প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের ‘সিন্ডিকেটেই ভূত’ দেখছেন মান্না

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকার ‘কিছুই করতে পারছে না’ বলে অভিযোগ করেছেন নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না। গতকাল শনিবার ঢাকার পল্টন মোড়ে গণতন্ত্র মঞ্চের এক সমাবেশে তিনি বলেন, ‘তাদের (সরকার) কোনো কিছু করবার ক্ষমতা নাই। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ করে যে সিন্ডিকেট, এই সিন্ডিকেটেই ভূত আছে। এই সরকার নিজেই একটা সিন্ডিকেট, ভোট ডাকাতির সিন্ডিকেট, লুটপাটের সিন্ডিকেট, জনগণের ওপর নির্যাতন করবার সিন্ডিকেট।’

তিনি আরও বলেন, ‘আর তাদের সিন্ডিকেটের শাখা হচ্ছে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে অথবা সুবিধা মতো জনগণের পকেট কেটে নিজেদের পকেট ভারী করবার জন্যে কতগুলো নিজেদের বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন তাদের মিলিয়ে সমগ্র জনগোষ্ঠীকে ধরে অত্যাচার-নির্যাতন চালিয়ে যাওয়া। এজন্য আমরা খুব স্পষ্ট কণ্ঠেই বলতে চাই, এর বিরুদ্ধে লড়াইটাই চূড়ান্ত।’

সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন, নিত্যপণ্যের ও বিদ্যুতের দাম কমানোসহ কয়েক দাবিতে পল্টনে গণতন্ত্র মঞ্চের সমাবেশে বক্তব্য দেন মান্না। পরে সেখান থেকে বিজয় নগর সড়ক পর্যন্ত মিছিল করেন নেতাকর্মীরা।

গণতন্ত্র মঞ্চের পক্ষ থেকে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সাধারণ সম্পাদক শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন রমজান মাসে গণসংযোগের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে রমজান মাসে আন্দোলনকে সংগঠিত করার জন্য গণসংযোগ কর্মসূচি, প্রচার-প্রচারণার কর্মসূচি, বৈঠক ও কর্মিসভা রাখব। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট প্রোগ্রাম গণতন্ত্র মঞ্চ থেকে আমরা গণমাধ্যমকে জানিয়ে দেব।’

রোজায় বড় কর্মসূচি না করার কথা জানিয়ে মান্না বলেন, ‘রোজার মধ্যে বিরাট করে আন্দোলনের কর্মসূচি হয়তো আমরা দেব না। কিন্তু আন্দোলনের এই বাতাসটাকে ধীরে ধীরে আরও বাতাস দিতে থাকব, চাঙ্গা করতে থাকব, যাতে রোজার পরে আমরা আমাদের পাওনা কড়ায়-গণ্ডায় আদায় করে নিতে পারি, সেই পরিকল্পনা আমরা করছি। আমরা সবার সমর্থন চাই। দেশে-বিদেশে যারা আছেন সবার সমর্থন চাই।’

সমাবেশে বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক ভারতের সঙ্গে পানিবণ্টন চুক্তির প্রসঙ্গ তুলে বলেন, ‘আমাদের তিস্তা থেকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকার দুইটা খাল কেটে তারা আবার সেখানে পানি প্রত্যাহার করবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রয়োজনীয় অর্থ ইতোমধ্যে বরাদ্দ করা হয়েছে। এতদিন পার হয়ে গেল যে, সরকার এতখানি নতজানু, এই পর্যন্ত ভারতের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একটা সাধারণ প্রতিবাদ করার সাহস পায়নি।’

তার ভাষ্য, ‘শুষ্ক মৌসুমে এমনি তিস্তায় পানি থাকে না। প্রধানমন্ত্রী দুইবার ভারত সফর করলেন, তিস্তার পানি আনতে পারেন নাই। উল্টো ফেনী নদীর পানি প্রত্যাহারে উনি চুক্তি স্বাক্ষর করে এসেছেন। এখন শুনেছি ধরলা নদী থেকে ভারত আবার নতুন করে পানি প্রত্যাহার করবে। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার না হলে আমরা আমাদের দেশ, আমাদের জনপদ, আমাদের পানি সম্পদসহ কোনো কিছুকে রক্ষা করতে পারব না।’

সমাবেশে বাংলাদেশ গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নূর, গণসংহতি আন্দোলনের নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল, ভাসানী অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ হাসিব উদ্দিন হোসেন, নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ কায়সারসহ আরও অনেকে বক্তব্য দেন।