: কে অ্যান্ড কিউ, বেক্সিমকো সিনথেটিকস, পদ্মা ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বিডি অটোকারস, সোনারগাঁও টেক্সটাইল, অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ, মাইডাস ফাইন্যান্স, সুহৃদ ইন্ডাস্ট্রিজ, সমতা লেদার, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স, আরএন স্পিনিং মিলস, রহিমা ফুড, ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, শ্যামপুর সুগার মিলস, ইমাম বাট ও জিলবাংলা সুগার মিলস।

অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি নিয়ে একাধিকবার তথ্য প্রকাশ করা কোম্পানিগুলো হলো: শ্যামপুর সুগার মিলস, ইমাম বাটন, জিলবাংলা সুগার মিলস, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, বাংলাদেশ বিল্ডিং সিস্টেমস, এইচআর টেক্সটাইল, সোনারগাঁও টেক্সটাইল ও ড্রাগন সোয়েটার অ্যান্ড স্পিনিং।

এদিকে অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধির কারণে ‘জেড’ ক্যাটাগরির সাত কোম্পানি নিয়ে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে বিএসইসি। গত ৬ ডিসেম্বর বিএসইসির ৫৯২তম কমিশন সভায় এ কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

কোম্পানিগুলো হলো: রহিমা ফুড, ফাইন ফুডস, বিডি অটোকারস, মেঘনা পিইটি ইন্ডাস্ট্রিজ, মেঘনা কনডেন্সড মিল্ক ইন্ডাস্ট্রিজ, জিলবাংলা সুগার মিলস, ইমাম বাটন ইন্ডাস্ট্রিজ ও শ্যামপুর সুগার মিলস। এ কোম্পানিগুলোর শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) ঋণাত্মক।

চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সাইফুর রহমান মজুমদার বলেন, কারণ ছাড়া যখন কোনো কোম্পানির দর বৃদ্ধি পায় তখন অবশ্যই ঝুঁকির সৃষ্টি করে। এতে বিনিয়াগকারীরা লোকসানের কবলে পড়তে পারে। আর ৫২ কোম্পানির অস্বাভাবিক দরবৃদ্ধি পাওয়া ছোট বিষয় নয়। এটা শেয়ারবাজারের কোম্পানিগুলোর একটি বড় অংশ।

তিনি আরও জানান, বিনিয়োগকারীদের সচেতন করানোর জন্যই অস্বাভাবিক দও বৃদ্ধি পাওয়া কোম্পানিগুলো নিয়ে তথ্য প্রকাশ করা হয়। তাই এক্ষেত্রে ক্ষতির ঝুঁকি কমাতে বিনিয়োগকারীদের সচেতন হতে হবে।

এ প্রসঙ্গে কথা হয় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মো. সাইফুর রহমানের সঙ্গে। তিনি শেয়ার বিজকে বলেন, অস্বাভাবিকভাবে শেয়ারদর বৃদ্ধির বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থা গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।  তদন্ত করে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। তবে সময় ও জনবলের অভাবে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে কাজ করার সুযোগ হচ্ছে না।