প্রতিনিধি, গাজীপুর: এবার মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা প্রথম পর্বে ১৩-১৫ জানুয়ারি এবং মাওলানা সা’দ পক্ষের অনুসারীরা ২০-২২ জানুয়ারি ইজতেমা পরিচালনা করবেন। প্রতি পর্বেই শেষ দিনে আখেরি মোনাজাত অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল দুপুরে গাজীপুরের টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমার সার্বিক নিরাপত্তা ও পরিদর্শনে এসে ব্রিফিং করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন। তিনি বলেন, বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত ও জুমার নামাজে মুসল্লিরা সুষ্ঠুভাবে অংশ নিতে পারেন; সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। আমরা সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করতে চাই, আপনারা নির্ভয়ে নিরাপদে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নিতে পারেন।
আইজিপি বলেন, বিশ্ব ইজতেমায় বিদেশি মুসল্লিরা যারা আসেন তাদের এয়ারপোর্টে আয়োজকরা রিসিভ করেন। তারা যাতে স্বাচ্ছন্দ্যে আসতে পারেন সে জন্য ইমিগ্রেশন থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়ে থাকে। যাতে তারা সুন্দরভাবে আসতে পারেন এবং ইমিগ্রেশনে যেন কোনো ধরনের জটিলতার সম্মুখীন হতে না হয়। আসার পথে তাদের ট্রাফিক ব্যবস্থা যাতে সুগম হয় সেজন্য আমরা ব্যবস্থা রেখেছি। তাদের সহায়তার জন্য বিশেষ প্রশিক্ষিত ট্যুরিস্ট পুলিশ নিয়োজিত থাকবে। সাধারণ মানুষের ইজতেমা মাঠে প্রবেশের সুবিধার্থে আমরা ম্যাপ তৈরি করে দিয়েছি। বিভিন্ন পয়েন্টেও আমরা তাদের জন্য বিভিন্ন ধরনের নির্দেশনা টানিয়ে দিয়েছি। এছাড়া কোনো বিভাগের গাড়ি কোথায় পার্কিং করা থাকবে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা, কোনো রাস্তা কখন খোলা বা কখন বন্ধ খাকবে সে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, পকেটমারসহ নানা অপরাধ কার্যকলাপ রুখতে আমাদের পেট্রোল টিম কাজ করবে। আমরা ওয়াচ টাওয়ার ও সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করব। সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ বিভাগ ১৪টি কন্ট্রোলরুম তৈরি করেছে।
র্যাবের কন্ট্রোলরুম থাকবে, ডিএমপি তার এলাকায় কন্ট্রোলরুম খুলবে, এসবি, এটিও, সিআইডি, নৌপুলিশ, অবজারভারভেশন টিম, র্যাবের হেলিকপ্টার টহল, ডগ স্কোয়াড টিম, মোবাইল পেট্রোল টিম ও বোম ডিস্পোজাল টিম থাকবে। ইতোমধ্যে আমরা যেভাবে সফল হয়েছি, এর ধারাবাহিকতায় এবারও আমরা এই আয়োজন সফল করব। এরই মধ্যে আমাদের ফোর্স আসা শুরু হয়েছে, আগামীকাল থেকে পুরোপুরিভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ শুরু করবে।
তিনি বলেন, ‘পুলিশ লাইফ ইট ইজ দ্য চ্যালেঞ্জিং লাইফ। কোন দিন কোন চ্যালেঞ্জ থাকবে তা অজানা থাকে। এরপরও প্রতিদিনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা আমরা করে থাকি। দীর্ঘদিন চাকরি করার পর আমাদের অভিজ্ঞতা সঞ্চয় হয়েছে। আমরা আগামীতে যেকোনো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হবো। দেশবাসীকে আশ্বস্ত করতে চাই নির্বাচনসহ যেকোনো আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মোকাবিলা আমরা সফলভাবেই করে আসছি। এর মাধ্যমে আমাদের যে অভিজ্ঞতা এসেছে এর আলোকেই কর্মপন্থা নির্ধারণ করে থাকি। নির্বাচনসহ বিভিন্ন ইভেন্ট সফলভাবে শেষ করেছি, আগামীতেও নির্বাচনে আমরা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করব।’
এ সময় উপস্থিত ছিলেনÑবাংলাদেশ পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক স্পেশাল ব্রাঞ্চের প্রধান মনিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত আইজিপি (ট্যুরিস্ট প্রধান) হাবিবুর রহমান, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোল্লা নজরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার দেলোয়ার হোসেন ও গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল আলম প্রমুখ।