নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকিং খাতের সার্বিক কর্মতৎপরতা আশাব্যঞ্জক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ই পরিবর্তন আসবে। শুধু আইনকানুনের ব্যাপারে সতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের মার্র্জর ও ঋণখেলাপি আইন খুব বেশি ভালো নয়। এসব বিষয়ে যথাযথ আইন থাকা প্রয়োজন। আগামী দুবছরের মধ্যে এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ১০ শাখা উদ্বোধন অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এ কথা বলেন। রাজধানীর ওয়েস্টিন হোটেলে ডিজিটাল পদ্ধতিতে শাখাগুলো উদ্বোধন করা হয়।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের ব্যাংকিং সেক্টর সম্পর্কে অনেকেই বলেন আমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত ব্যাংক রয়েছে। আমার মতে, এটা খুব মন্দ হয়নি। ব্যাংকিং সার্ভিসটা এর ফলে অনেক বেশি বিস্তৃত হয়েছে। এটা স্বীকার করতেই হবে যে, আমরা একটা বিরাট জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং সার্ভিসের আওতায় নিয়ে এসেছি। এটি অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য উল্লেখযোগ্য একটি বিষয়। তবে ব্যাংকিং খাত দেশের মার্জার ও ঋণখেলাপি আইন খুব বেশি ভালো নয়। আগামী দুবছরের মধ্যেই আশা করছি আমরা এ ব্যাপারে যথেষ্ট প্রস্তুত থাকবো ভবিষ্যতের জন্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অর্থের সার্কুলেশন বাড়ানো দরকার। ব্যাংকিং ব্যবস্থা সেটাই করছে। ব্যাংকিং সার্ভিসের ক্ষেত্রে আমরা গর্ববোধ করতে পারি যে, একটা বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে আমরা ব্যাংকিং সার্ভিসের আওতায় নিয়ে এসেছি।’
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির। এতে সভাপতিত্ব করেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের চেয়ারম্যান শহিদুল আহসান। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ব্যাংকের ১০টি শাখা একত্রে উদ্বোধন করার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়ে শহিদুল আহসান বলেন, ‘ইতিপূর্বে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের
একশটি শাখা ডিজিটাল পদ্ধতিতে উদ্বোধন করা হয়েছিল গত জুলাই মাসে। তবে বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকের ক্ষেত্রে এটিই প্রথম উদ্যোগ।’ তিনি আরও বলেন, ‘আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন সুদক্ষ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা, ব্যবসায়িক কার্যক্রমের যথাযথ পরিপালন সংস্কৃতি ও সুশাসন। গ্রাহকের বিশ্বাসের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে ব্যাংক। গ্রাহক যেন অনলাইনে যে কোনো শাখার মাধ্যমে লেনদেন করতে পারেন, সেজন্য সব ব্যাংককে অনলাইনের আওতায় আনতে হবে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার না করলে যে কোনো ব্যাংকই পিছিয়ে যাবে।’
অনুষ্ঠানের উদ্বোধন শেষে শাখা ব্যবস্থাপকদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অর্থমন্ত্রী কুশল বিনিময় করেন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে প্রতিষ্ঠিত এ ব্যাংকটির ১০টি নতুন শাখার মাধ্যমে মোট শাখা হলো ১১৯টি। নতুন ১০ শাখা হলো: আসাদ গেট, ঢাকা (১১০), লালমনিরহাট (১১১), নাটোর, শরীয়তপুর (১১৫), কানকিরহাট, নোয়াখালী (১১৬), মান্দারীবাজার, লক্ষ্মীপুর (১১৭), গড়াই, মির্জাপুর, টাঙ্গাইল (১১৮), গৌরীপুর, আশুলিয়া, ঢাকা শাখা (১১৯)।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মার্কেন্টাইল ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কাজী মসিহুর রহমান। অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যান একেএম সাহিদ রেজা, নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সেলিম, পরিচালক আলহাজ আকরাম হোসেন (হুমায়ুন), এম আমান উল্লাহ, মো. আবদুল হান্নান ও আলহাজ মোশাররফ হোসেন, উদ্যোক্তা এসএম শফিকুল ইসলাম (মামুন) ও মো. নাসিরউদ্দিন চৌধুরী এবং স্পন্সর শেয়ারহোল্ডার এসএম আবদুল মান্নান ও এমএ খান বেলাল, অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনীন্দ্র কুমার নাথ ও মো. কামরুল ইসলাম চৌধুরী, উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মাসুম, মতিউল হাসান ও জিডব্লিউএম মোর্তজা, বিভিন্ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, দেশের বিশিষ্ট ব্যবসায়ীসহ অনেকেই।