শেয়ার বিজ ডেস্ক : বিশ্বের প্রায় ৩৬০ কোটি মানুষ পানি সংকটে রয়েছে। এই বিপুলসংখ্যক মানুষ প্রতিবছর অন্তত এক মাস অপর্যাপ্ত পানির সমস্যার ভোগে। বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও) গত মঙ্গলবার প্রকাশিত তাদের ‘স্টেট অব গ্লোবাল ওয়াটার রিসোর্সেস, ২০২১’ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
২০৫০ সালের মধ্যে এ সংখ্যা ৫০০ কোটির বেশি হবে বলে ধারণা জাতিসংঘের সংস্থাটির। প্রতিবেদনে পৃথিবীর পানিসম্পদের ওপর জলবায়ু, পরিবেশ ও সামাজিক পরিবর্তনের প্রভাব মূল্যায়ন করা হয়েছে। ক্রমবর্ধমান চাহিদা ও সীমিত সরবরাহের যুগে বিশ্বব্যাপী স্বাদু পানির উৎস নিরীক্ষণ ও ব্যবস্থাপনাকে সমর্থন করা এর লক্ষ্য।
গবেষণায় দেখা গেছে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং লা নিনার (গ্রীষ্মমণ্ডলীয় প্রশান্ত মহাসাগরে সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার শীতলতা) কারণে ২০২১ সালে পৃথিবীর বড় অঞ্চলগুলো স্বাভাবিক অবস্থার চেয়ে বেশি শুষ্ক পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করে।
ইন্টারএজেন্সি মেকানিজম ইউনাইটেড নেশনস ওয়াটার প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০০১ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে যেসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটেছে, তার ৭৪ শতাংশ পানি-সম্পর্কিত। সম্প্রতি মিসরের শার্ম আল শেখে শেষ হওয়া জলবায়ু সম্মেলনে (কপ-২৭) সরকারগুলোকে অভিযোজন প্রচেষ্টায় পানিকে আরও একীভূত করার আহ্বান জানায় বিশ্বনেতারা। এবারই প্রথম পানিকে গুরুত্ব দিয়ে কপ ফলের নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
ডব্লিউএমও মহাসচিব পেটেরি তালাস বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব প্রায়ই পানির মাধ্যমে অনুভূত হয়। এ প্রভাবগুলোর মধ্যে রয়েছে আরও তীব্র ও ঘনঘন খরা, চরম বন্যা, অনিয়মিত মৌসুমি বৃষ্টিপাত এবং হিমবাহের দ্রুত গলে যাওয়া। মিঠাপানির সম্পদের বণ্টন, পরিমাণ ও গুণমান পরিবর্তনের বিষয়ে এখনও অপর্যাপ্ত ধারণা রয়েছে। ডব্লিউএমও প্রতিবেদনের মূল লক্ষ্য, এই জ্ঞানের শূন্যতা পূরণ করা, যা বন্যা ও খরার মতো বিপদের আগাম সতর্কবার্তার জন্য আগামী পাঁচ বছরে সর্বজনীন প্রবেশাধিকারে সহায়ক হবে।
জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট সাবা কোরোসি এ প্রতিবেদনকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, পৃথিবীর পানিসম্পদের যথাযথ ব্যবহারের মাধ্যমে জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশগতে ঝুঁকি এড়ানো সম্ভব। আমাদের জানতে হবে, কোথায় কী পরিমাণে পানি রয়েছে এবং পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে পানি নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।