প্রিন্ট করুন প্রিন্ট করুন

পাটখড়ির ছাই রফতানি: বৈদেশিক মুদ্রা আনছে ছয় কারখানা

 

মহসিন হোসেন, খুলনা: খুলনার রূপসা সেতু পার হয়ে তিন কিলোমিটার গেলে ইলাইপুর মোড়। সেখান থেকে সরু রাস্তা দিয়ে আরও দুই কিলোমিটার দূরে পাটখড়ি পুড়িয়ে কার্বন তৈরির কারখানা। যার নাম মিমকো কার্বন কোম্পানি। পাটখড়ি পুড়িয়ে ছাই দিয়ে তৈরি হচ্ছে। এই ছাই   বিদেশে আতশবাজি, ফেসওয়াশ, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারের কালি, এয়ারকুলার ও পানির ফিলটার, বিষ ধ্বংসকারী ওষুধ, জীবন রক্ষাকারী ওষুধ, দাঁত পরিষ্কারের ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্য তৈরিতে ব্যবহƒত হয়। রপ্তানি আয়ে অবদান রাখছে ওই কারখানা। সেখানে কর্মসংস্থানও হয়েছে প্রায় চার শতাধিক শ্রমিকের।

শুধু ওই একটি নয়, দেশজুড়ে রয়েছে মোট ছয়টি কারখানা। পাটখড়ির ওই ছাই চীন, তাইওয়ান, জাপান, ব্রাজিল, তুরস্ক, জার্মানি ও ইউরোপে রফতানি হচ্ছে। দেশে উৎপাদিত পাটখড়ির অর্ধেক রফতানি করা হলে বছরে আয় হবে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা- হবে বলেও তথ্য মিলেছে।

জানা গেছে, সোনালি আঁশের দেশে সম্ভাবনাময় নতুন এ রফতানি পণ্যটির বিকাশে পাট ও বস্ত্র মন্ত্রণালয় একটি নীতিমালা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে। গত বছরের ২৭ জানুয়ারি পর্যন্ত জেলা প্রশাসকদের পাঠানো তথ্যমতে, দেশে এ বিষয়ক কারখানা পাওয়া গেছে ছয়টি। এগুলো হচ্ছেÑফরিদপুরে মধুখালীর জিং সিং ট্রেডিং, বোয়ালমারীর গোল্ডেন কার্বন ফ্যাক্টরি, জামালপুরে দি গোল্ডেন ফাইবার, জামালপুর চারকোল, খুলনার মিমকো কার্বন ও ঝিনাইদহে তাজ এগ্রো কার্বন ফ্যাক্টরি।

পাট অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, দেশে বছরে প্রায় ৩০ লাখ টন পাটখড়ি উৎপাদন হয়। এর মধ্যে ৫০ শতাংশের সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করা গেলে পাটখড়ির ছাইয়ের বার্ষিক উৎপাদন দাঁড়াবে প্রায় দুই লাখ ৫০ হাজার টন। যা বিদেশে রফতানি করে এ খাতে বছরে প্রায় আড়াই হাজার কোটি টাকা আয় করা সম্ভব। একই সঙ্গে নতুন এ শিল্পের মাধ্যমে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে বিশাল জনগোষ্ঠীর। স্থানীয়রা জানান, এলাকার কৃষকরা পাটে লস খেয়ে এখন পাটখড়ি বিক্রি করে পুঁজি তুলছেন। ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকরা জ্বালানি হিসেবে পাঠখড়ি ব্যবহার না করে এখন কারখানায় বিক্রি করছেন।