প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

দেশকে কী দিয়েছি বিচারের ভার আপনাদের: প্রধানমন্ত্রী

শেয়ার বিজ ডেস্ক: টানা ১৪ বছর সরকারে থেকে আওয়ামী লীগ দেশকে কী দিতে পেরেছে, সেই বিচারের ভার দেশের মানুষের ওপর ছেড়ে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে তিনি বলেন, ‘২০০৯ সাল থেকে একটানা ১৪ বছর বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। এই ১৪ বছরে আমরা দেশ এবং দেশের জনগণকে কী দিতে পেরেছি তার বিচার-বিশ্লেষণ আপনারা করবেন। খবর বিডিনিউজ।

প্রতিবারের মতোই সরকারের বর্ষপূর্তির প্রাক্কালে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় তার এই ভাষণ রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে সরাসরি প্রচার করা হয়।

ভাষণের শুরুতেই সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের চার বছরপূর্তি উপলক্ষে আমি দেশবাসী এবং দেশের বাইরে অবস্থানরত প্রবাসী ভাইবোনদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আপনাদের খ্রিষ্টীয় নতুন বছর ২০২৩-এর শুভেচ্ছা জানাই।’

বিচারের ভার জনগণের ওপর ছেড়ে দিয়ে শেখ হাসিনা গত ১৪ বছরে তার সরকারের বিভিন্ন কাজের বিস্তারিত খতিয়ান তুলে ধরেন তার ভাষণে।

তিনি বলেন, ‘স্বাধীন-স্বার্বভৌম বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠাসহ এ দেশের মহৎ এবং বৃহৎ অর্জনগুলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং আওয়ামী লীগ সরকারের হাত ধরেই অর্জিত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নানা প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্পন্ন করেছি। এই সেতু দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলাকে সড়ক পথে ঢাকা ও অন্যান্য জেলার সঙ্গে সরাসরি সংযুক্ত করেছে। গত ২৮-এ ডিসেম্বর মেট্রোরেল উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে আমরা যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরেকটি মাইলফলক স্পর্শ করেছি। কিছুদিনের মধ্যেই শুধু বাংলাদেশেই নয়, চট্টগ্রামে দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম পাতাল সড়কপথ- বঙ্গবন্ধু টানেল উদ্বোধনের মাধ্যমে আরেকটি মাইলফলক স্থাপিত হবে। পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুরে দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের কাজ দ্রুত এগিয়ে চলছে। আমরা ২০১৮ সালের মে মাসে মহাকাশে নিজস্ব স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উৎক্ষেপণ করেছি।

তিনি উল্লেখ করেন, ২০০৯ সালে আমরা যখন সরকার পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করি, তখনও বিশ্বব্যাপী মন্দাবস্থা চলছিল। চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম ছিল আকাশচুম্বী। অন্যদিকে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ছিল নিন্মমুখী।

 বিদ্যুতের অভাবে দিনের পর দিন লোডশেডিং চলত। গ্যাসের অভাবে শিল্পকারখানার মালিকেরা যেমন হাহাকার করত, তেমনি চুলা জ্বলত না মানুষের বাড়িতে। সারসহ কৃষি উপকরণের উচ্চমূল্য এবং জ্বালানি তেলের অভাবে কৃষকের নাভিশ্বাস উঠেছিল।

তিনি বলেন, এমনি এক অর্থনৈতিক দুরবস্থার মধ্যে আমরা সরকার পরিচালনার দায়িত্ব নিই। নির্বাচনী ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে আমরা রূপকল্প-২০২১ প্রণয়ন করি এবং জনগণের সামনে তুলে ধরি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের বিপুল ম্যান্ডেট নিয়ে সরকার গঠনের পর সেই ইশতেহারের আলোকে আমরা আশু করণীয়, স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা প্রণয়ন করে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নকে এগিয়ে নেয়ার উদ্যোগ গ্রহণ করি। পাশাপাশি স্থবির অর্থনীতিকে সচল করতে শুরুতেই কৃষি, জ্বালানি, বিদ্যুৎসহ কয়েকটি খাতকে অগ্রাধিকার দিয়ে আমরা কাজ শুরু করি। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে সরকারি-বেসরকারি পর্যায়ে বেশ কয়েকটি ছোট বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন করি। তিনি বলেন, খাদ্যশস্য উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য আমরা মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই রাসায়নিক সারের দাম কমিয়ে দেই। এরপর আরও দু-দফায় সারের দাম হ্রাস করে কৃষকের ক্রয়ক্ষমতার আওতায় আনা হয়। এমনিভাবে প্রতিটি খাতে আমরা পরিকল্পিত উন্নয়ন নিশ্চিত করার উদ্যোগ নিই।