প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

দুদকের মামলায় চীনা নাগরিকের কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এক মামলায় সিনফা নিটার্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান ইয়াং ওয়াং চুংকে ১৩ বছর কারাদণ্ড দিয়েছেন ঢাকার একটি আদালত। এ চীনা নাগরিকের সঙ্গে একই সাজার রায় হয়েছে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক খসরু আল রহমানের বিরুদ্ধেও। গতকাল ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ দায়রা জজ আদালতের বিচারক ইকবাল হোসেন রায়ে আরও চার আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে দণ্ড দিয়েছেন।

রায়ে একটি ধারায় চীনা নাগরিক ওয়াং চুং এবং খসরুকে ১০ বছরের সাজা এবং ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়। অন্য ধারায় দুই বছরের কারাদণ্ডের পাশাপাশি ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৩ মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়। আরেকটি ধারায় ১ বছর কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ড দেয়া হয়। এছাড়া সিনফা নিটার্স লিমিটেডের পরিচালক মনসুরুল হক ও গোলাম মোস্তফাকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

মামলার অন্য আসামি ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেডের দিলকুশা শাখার এক সময়ের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এক্সপোর্ট) আব্দুল ওয়াদুদ খান ও এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট শাহাবুদ্দিন চৌধুরীকে একটি ধারায় পাঁচ বছর করে কারাদণ্ড দেয়া হয়। সেই সঙ্গে তাদের ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে। আরেক ধারায় এক বছর কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে তাদের আরও তিন মাস কারাভোগের আদেশ দেয়া হয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আদালত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম জানান, আসামিদের সব ধারার সাজা একত্রে চলবে। এক্ষেত্রে তাদের সর্বোচ্চ সাজা ভোগ করতে হবে বলে আদেশে উল্লেখ করেছেন আদালত।

আসামিদের মধ্যে আব্দুল ওয়াদুদ খান, শাহাবুদ্দিন চৌধুরী ও গোলাম মোস্তফা জামিনে ছিলেন; তবে রায় ঘোষণার পর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। চীনা নাগরিকসহ অন্য তিন আসামি পলাতক রয়েছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ব্যাংকের কাছ থেকে ‘ব্যাক টু ব্যাক এলসি’ খোলার নিশ্চয়তা নিয়ে ব্যবসা পরিচালনা করেন কোম্পানিটির কর্মকর্তারা। সে  জন্য আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জাল দলিল তৈরি করে ব্যাংকে বন্ধক রাখেন। ব্যাংকের দায়-দেনা বাবদ ২ কোটি ৫৯ লাখ ৪০ হাজার ১৪৮ টাকা পরিশোধ না করে তারা গা ঢাকা দেন। তাদের ভুয়া দলিলের কারণে প্রকৃত জমির মালিক হয়রানির শিকার হন। ওই অভিযোগে দুদকের উপপরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন ২০১৭ সালের ১৭ জানুয়ারি মতিঝিল থানায় মামলা করেন। একই কর্মকর্তা মামলাটি তদন্ত করে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৮ সালের ২৪ জুন অভিযোগপত্র জমা দেন।

এক বছরেরও বেশি সময় পর ২০১৯ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছিলেন আদালত। মামলায় ১৩ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১ জনের সাক্ষ্য নিয়ে রায় দেন বিচারক।