নিজস্ব প্রতিবেদক : দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সাবেক চেয়ারম্যানের একান্ত সচিবের (পিএস) ‘অবমাননাকর’ মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা)। বুধবার (১১ জানুয়ারি) ডুসা সভাপতি দুদকের উপপরিচালক মশিউর রহমান স্বাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে এ নিন্দা জানানো হয়।
প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সামিউল মাসুদ নামের ব্যক্তি বুধবার আনুমানিক সকাল ৮টায় তার নিজের ফেসবুক ওয়ালে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সম্পর্কে আপত্তিকর একটি পোস্ট দেন।
কোনো ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করে তার ফেসবুক পেজে একটি কাল্পনিক কাহিনী ফেঁদে কমিশনের কর্মকর্তাদের নিয়ে মর্যাদাহানীকর এবং কুরূচিপূর্ণ পোস্ট দিয়েছেন, তা রাষ্ট্রীয় একটি স্বাধীন নিরপেক্ষ আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের জন্য অগ্রহণযোগ্য ও অবমাননাকর।

ডুসা জানায়, সামিউল মাসুদ ২৭ বিসিএসের কর্মচারী এবং বর্তমানে উপসচিব হিসেবে প্রজাতন্ত্রের কাজে নিয়োজিত রয়েছেন। তিনি ২০১৬ থেকে ২০১৮ সালে দুর্নীতি দমন কমিশনে উপপরিচালক ও কমিশনের চেয়ারম্যানের একান্ত সচিব (পিএস) হিসেবে কাজ করেছেন। তার দৃষ্টিতে দুদকের কোনো কর্মচারীর এরুপ বিলাস সামগ্রী ব্যবহার এবং তার উৎস সম্পর্কে সন্দেহের সৃষ্টি হলে তিনি দুদকের অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমন কমিটির কাছে অভিযোগ উপস্থাপনের সুযোগ ও দায়িত্ব ছিল। তিনি তার উক্তরুপ দায়িত্ব পালন না করে দায় এড়িয়ে গেছেন। বরং বিভিন্ন পর্যায় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, তিনি কর্মরত থাকাকালীন কর্মকর্তাদের কাছে অন্যায় তদবির ও চেয়ারম্যানের একান্ত সচিবের (পিএস) ক্ষমতার অপব্যবহার করতেন।
তিনি ফেসবুকে রাষ্ট্রের একটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টিকারী ও সুষ্ঠু কর্মপরিবেশকে বিঘ্ন সৃষ্টিকারী পোস্ট দিয়েছেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার সংক্রান্তে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পরিপত্র স্মারক নম্বর ১৩৬, তারিখ: ০৭-০৫-২০২০ এর অনুচ্ছেদ ০২(ঘ) তে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা অন্য কোন সার্ভিস/পেশা-কে হেয় প্রতিপন্ন করে এমন কোনো পোস্ট দেয়া থেকে বিরত থাকার নির্দেশনার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
তার এমন আচরণ কোনোভাবে কাম্য নয়। তার এরুপ কার্যক্রম কেবলমাত্র অসদাচরণের আওতাভুক্তই নয় উপরন্তু দণ্ডবিধি ও দুর্নীতি দমন কমিশন আইনের আওতায় মিথ্যা তথ্য প্রদান বিষয়ক শাস্তিযোগ্য অপরাধও বটে। তিনি সস্তা কথাবার্তা বলে কমিশন ও কমিশন কর্মকর্তাদের হেয় করার মাধ্যমে সরকার বিরোধীদের সুরে কমিশনকে বিতর্কিত করেছেন। দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা) উক্ত পোস্টের প্রতিবাদে তীব্র নিন্দা ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করছে।

দুর্নীতি দমন কমিশন যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় প্রত্যয়ে কাজ করে যাচ্ছে তখন সরকার বিরোধীদের সুরে দুদককে জনগণের সামনে বিতর্কিত হিসেবে উপস্থাপন করায় তার বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ কর্তৃক যথাযথ প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেবে বলে দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা) প্রত্যাশা করে।
ডুসার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সামিউল মাসুদ শেয়ার বিজকে বলেন, ‘এগুলো সবাই জানে। আমিও তো জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে। এরকম বহু জন বহু কিছু লেখে। তাতে কিছু যায় আসে না। আমি এসব নিয়ে বিচলিত নই। আমার চেয়ে দুদকের বিষয়ে গণমাধ্যম বেশি জানে।’