প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

নোয়াখালীতে সড়ক নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ, এলাকাবাসীর বিক্ষোভ

শাকিল আহমেদ, নোয়াখালী : নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) আওতায় পুরোনো সড়ক সংস্কারকাজে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে সিডিউল বহির্ভূত ভাবে কাজ করায় ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে।

শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের পুরাতন ছয়ানীতে এলাকার মানুষ বিক্ষোভ মিছিল করে।

স্থানীয়রা বলছেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঠিক নজরদারি না থাকায় এমন অনিয়ম করে যাচ্ছে ঠিকাদার। অনিয়মের অভিযোগ করায় উল্টো চাঁদাবাজি মামলার হুমকি পেয়েছেন এলাকাবাসী।

সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কে নিম্নমানের ইটের খোয়া ব্যবহার করা হচ্ছে। নিম্নমানের ম্যাকাডম ঢাকতে পানি ঢালছে শ্রমিকরা। স্থানীয় বাসিন্দারা শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১ টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের পুরাতন ছয়ানীতে এলাকায় বিক্ষোভ করে। এসময় তারা ঠিকাদারের বিরুদ্ধে নানান শ্লোগান দেয়।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তরের অধীনে ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রায় ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে গ্রামীণ সড়ক মেরামত ও সংরক্ষণ প্রকল্পের আওতায় উপজেলার পুরাতন ছয়ানী থেকে রামেশ্বপুর পর্যন্ত প্রায় ১৬০০ মিটার নির্মাণ কাজের দায়িত্ব পান নোমান কনস্ট্রাকশন।

আবু তাহের নামে এক বাসিন্দা বলেন, ৯৭ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সড়কটি হয়েছে। প্রায় ২৬ বছর পর এখন মেরামত করা হচ্ছে। কাজ শুরু হওয়ায় আমরা খুশী হয়েছি। কিন্তু আগের থেকে রাস্তা ছোট হয়ে গেছে এবং মান খুব খারাপ। খালি গাড়ি চলাচল করতে গিয়ে ম্যাকাডম মিশে যাচ্ছে।

স্থানীয় দোকানদার জহিরুল ইসলাম বলেন, গত ১৫ দিন ধরে রাস্তার কাজ চলছে। শুরু থেকেই ব্যাপক অনিয়ম করে কাজ করছেন ঠিকাদার। আমরা চেয়ারম্যানকে বিষয়টি জানিয়েছি, সাপ্লায়ারকে জানিয়েছি। সাপ্লায়ার আমাকে চাঁদাবাজ বলেছেন। আমি একজন আওয়ামী লীগের কর্মী। আমরা চাঁদাবাজ নই বরং কাজের মান ভালোর জন্য অনুরোধ করেছি।

স্থানীয় বাসিন্দা আবুল কালাম বলেন, যে কনা ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলো রিকশার চাপে মিশে যাচ্ছে। আমরা প্রতিবাদ করায় উল্টো আমাদের নানান কথা বলছে ঠিকাদার। ২৬ বছর পর আমাদের এই সড়কের কাজ হচ্ছে। আমরা চাই মালামালের মান যেনো ভালো থাকে।

অনিয়মের বিষয়ে ঠিকাদার আমেনা বলেন, কোনো অনিয়ম হচ্ছেনা যা শিডিউলে আছে সেভাবে হচ্ছে। এলাকার মানুষ চাচ্ছে যেনো তাদের কাছ থেকে মালামাল কিনি। তাদের কাছ থেকে মালামাল না কিনায় আমার বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ উঠাচ্ছে। আপনার সাথে আমি দেখা করবো।

ছয়ানী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ওহিদুজ্জামান বলেন, নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহার করায় এলাকার মানুষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে। তারা মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে। ঠিকাদারকে বুঝাইতে চাচ্ছে আপনি ভাল মানের মালামাল দিয়ে কাজ করেন। অথচ ঠিকাদার চাঁদাবাজির অপবাদ দিয়ে নিম্ন মানের মালামাল ব্যবহার করছে। কেউ যদি ১০ টাকা চাঁদা চায় এর প্রমাণ যদি ঠিকাদার দেখাতে পারে তাহলে আমি আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণ আমাকে অনিয়মের কথা বলছে। তবে আমরা চাচ্ছি কাজ টা যেনো ভালো হয়।

উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো. হাফিজুল হক বলেন, অনিয়মের বিষয়ে আমরা অবহিত আছি। ঠিকদারকে কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ইট সড়কের পাশে এনে ভাঙতে বলেছি। আজ আমি সরেজমিনে যাচ্ছি। ঠিকাদার যদি সংশোধন না করে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।