প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

নেটওয়ার্ক আধুনিকায়নে এগিয়ে রবি

 

এয়ারটেলের সঙ্গে একীভূতকরণের পর ২০১৬ সালের নভেম্বরে নতুন রূপে পথচলা শুরু করেছে সেলফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান রবি। গ্রাহকসংখ্যা বিবেচনায় দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওই কোম্পানির বিষয়ে জানাচ্ছেন পলাশ শরিফ

১৯৯৭ সালে টেলিকম মালয়েশিয়া ও বাংলাদেশি এ কে খান গ্রুপের যৌথ মালিকানায় ‘একটেল’ প্রতিষ্ঠিত হয়। ২০১০ সালে মালিকানা বদলের পর ‘রবি’ নামে ব্যবসা শুরু করে কোম্পানিটি। একীভূতকরণের পর যৌথ মালিকানার ওই সেলফোন অপারেটর সেবাদাতা কোম্পানির মোট শেয়ারের মধ্যে ৬৮ দশমিক সাত শতাংশ শেয়ারের মালিক মালয়েশিয়ান আজিয়াটা গ্রুপ। এর বাইরে ভারতী এয়ারটেল ২৫ শতাংশ ও জাপানের এনটিটি ডোকোমো ছয় দশমিক তিন শতাংশ শেয়ারের মালিক।

প্রায় তিন কোটি ২২ লাখ গ্রাহক নিয়ে টেলিকম খাতের পাঁচ কোম্পানির মধ্যে গ্রাহকসংখ্যায় দ্বিতীয় রবি। দেশজুড়ে বিস্তৃত নেটওয়ার্ক, উন্নত গ্রাহকসেবা, নতুন পণ্য-সেবা উদ্ভাবনে সময়োপযোগী পরিকল্পনা, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ও সম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতিযোগিতায় এগিয়ে রবি। পাশাপাশি রবির আরেকটি সক্ষমতা হচ্ছে, তার হাতে রয়েছে সবচেয়ে বেশি বেতার তরঙ্গ। বর্তমানে টু ও থ্রিজি মিলিয়ে ৩৪ দশমিক ৮০ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গ নিয়ে ওই সক্ষমতার দিক থেকে শীর্ষে প্রতিষ্ঠান। টেলিকম খাতেও বিনিয়োগে এগিয়ে আছে রবি।

এগিয়ে চলা প্রসঙ্গে রবি কর্তৃপক্ষ শেয়ার বিজকে জানায়, ‘অত্যাধুনিক পণ্য-সেবা গ্রাহকের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিয়ে দেশের টেলিকম খাতের শীর্ষে। টেলিকম খাতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে গ্রাহককে সর্বোত্তম সেবা দেওয়া আমাদের মূল লক্ষ্য। এর মাধ্যমে আমরা এগিয়ে যেতে চাই। ভূমিকা রাখতে চাই দেশকে এগিয়ে নিতে। গ্রাহকের সন্তুষ্টিই আমাদের চলার পথের পাথেয়।’

সেলফোন অপারেটর হিসেবে কাজ করা এ কোম্পানি ভয়েস কল, ইন্টারনেট ডেটা সার্ভিস ও এসএমএস সার্ভিসের পাশাপাশি আরও ছয় ধরনের সেবা দিচ্ছে। বিডিঅ্যাপস, বিডিটিকিটস, রিচার্জ প্লাস, রবি ক্যাশ পয়েন্ট, রবি ট্র্যাকার ও মোবি-রিচ সেবাগুলো তথ্য-প্রযুক্তিনির্ভর। এর মাধ্যমে সেলফোন ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় অ্যাপস, যানবাহনের টিকিট ও লেনদেনসহ প্রয়োজনীয় সেবা নিচ্ছেন গ্রাহক। তাই বায়োমেট্রিকের কারণে অন্য কোম্পানিগুলোর আয় কমলেও রবির কমেনি। রবির আয়ে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে ভূমিকা রেখেছে ইন্টারনেট ডেটা। তৃতীয় প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১৬ সালের জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে ইন্টারনেট ডেটা থেকে রবির আয় আগের বছরের একই প্রান্তিকের তুলনায় ৩৪ দশমিক ১ শতাংশ বেড়েছে। ইন্টারনেট ডেটা থেকে আয়ের ওপর ভর করে ওই প্রান্তিকে কোম্পানিটির মোট আয় ১১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে।

রবি ৩.৫জি ও জিপিআরএস প্রযুক্তির সঙ্গে তৃণমূল পর্যায়ের গ্রাহকদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছে। একই সঙ্গে প্রথম সেলফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিমা চালু করেছে। ইন্টারনেট সেবার পরিধি বাড়াতে নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণে প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য হারে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে কোম্পানিটি। ইন্টারনেট নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন ও সম্প্রসারণে চলতি বছরের সর্বশেষ প্রান্তিকে রবি ২৯০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।

বিটিআরসির তথ্য অনুযায়ি, নতুন রবির প্রায় ১৪ হাজারের বেশি অন-এয়ার সাইট রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় আট হাজার ৩.৫জি প্রযুক্তির। এর মাধ্যমে দেশের প্রায় ৯৯ শতাংশ মানুষ এখন রবি নেটওয়ার্কের অন্তর্ভুক্ত।

ডিজিটাল সেবা চালুর দিক থেকে অনেক ক্ষেত্রে পথিকৃতের ভূমিকায় রয়েছে এ প্রতিষ্ঠান। গ্রামীণ ও উপশহর অঞ্চলগুলোর সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জন্য মোবাইল আর্থিক সেবা চালু করতে ব্যাপক বিনিয়োগও করেছে। সামাজিক দায়বোধসম্পন্ন কোম্পানি হিসেবে দেশের টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে তথ্যপ্রযুক্তি-শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ খাতে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে রবি।