নিজস্ব প্রতিবেদক: এমআরটি’র (ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট) সঙ্গে সমন্বয় করে ঢাকা নগর পরিবহনের নতুন দুই রুট (২৪ ও ২৫ নম্বর) চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ঢাদসিক) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। তিনি বলেন, ‘ঢাকার ঘাটারচর থেকে উত্তরার দিয়াবাড়ী পর্যন্ত দুটি রুটে নগর পরিবহনের আরও ৫০টি বাস নামবে আগামী পাঁচ মাসের মধ্যে।’
গতকাল মঙ্গলবার ঢাদসিকের প্রধান কার্যালয় নগর ভবনের বুড়িগঙ্গা হলে বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির ২৬তম সভা শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে মেয়র ও বাস রুট রেশনালাইজেশন কমিটির সভাপতি ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এ তথ্য জানান।
মেয়র তাপস বলেন, ‘নগর পরিবহনের ২১, ২৬ ও ২২ নম্বর রুটে প্রতিদিন প্রায় ৩০ হাজার যাত্রী যাতায়াত করছে। নগর পরিবহন চালুর পর এ পর্যন্ত আয় হয়েছে সাত কোটি টাকার বেশি। এরই মাঝেই এমআরটি চালু হয়েছে। তাই এমআরটির সঙ্গে সমন্বয় করে আমরা নতুন দুটি যাত্রাপথ চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সেই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন দুটি যাত্রাপথের (রুট) ব্যাপারে সভায় বিশদ আলোচনা ও পর্যালোচনা করেছি।’
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের ব্যারিস্টার শেখ তাপস বলেন, ‘নগর পরিবহন সেবায় যাত্রীদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। আমরা যাত্রীসেবা আরও মসৃণ করার চেষ্টা করছি। কিছু ব্যত্যয় আমরা লক্ষ করেছি। বিশেষ করে টিকিট না কেটে বাসে ওঠার একটা প্রবণতা লক্ষ করছি। সেটা কোনোভাবেই ঢাকা নগর পরিবহনে বরদাশত করা হবে না। সবাইকে টিকিট কাউন্টারের মাধ্যমে টিকিট কেটে বাসে উঠতে হবে। ২২ নম্বর যাত্রাপথ যারা পরিচালনা করছে, তাদের কঠোরভাবে নির্দেশনাÑতারা যেন গাড়িচালকের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে যাত্রীছাউনি অথবা বাস-বে থেকে টিকিট কিনেই যেন যাত্রীরা বাসে ওঠেন। সে অনুযায়ী নগর পরিবহন যাত্রীদেরকে সেবা দেবে। সেটা আজকের এই সভা থেকে কঠোরভাবে নির্দেশনা দিয়েছি।’
নগর পরিবহনে যাত্রী সেবার মান অক্ষুণœ রাখা ও শৃঙ্খলা নিশ্চিত করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে জানিয়ে তাপস বলেন, ‘আমরা এ বিষয়ে আলাপ করেছি। বিআরটিসি আমাদের নিশ্চিত করেছে, ঢাকা নগর পরিবহনের জন্য যে নির্দিষ্ট বাস, সেটা শুধু ঢাকা নগর পরিবহনের যাত্রাপথেই চলবে। এই বাসগুলো অন্য কোথাও ব্যবহার করা যাবে না। আর ট্রান্স সিলভাকে কারণ দর্শানোর জন্য নোটিশ দেবো। সেজন্য তাদের ১৫ দিন সময় দেব। তারা যদি নির্ধারিত নীতিমালা-নিয়ম অনুযায়ী এই সেবা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে বা ব্যর্থ হয়, তাহলে তাদের সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হবে। বিআরটিসি যদি রাজি হয়, তাহলে বিকল্প হিসেবে বিআরটিসি দিয়ে পরিচালিত হবে। অথবা নতুন উদ্যোক্তা নিয়ে এই সেবাটা পরিচালনা করা হবে।’
সভায় ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের নির্বাহী পরিচালক সাবিহা পারভীন, বিআরটিএ’র চেয়ারম্যান নুর মোহাম্মদ মজুমদার, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মিজানুর রহমান, ঢাকা মহানগর পুলিশের যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক, দক্ষিণ) এসএম মেহেদী হাসান, গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ ড. এসএম সালেহ উদ্দিন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি খন্দকার এনায়েত উল্লাহ, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ওসমান আলী, ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি আজমল উদ্দিন আহমেদসহ কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।